বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ভোজ্যতেল চাল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পর এবার মৌসুমী ফল লিচুতে আগুন লেগেছে। দিনাজপুরের বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচু টাকা দিয়েও পাওয়া দুস্কর হয়ে পড়েছে। বুধবার দিনাজপুরে প্রতি শ’ বেদেনা লিচু ১১ থেকে ১২’শ আর চায়না থ্রি লিচু ১৯ থেকে ২ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তার পরেও ভাল মানের বেদেনা বা চায়না থ্রি লিচু বাজারে আসছে না। সরাসরি বাগান থেকেই কিনে নিচ্ছে। পক্ষান্তরে মাদ্রাজি ও বোম্বে লিচু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩’শ টাকা শ হিসাবে। অথচ গত সপ্তাহে লিচু বাজারে উঠার সময় বেদেনা ৮’শ আর চায়না থ্রি ১৪ থেকে ১৫’শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাবে তা কৃষক ও ফড়েয়ারাও ভাবতে পারেনি। পরিস্থিতি এখন এমনই দাড়িয়েছে ফড়েয়ারা এখন বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচু’র খোজে চিরুনী অভিযান চালাচ্ছে। এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে লিচুর সন্ধান পেলেই গাছের লিচু কিনে নিয়ে রাখছে। পরে তা ভিআইপি ক্রেতাদের কাছে আকাশচুম্বি দামে বিক্রি করছে। উপর মহলের অনুরোধ, আদেশ-নির্দেশ পালন করতে যেয়ে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হণ্যে হয়ে বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচুর পিছনে ছুটছে। ২/৩ দিনের ব্যবধানে লিচুর প্রতি শ-তে ৬ থেকে ৭’শ টাকা বেড়ে গেছে।
লিচুর জন্য বিখ্যাত দিনাজপুরে সরকারীভাবে লিচু কেনা বেচা শুরু হয়েছে গত ২৩ মে। ঐদিন স্থানীয় গোর এ শহীদ ময়দানে লিচুর বাজারের উদ্বোধন করা হয়। শুরুতে মাদ্রাজী লিচু বিক্রি হয় ২’শ টাকা শ হিসাবে। এর কয়েকদিন পর অর্থাৎ গত ২৬/২৭ তারিখ থেকে পরিপক্ক বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচু বাজারজাত হয়। কিন্তু আশ্বর্যজনক বিষয় মাত্র ২/৩ দিনের মধ্যেই বেদেনো ও চায়না থ্রি লিচু’র জন্য হাহাকার পড়ে যায়। বাজারে এই দুই জাতের লিচু আসা মাত্রই মানুষ ছো মেরে নিতে থাকে। পরিস্থিতি আঁচ করে ফড়েয়ারা বাজার ছেড়ে বাগানের দিকে ছুটতে থাকতে। কৃষকের কাছে চুক্তিভিক্তিক নেয়া বাগান এক দুই হাত ঘুরে চলে আসতে শুরু করেছে। যে যেভাবে পারছে বেদেনা ও চায়না থি লিচু গাছেই কিনে নিচ্ছে। ফলে বাজার থেকে ভাল মানের বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচু হারিয়ে গেছে। বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচুর হাহাকার অবস্থা নিয়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করলে তারা জানায় লিচুর ফলন ভাল হয়েছে। তবে বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচুর ফলন অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। তাদের মতে এবার দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় ৫ হাজার ৪৮১ হেক্টর জমিতে লিচুতে লিচু উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। জেলায় এবার ৩০ হাজার মেট্রিক টন এর বেশী লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অজ্ঞাত কারনে বেদেনা ও চায়না লিচুর ফলন কম হওয়ায় উৎপাদন লক্ষমাত্রা পূরন না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কি কারনে এবার বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচুর ফলন বিপর্যয় হয়েছে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিছু জানাতে পারেনি। তবে কৃষকদের মতে বেদেনা ও চায়না থ্রি’র এবার অফ-ইয়ার। অফ ইয়ার বলতে গত দু-তিন বছর যে গাছে ভাল ফলন হয় সে সব গাছে এবার মুকুলই আসেনি। অর্থাৎ সেসব গাছে ফলন হয়নি। আর মাঝে তীব্র খরার কারনে মুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচু’র ফলন এবার গতবারের তুলনায় অর্ধেকের কম হওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত হয়ে গেছ।
এদিকে বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচুর হাহাকার অবস্থায় উপর মহলের অনুরোধ ও আদেশ রক্ষায় স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা মরিয়া হয়ে গেছে। দাম পরের কথা আগে লিচু দেন। এই অবস্থায় ফড়েয়ারা যে যেভাবে পারছে দাম নিচ্ছে। পরিস্থিতি এমনই দাড়িয়েছে দামাদামি করার মাঝেই মানুষ ছো মেরে নিয়ে নিচ্ছে বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচু। এদিকে ফলন বিপর্যয় এবং মাত্রাতিক্ত চাহিদার পাশাপাশি প্রচন্ড গরমের কারনে আগামী ৫/৬ দিনের মধ্যে দিনাজপুর বেদেনা ও চায়না থ্রি লিচু শুন্য হয়ে পড়বে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।