Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কবিরাজের নির্দেশেই যশোরের নকিমকে হত্যা

যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২২, ১২:০৫ এএম

হারানো যৌবন ফিরে পেতে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ নিয়ে যশোরের বাঘারপাড়ায় কৃষি শ্রমিক নকিম উদ্দীনকে হত্যা করে লিটন মালিতা। কবিরাজ বারিকের নির্দেশ অনুযায়ী হত্যার পর পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ নিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ওই দুজনকে আটক করা হয়েছে। দুই দিন অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেছে ডিবি পুলিশ।

যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রুপন কুমার সরকার, ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম ও এস আই মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি চৌকস দল গত মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা থেকে আব্দুল বারেক ও গত বুধবার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী এলাকা থেকে লিটন মালিতাকে আটক করে। এ সময় গ্রেফতারকৃত লিটন মালিতার কাছ থেকে কেটে নেয়া পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ উদ্ধার করা হয়েছে।
যশোরের বাঘারপাড়ায় উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামে গত ২৬ মে ধান কাটার জন্য কৃষাণ হিসেবে নকিম উদ্দীনসহ তিনজনকে বাড়িতে নিয়ে যান পাইকপাড়া গ্রামের মৃত ইবাদ মোল্যার ছেলে বেনজির আহম্মেদ। এর মধ্যে গত রবিবার বিকালে পারিশ্রমিকের টাকা বুঝে নিয়ে একজন চলে যায়। লিটন মালিতা ও নকিম উদ্দীন রাতে খাবার খেয়ে এক কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। বাড়ির মালিক বেনজির আহম্মেদ পরদিন সকাল ৬টায় কৃষাণদের ডাক দিলে বাইরে থেকে দরজা খোলা দেখতে পান। দরজা খোলা দেখে তিনি ভেতরে যেয়ে দেখেন জখম অবস্থায় নকিম উদ্দীনের লাশ খাটের উপর পড়ে আছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আটক কবিরাজ আব্দুল বারেক চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি পেশায় কবিরাজ। আটক অপর ব্যক্তি লিটন মালিতা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার মোহাম্মদ জুমা গ্রামের মো. হানিফ মালিতার ছেলে। আটক লিটন মালিতা দীর্ঘদিন ধরে যৌনরোগে ভুগছিলেন। পরে স্থানীয় কবিরাজ আব্দুল বারেকের শরণাপন্ন হন লিটন। কবিরাজ লিটনকে যে কোন একটি পুরুষাঙ্গ, অন্ডকোষ ও একটি চোখ উপড়ে নিয়ে আসলে সে হারান যৌবন ফিরে পাবে বলে জানান। সেই থেকে লিটন বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সুযোগ খুঁজতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ধান কাটার শ্রমিক সেজে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে কাজ নেন। সুযোগ বুঝে কবিরাজের দেয়া মহৌষধের উপকরণ যোগাড় করতে নকিম উদ্দীন নামের এই শ্রমিককে খুন করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে চলে যান মানিকগঞ্জ।
বিষয়টি নিয়ে বাঘারপাড়া থানায় গত মঙ্গলবার একটি মামলা হয়। আলোচিত এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার এর নির্দেশে মাঠে নামে যশোর ডিবি পুলিশ। লিটন মালিতা গত মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে ধান কাটার শ্রমিক সেজে আসেন।
সেই শ্রমিকের হাট থেকে ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী গ্রামের জনৈক কৃষক জিতু তাকে ধান কাটার কাজে বাড়িতে নিয়ে আসেন। অবস্থান শনাক্ত করে গত বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চড় বাইলজুরী এলাকা থেকে ডিবি পুলিশের একজন সদস্য ধান কাটার শ্রমিক সেজে ধান কাটার কাজরত অবস্থায় তার অবস্থান শনাক্ত করেন। পরে ঘিওর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করে যশোর ডিবি পুলিশ। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদেরকে আটক করে যশোর ডিবি পুলিশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ