Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাগরবক্ষে বিলীন হচ্ছে ঝাউবাগান পরিবেশ নষ্ট করছে অবৈধ স্থাপনা

সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার সমূুদ্র সৈকত

শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার অফিস | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০১৬, ৯:৪০ পিএম

বিশে^র দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। এইটি কক্সবাজারের শুধু নয় গোটা বাংলাদেশের গর্ব। বিস্তীর্ণ সৈকতের আকর্ষণেই প্রতিবছর দেশী-বিদেশী লাখো পর্যটক ছুটে আসেন এখানে। কিন্তু কালক্রমে সৌন্দর্য হারাচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় ও ভাঙন রোধে সৃজিত ঝাউবাগান। সৈকতের সৌন্দর্য ও ঝাউবাগান রক্ষার কোন উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও হোটেল-মোটেলসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে সৈকতে। এসব স্থাপনার কোন বৈধতা না থাকলেও এ বিষয়ে রহস্যজনকভাবে নীরবতা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন। মাস দু’এক আগে ডিভাইন গ্রুপের একটি স্থাপনা ভেঙে দেয়া হলেও অসংখ্য স্থাপনা হাই কোটর্রে নিষেধাজ্ঞা এলাকায় এখনো বিদ্যমান। এমনকি সায়মন রির্সোট, সীক্রাউন নামের তারাকা হোটেলগুলোসহ অনেক হোটেল গড়ে তোলা হয়েছে সাগরপাড়ে। অথচ দেশের সর্বোচ্চ আদালত কক্সবাজার সৈকতকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে সেখানে যে কোন ধরনের স্থাপনা নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু সরকারের প্রভাবশালীদের কাছে উচ্চ আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা যেন কিছুই নয়। পরিবেশবিদ ও অভিজ্ঞ মহলের মতে কক্সবাজারের বালুকাময় সৈকতে কোন ধরনের স্থাপনা প্রাকৃতিকভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সেখানে কোন একজায়গায় কোন ধরনের স্থাপনা করা হলে অন্য জায়গায় দেখাদেয় মারাত্মক ভাঙন। এখনো দেখা গেছে, কলাতলীর দিকে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলার কারণে শৈবাল পয়েন্ট, ইসলামিয়া মাদ্রাসা পয়েন্ট ও ডায়াবেটিক পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পরিবেশবিদদের মতে এটা যেন প্রকৃতির প্রতিশোধ। দেখা গেছে, সৈকতের ইসলামিয়া মাদ্রাসা পয়েন্ট থেকে ডায়াবেটিক পয়েন্ট হয়ে নাজিরারটেক পর্যন্ত বিস্তীর্ণ সৈকতে ভাঙন। সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে ওই এলাকার চোখ জুড়ানো বিস্তীর্ণ ঝাউবাগান বিলীন হয়ে যাচ্ছে সাগরে। এতে শত শত ঝাউগাছ উপড়ে গিয়ে সৌন্দর্য নষ্ট করেছে সৈকতের। উপড়ে যাওয়া ঝাউ গাছের কিছু কিছু সাগরে ভেসে গেলেও অধিকাংশ ঝাউগাছ বনদস্যুরা কেটে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। নিউ সীবিচ রোডের ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা পয়েন্টে গতকাল কয়েকজন পর্যটকের সাথে কথা হলে তারা জানান, এভাবে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হলে পর্যটকরা কক্সবাজার বিমুখ হয়ে যেতে পারে। তাদের মতে জরুরি ভিত্তিতে এই ভাঙন রোধ করা দরকার। উপকূলীয় বনবিভাগের সাথে যোগাযোগের জন্য বার বার অফিসে গিয়েও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি কাউকে। তবে সরকার সম্প্রতি গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সৈকতের দু’কি.মি এলাকায় একটি আধুনিক ‘বীচ ওয়াক ওয়ে’ নির্মাণের ঘোষণা দিলেও এর বাস্তবায়ন এখনো শুরু হয়নি। এ বিষয়ে কক্সাবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) চেয়ারম্যান কর্ণেল অবঃ ফুরকান আহমদ মনে করেন, কক্সবাজারের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার সরকারি জমি বিভিন্নভাবে বেদখল হয়ে আছে। কক্সবাজারকে একটি আধুনিক পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তবে রাতারাতি কিছু সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সাবাজার উন্নয়নে খুবই আন্তরিক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ