Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদ্যালয় মাঠে ঠিকাদারের খোয়া ও বালু

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০১৬, ৯:৩৬ পিএম

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার ঠিকাদারি কাজের খোয়া ও বালু স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এতে করে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম পাটুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭০ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়টি বতর্মানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৮৯ জন। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বিদ্যালয়ে পাসের হার শতভাগ। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সমাপনী পরীক্ষায় ৫০ জন অংশ নিয়ে ছয়জন জিপিএ পাঁচ অর্জন করে। বিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমাণ ৬৫ শতাংশ। প্রায় ছয়মাস আগে রাস্তার কাজের জন্য ঠিকাদার খোয়া ও বালু রাখে। এসময় ঠিকাদার পাঁচ-সাত দিন পরে মালামাল সরিয়ে নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিষেধ করে নাই। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও মালামাল সরিয়ে নেয়া হচ্ছে না। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করতে সমস্যা হয়। প্রায়ই শিক্ষার্থীরা সেখানে খেলতে গিয়ে আঘাত পায়। এছাড়া সারামাঠে খোয়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় খালি পায়ে শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে সমস্যা হয়। বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী উৎস রায় জানায়, প্রায় পড়ে গিয়ে অনেকে আহত হয়। পা কেটে রক্ত বের হয়। খালি পায়ে হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়। বিদ্যালয় মাঠ থেকে এসব মালামাল সরিয়ে নিলে ভালো হয়। শিক্ষার্থী জাহিদ শেখ, রাতুল শেখ, প্রণয় সরকারসহ বিদ্যালয় মাঠে মালামাল রাখায় ফুটবল খেলা যায় না। খোয়ার আঘাতে অনেকের পা কেটে গেছে। বাতাসের সময় বালু উড়া শুরু হয়। মাঠটি পরিষ্কার করা হলে সবার জন্য খুব ভালো হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, পাকা রাস্তার পাশে পাকা প্রাচীর দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ। মাঠের অনেকখানি জুড়ে খোঁয়া ও বালু রাখা। এতে খোঁয়ার একটি ও বালুর দুটি স্তূপ। বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের সামনে সমাবেশে (এসেম্বলি) খালি গলায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করছে শিক্ষার্থীরা। কয়েকজন শিক্ষার্থী শ্রেণীকক্ষের সামনের বারান্দা ঝাড়– দিয়ে পরিষ্কার করছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিপালী রানী সরকার জানান, বালু ও খোঁয়া রাখার সময় বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। ঠিকাদার বলেছিল সপ্তাহখানেকের মধ্যে এসব মালামাল সরিয়ে নেবেন। ‘এলাকায় পাকা রাস্তা হবে, আমরা ঠিকমতো চলাচল করতে পারব’ এই ভেবে রাখতে দেই। কিন্তু পাঁচ-ছয় মাস হয়ে যাওয়ার পরও এসব তিনি সরিয়ে নিচ্ছেন না। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি খলিলুর রহমান জানান, বিদ্যালয় মাঠে বালু ও খোয়া রাখার বিষয়টি আমি জানি। কিন্তু তিনমাস আগে আমার কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। একারণে আমি বিদ্যালয়ে আর যাই নাই। তাই এবিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা বলতে পারব না। ঠিকাদার আরিফুল রহমান জানান, এক সপ্তাহের কথা বলে মালামাল রাখার বিষয়টি সত্য। তবে কিছু সমস্যার কারণে কাজ শুরু করা যায় নাই। বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচএম রাকিব হায়দার জানান, বিদ্যালয় মাঠে ঠিকাদারের নির্মাণসামগ্রী রাখার বিষয়টি আমি জানি না। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মালামাল সরিয়ে নেয়ার জন্য লিখিত বা মৌখিকভাবে কোনো অভিযোগ করে নাই। প্রধান শিক্ষক বা অন্য কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ