Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোসলের ভিডিও করে ধর্ষণ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২২, ৯:২৭ পিএম

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় একই দিনে পৃথক দু’টি ধর্ষণের মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথম ঘটনা এক গৃহবধূর (৩৬) গোসলের ভিডিও গোপনে ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে মাজেদুল ইসলাম বসুনিয়া (২৮) নামে এক যুবককে বুধবার রাতে রংপুর নগরী থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এর আগে, ভুক্তভোগী ওই নারী কাউনিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মাজেদুল কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের নজিরদহ গ্রামের মৃত মহির উদ্দিন বসুনিয়ার ছেলে। অপর ঘটনায় কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে একই উপজেলায় আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কাউনিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের এক গৃহবধূর দুই সন্তাকে ৩-৪ বছর আগে প্রাইভেট পড়াতেন একই এলাকার মাজেদুল ইসলাম বসুনিয়া। গৃহশিক্ষক হিসেবে বাড়িতে গিয়ে প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগে গোপনে ওই গৃহবধূর গোসলের ভিডিও ও ছবি ধারণ করেন মাজেদুল। পরে সেই ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর ভয় দেখানোসহ তার ছেলেদের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করেন মাজেদুল।

সর্বশেষ গত বছরের ২৯ অক্টোবর কেউ না থাকার সুযোগে মাজেদুল আবারও ওই বাড়িতে গিয়ে গৃহবধূকে একই কায়দায় ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ওই গৃহবধূ নিরুপায় হয়ে ছেলেদের নিয়ে ঢাকায় চলে যান। কিন্তু সেখানে গিয়েও রেহায় মেলেনি। ঢাকায় থাকা অবস্থায় ওই গৃহবধূকে শারীরিক সম্পর্কের কথা জানালে তিনি রাজি না হওয়ায় অন্য নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত ১২ মার্চ তার ছোট ছেলের (১৭) মেসেঞ্জারে আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে দেন মাজেদুল। এছাড়া একইদিন বড় ছেলের (১৮) এক বন্ধুর মেসেঞ্জারেও পাঠিয়ে দেন সেই আপত্তিকর ছবি। অবশেষে নিরুপায় হয়ে ওই নারী ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে এসে গত ১১ এপ্রিল মাজেদুলের বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযুক্ত মাজেদুল হারাগাছ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। হারাগাছ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু বলেন, গত বছরের অক্টোবরে হারাগাছ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। মাজেদুল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটিতে শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। কাউনিয়া থানার ওসি মাসুমুর রহমান বলেন, ওই নারী গত ১১ এপ্রিল থানায় এসে মাজেদুলের বিরুদ্ধে গোপনে গোসলের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। ওইদিনই অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলাভুক্ত করা হয়। বুধবার রাতে তাকে রংপুর মহানগরী থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

এদিকে, একই উপজেলায় ফরিদুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে। ওই কিশোরীর বোন বাদী হয়ে বুধবার রাতে কাউনিয়া থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে ফরিদুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ফরিদুল ইসলাম উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের নয়াবাজার গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।

জানা গেছে, ওই কিশোরী লালমনিরহাট হাতিবান্ধা উপজেলার বাসিন্দা। তার বাবা-মা জীবিত না থাকায় সে আত্মীয়ের বাড়িতে পড়াশুনা করেন। সেখানে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অভিযুক্ত যুবক ফরিদুল বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে। এতে ওই কিশোরী গর্ভবতী হলে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গর্ভপাত করানো হয়। বুধবার রাতে এ ব্যাপারে কাউনিয়া থানায় ওই কিশোরির বোন কাউনিয়া থানায় মামলা করলে ফরিদুলকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়। কাউনিয়া থানার ওসি মাসুমুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ