Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্তিত্ব সঙ্কটে ইছামতি খাল!

নুরুল আবছার তালুকদার, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০২২, ১২:০২ এএম

প্রভাবশালীদের দখল-দুষণ, খালে সøুইস গেট নির্মাণে ধীরগতি, কারখানার ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলার কারণে প্রায় ৩০০ বছরের প্রাচীন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা সদরের ‘ইছামতি খাল’ এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে। বিগত দুই বছর ধরে খালে পানি সঙ্কটের কারণে বোরো চাষও ব্যাহত হচ্ছে। এক সময় নৌপথে যাতায়াত ও ব্যবসা বাণিজ্যও চলত এ খাল দিয়ে।
স্থানীয়রা বলছে, সারাদেশে নদী, খাল ও জলাশয় দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান চললেও আনোয়ারায় তা চোখে পড়ছে না। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডে বলছেন দখল-দুষণের বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর দেখবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কচুরিপানায় ভর্তি খালটি অনেকটা শুঁকিয়ে গেছে। খাল পাড়ে গড়ে ওঠা কারখানার বর্জ্য, কাঁচা বাজারের উচ্ছিষ্ট, খড়কুটার স্তুূপ, পলিথিন, বাজারের বর্জ্যসহ নানা ধরনের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে খালে। খালটি এখন মৃত খালে রুপ নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা ইছামতি খালটি উত্তরে শিকলবাহা খাল হয়ে মিলিত হয়েছে কর্ণফুলী নদীর সাথে আর দক্ষিণে বারখাইন, বরুমচড়া হয়ে সঙ্খ নদীতে মিলিত হয়। এক সময় ছোটো-বড়ো লঞ্চ ও নৌকা ছাড়াও আনোয়ারা-চাক্তাই-ফিরিঙ্গি বাজার লঞ্চ সার্ভিসে চট্টগ্রাম শহরের চাক্তাই ও ফিরিঙ্গি বাজার ঘাটে যাতায়াত ছিল এই খাল দিয়ে। এ ছাড়া উপজেলা জুড়ে বোরো রবিশস্য চাষসহ খাল পাড়ের মানুষরা গোসল ও খাওয়ার কাজে ব্যবহার করত এ খালের পানি। ইছামতি খালকে কেন্দ্র করে সনাতনি ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবছর বসে ইছমতি মেলা। এসময় পূর্ণ লাভের আশায় শতশত নারী-পুরুষ এই খালে স্নান করে।
২০২০ সালে পানি উন্নয় বোর্ড খালের দক্ষিণ পাশে বরুমচড়া ভরাসঙ্খের মুখে হাইড্রোলিক বাঁধ নির্মাণ ও উত্তর পাশে ইছামতি-শিকলবাহা খালের সংযোগস্থলে সøুইচ গেট নির্মাণ কাজ শুরু করলে বন্ধ হয়ে পড়ে নৌচলাচল ও খালে পানি চলাচল। এই সুযোগে প্রভাবশালীরা কারখানার বর্জ্য ফেলে খালটি দখল দখলের চেষ্ঠাও করছে। এ কারণে বিগত দুই বছর ধরে বোরো চাষও ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সøইচ গেট নির্মাণে ধীরগতির কারণে খালটি মৃতখালে রূপ নিচ্ছে। এই অবস্থায় খালটিকে বাঁচাতে একাদিক সময় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এগিয়ে আসার দাবিও জানিয়েছে এলাকাবাসী।
পরৈকোড়া গ্রামের কৃষক সাধান চক্রবর্তি বলেন, দুই বছর ধরে বোরো চাষ বন্ধ রয়েছে। খালে পানি না থাকায় উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার কৃষক বোরো ও রবিশস্য চাষ করতে পারছেনা। এ বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মানজুর এলাহী বলেন, ইছামতি খাল নিয়ে আমরা একটা ক্লোজার করছি। এই ক্লোজার নির্মাণ কাজ চলার কারণে কিছু সময়ের জন্য এ খালে পানি চলাচল বন্ধ রয়েছে। খাল দখল- দুষনের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর দেখবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ