বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পুরো রাজধানীকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। এতে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ও ক্রাইম নিয়ন্ত্রণসহ প্রায় সব কাজে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে। গতকাল শনিবার সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর ৯ম মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। মহাসমাবেশে নিসচার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন নিরাপদ সড়ক চাইয়ের ১১১টি সুপারিশ বাস্তবায়নেরও দাবি জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি ঢাকাকে নিরাপদ শহর করার জন্য। আমরা যদি এটা পারি, এরপর চট্টগ্রাম ও রাজশাহীকে করবো। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এতে আমরা বিশেষ করে ট্রাফিক ও ক্রাইম নিয়ন্ত্রণসহ সবকিছুতেই সুবিধা পাবো।
তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক সবাই চায়, আমিও চাই। আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। ট্রাফিক আইন মানতে হবে। আমাদের সিট বেল্ট ব্যবহার এবং সড়কে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমরা অনেকেই সেটি করি না। আমাদের আইন মেনে চলার প্রবণতা নিয়ে কাজ করতে হবে। আইন অমান্য করলে পুলিশ দিয়ে জেলখানায় ভরলাম, জরিমানা করলাম, তার চেয়ে বেশি দরকার আমাদের সবার সচেতনতা। আমরা যদি সচেতন হই, যদি আইন মেনে চলি, যদি বাস্তবতার নিরিখে কাজ করি, তবেই সফলতা আসবে এবং অবশ্যই আমরা তা পারবো। আর সবাই সচেতন হলে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুহার কমবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, দ্রুতগতিতে যারা মোটরসাইকেল চালান, তাদের অধিকাংশই কম বয়সী। তাদের মোটরসাইকেল চালানোর গতি দেখে মনে হয় সঠিক গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন না। মোটরসাইকেল নিয়ে কথা বললেই চালকেরা রুষ্ট হন। নিজের জীবনকে নিয়ে কেন ছিনিমিনি খেলেন? সড়ক দুর্ঘটনার শিকার ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছর। তাদের সিটবেল্ট বাঁধারও সময় নেই। চালকের পাশের জন তো বাঁধেনই না।
তরুণ অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও আর্মি একাডেমিতে যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় তিন মাস হাসপাতালে ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা আমার বিসিএস ও সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া দুটো সুযোগ নষ্ট করে দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটা শহরে ২৫ শতাংশ সড়ক থাকতে হয়। কিন্তু ঢাকায় ৯ শতাংশের মতো আছে। রাস্তায় পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও নেই, তারপরও অনেকে গাড়ি রেখে দেন। তখন অন্যান্য গাড়ি নির্দিষ্ট গতিতে চলতে পারে না। এখনো ট্রাকচালকদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা দেয়া হয়নি। পরিবহনমালিকেরা তাদের গাড়ি চালানোর সময়সীমা বেঁধে দিতে পারেননি। সড়ক ও মহাসড়ক কেমন হবে, তার নীলনকশা করে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
মহাসমাবেশে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে সবার আগে মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। যে যানবাহন চালায়, তাকে আরও বেশি মানবিক হতে হবে এবং ভূমিকা রাখতে হবে। নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমাদের দেশ, আমাদের মানুষ। তাই আমাদের সড়ক আইন মেনে চলতে হবে। সেজন্যই ঢাকার বাইরে অনেকগুলো শাখা করেছি, যেন তারা সবাই নিজ নিজ এলাকার সড়ক নিরাপদ রাখতে পারে। আমরা চাই সড়ক দুর্ঘটনায় নিজেকে সবসময় আগে দেখতে হবে, পরিবর্তন হতে হবে। মূল কাজটা আমাদেরই করতে হবে। তাই সবাই মিলে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।