যেভাবে ৫০০
ক্লাব ফুটবলে গোলের প্রায় সব রেকর্ডই তার দখলে। এবার সেই লিওনেল মেসি উঠে গেলেন আরেক উচ্চতায়। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি।
দেশের ফুটবল এখন পশ্চাদপদ। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) চরম ব্যর্থতাই এর জন্য দায়ী। তবে বাংলার মানুষের হৃদয় থেকে যে এখনো ফুটবল মুছে যায়নি তার প্রমাণ মিলল সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচরে। গত ১৩ নভেম্বর রবিবার অনুষ্ঠিত হয় শিবঅচর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল। এই ম্যাচ দেখতে মাঠে হাজির হয় প্রায় অর্ধলক্ষ স্থানীয় জনতা।
দৃশ্যপট দেখে মনেহবে, এ যেন ফুটবলের স্বর্গরাজ্য। শুধু নির্মাণাধীন সুউচ্চ ভবনের ছাদে ঝূঁকিপূর্ন অবস্থায় খেলা দেখা নয়। আশেপাশের গাছে পর্যন্ত ঠাই নেই তিল পরিমাণ। এমনকি নারকেল গাছের চুড়ায় বসেও খেলা দেখেছে ফুটবল পাগল মানুষ। এ যাবৎকালে সকল আয়োজনকে হার মানিয়ে শিবচর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে সাজ-সাজরবসহ সামগ্রিক আয়োজনটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে এ উপজেলাসহ সংলগ্ন জেলাগুলোতে। যা দেখে উচ্ছাস প্রকাশ করেন প্রধান অতিথি হিসেবে সেদিন উপস্থিত থাকা সংসদ সদস্য নূর ই আলম চৌধুরী, বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রোকসানা ইয়াসমিন ছুটি। টুর্নামেন্টের মূল উদ্যোক্তা মরহুম ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরীকেও এদিন সম্মাননা স্মারক দেয়া হয়। একইদিন দুুপুরে মহসিন ক্লাব মাঠে মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তরসহ বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন অতিথিবৃন্দ।
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে ১৯৭৩ সালে শিবচরে গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করেন বঙ্গবন্ধুর নিকটাত্মীয় তৎকালীন সংসদ সদস্য ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরী দাদাভাই। এরপর ৪৩ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে সেই গোল্ডকাপ দিয়েই বারবারের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য নুর-ই আলম চৌধুরীর উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। গত ২৮ মে এই টুর্নামেন্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় । টুর্নামেন্টে ইউনিয়ন পর্যায়ের মোট ২০টি দল অংশ নেয়। শনিবার এ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় মহসিন ক্লাব দত্তপাড়া ইউনিয়ন একাদশকে ১-০ গোলে পরাজিত করে ৪৩ বছর পর শুরু হওয়া এ টুর্নামেন্টের ট্রফি জিতে নেন। নির্ধারিত সময়ে খেলা গোলশূন্য ছিল। অতিরিক্ত সময়ে মহসিন ক্লাব একমাত্র গোলটি করে। বাদ্যের তালে তালে স্বাগত জানানো হয় বিজয়ীদের ও আগত অতিথিদের। এ খেলাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই সাজ-সাজরব বিরাজ করছিল শিবচরজুড়ে। বর্ণিল সাজে সাজানো হয় মাঠ প্রাঙ্গনসহ আশেপাশের এলাকা । অপরুপ এক রুপ নেয় সবার প্রিয় হাতিরবাগান মাঠ। এদিন বেলা বাড়ার সাথে সাথে ঐতিহ্যবাহী হাতিরবাগান মাঠে দর্শকদেরও ভিড় বাড়তে থাকে। দুপুর ১ টার মধ্যেই মাঠের চারদিক কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যেন দর্শকদের ঢল নামে। মাঠের চারদিকের চাইতে বাইরে আরো বেশি দর্শক অবস্থান করে মাইকে ধারাবিবরণী শুনেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব রেজাউল করিম তালুকদারের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বারবারের সংসদ সদস্য নূর ই আলম চৌধুরী, বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রোকসানা ইয়াসমিন ছুটি। এ ছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কামালউদ্দিন বিশ^াস, জেলা পরিষদ প্রশাসক মিয়াজউদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মুনির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক কাজল দে প্রমুখ।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এমপি এ ধরনের আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আজকের এই খেলায় দর্শকের ঢলই প্রমাণ করে শিবচরের মানুষ শান্তির পক্ষে, মাদকের বিপক্ষে, জঙ্গিবাদের বিপক্ষে। আজ নতুন স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর হয়েছে। এ স্টেডিয়ামকে আরো সম্প্রসারিত করা হবে।
প্রধান অতিথি নূর ই আলম চৌধুরী এমপি টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটি ও আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ৪৩ বছর পর এই টুর্নামেন্টটি হয়েছে। খেলার মাধ্যমেই সামজ থেকে মাদক দূর করা সম্ভব। তিনি এ সময় শিবচরকে নিয়ে তার নানান পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।