রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
করোনা মহামারী ও ঘুর্ণিঝড় অশনি মানব জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। ব্যাবসা-বাণিজ্য ও কৃষিতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। নিঃশ্ব হয়ে পথে বসেছে পোল্ট্রি, মৎস্য ঘের, গরুর খামারিসহ বিভিন্ন ব্যাবসায়ীরা।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় লোকসানের মুখে পরে পোল্ট্রি ব্যাবসায়ীরা নিঃস্ব হয়ে এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। উপজেলার বুরুয়াবাড়ি গ্রামের শরিফুল মোল্লা অনেক স্বপ্ন নিয়ে লাভের আসায় প্রথমে ৮ লাখ টাকার পুজি নিয়ে পোল্ট্রি বাণিজ্য শুরু করেন। এরই মধ্যে দু’হাজার মুরগী মারা য়াওয়ায় ৪ লাখ টাকা এবং ঘুর্ণিঝড় অশনির আঘাতে দু’টি ফার্ম ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আরো ৩ লাখ টাকা লোকসান দেখা দিলে সেই লোকসান কাটিয়ে উঠতে মৎস্য ঘের লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। মাছ চাষেও চার লাখ টাকা লোকসান দেখা দিলে ঘুরে দাড়ানোর আসায় পুনরায় আবার পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে গরুর খামার নির্মাণ করে ৯ লাখ টাকার গরু ক্রয় করে বাণিজ্য শুরু করলে তাতে ৪ লাখ টাকা লোকসান এবং ঘুর্ণিঝড় অশনির আঘাতে খামারটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আরো পাচঁলক্ষ টাকার লোকসান হয়। কোন ব্যবসাতেই সফলতা আসেনি তার শুধু লোকসান ছাড়া লাভের মুখ দেখতে পারেনি শরিফুল। সব হারিয়ে শরিফুল এখন নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। শরিফুল মোল্লা উপজেলার রাধাগঞ্জ ইউনিয়নের বুরুয়াবাড়ী গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে।
শরিফুল মোল্লা বলেন, লাভের আসায় অনেক স্বপ্ন নিয়ে ২০১৩ সালে ৮ লাখ টাকা খরচ করে প্রথমে চারটি ফার্ম ও পরে পাঁচটি পোল্ট্রি ফার্ম নির্মাণ করে আটাশীবাড়ি গ্রামে ব্যাবসা শুরু করি এরপর সমানে সমানেই চলছিলো ব্যাবসা কিন্তু ২০১৯-২০২০ সাল থেকে মহামারি করোনা শুরু হলে দু’হাজার মুরগী মরে গিয়ে চার লাখ টাকা লোকসান হয়, এরপর থেকে ব্যাবসায় লোকসান কাটিয়ে আর লাভের মুখ দেখতে পারি নাই। এই লোকসানের মুখে আবার ঘুর্ণিঝড় অশনির কবলে পরে ২টি ফার্ম লন্ডভন্ড হয়ে যায়। পোল্ট্রি ফার্ম, গরুর খামার, মৎস্য চাষ সব মিলিয়ে ৫০ লাখ টাকা লোকসানে আছি। এসব টাকা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও মানুষের কাছ থেকে লোন করা। ৫০ লাখ টাকা লোকশান করে স্বর্বস্ব হারিয়ে আমি এখন নিঃস্ব হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
এছাড়াও আটাশীবাড়ি গ্রামের ইকবাল কাজী তিন বছর ধরে দু’টি পোল্ট্রি ফার্ম ও মৎস্য ঘের নিয়ে ব্যাবসা করে ১৫ লক্ষ টাকা লোকাসানে পরে এবং রহমান কাজী দুইটি ফার্মে ১০ লক্ষ টাকা লোকসান করে তারা এখন ব্যাবসা বন্ধ করে দিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ইকবাল কাজী বলেন, লাভের আসায় তিনবছর ধরে পোল্ট্রি ফার্ম ও মৎস্য চাষ করতে গিয়ে করোনার মধ্যে মুরগী মরে গিয়ে ১৫ লক্ষ টাকা লোকসান হওয়ায় আমি এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি। এমন আরো একজন রহমান কাজী বলেন, ধার দেনা করে পোল্ট্রি ব্যাবসা করতে গিয়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে মুরগী মারা গিয়ে ১০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। ব্যাবসায়ীরা আরো বলেন, ডিলারদের সাথে বাকিতে ব্যাবসা করতে গিয়ে আরো বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। ব্যাবসায় যে ক্ষতি হয়েছে তাতে পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করার মত কোন সঙ্গতিই আমাদের নেই। এমন আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পলাশ কুমার দাস বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত এ উপজেলার ২ হাজার ৩শ’ পোল্ট্রি ও গরুর খামারিদের মাঝে প্রণোদনা দিয়েছে সরকার কিন্তু প্রণোদনায় খামারিদের লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি পুরণ করা সম্ভব হয় না, আমরা খামারিদের পরামর্শ দিতে পারি, এছাড়া তাদের জন্য আমাদের আর কিছু করার নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।