Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পায়রায় বোলার্ড পুল টাগ নির্মাণ কাজের সূচনা হচ্ছে আজ

নাছিম উল আলম, বরিশাল থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০২২, ১২:০৫ এএম

পায়রা সমুদ্র বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম নির্বিঘœ ও সহজতর করতে আরো দুটি বোলার্ড পুল টাগ নির্মাণ কাজের সূচনা হচ্ছে আজ। খুলনা শিপইয়ার্ড প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আগামী ১৮ মাসে এ দুটি নৌযান নির্মাণ শেষে পায়রা বন্দরের কাছে হস্তান্তর করবে। আজ সকালে খুলনা শিপইয়ার্ডের সবুজ চত্ত¡রে এক অনুষ্ঠানে এসব টানা জাহাজ-এর ‘কিল-লে’র মাধ্যমে নির্মাণ কাজের সূচনা হচ্ছে। পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল মো. সোহায়েল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন। খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এম সামসুল আজীজ-এর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির জিএমগণ ছাড়াও ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন।
আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমায় ও বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমে প্রায় সোয়াশ’ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৩৮ ফুট প্রস্থ এসব টাগ বোট পায়রা বন্দরে আগত যেকোন সমুদ্রগামী জাহাজের বার্থিং, আন বার্থিং, টো, পুশ, পুল ও অগ্নি নির্বাপনসহ দূর্ঘটনা কবলিত নৌযানের উদ্ধার তৎপরতাও দক্ষতার সাথে ব্যবহৃত হবে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ আশা করছেন। পাশাপাশি বন্দরের মাদার ভেসেল নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনসহ উপক‚লীয় বিভিন্ন কার্যক্রমেও দেশে নির্মিতব্য প্রথম ৭০ টন ক্ষমতার ‘বোলার্ড পুল টাগ বোট’ দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে বলে খুলনা শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
পায়রা সমুদ্র বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম নির্বিঘœ ও সহজতর করতে সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলে নির্মানাধীণ এসব টাগ দেশে নির্মিত এযাবতকালের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বলে জানা গেছে। যাতে জাপানের ‘নি¹িয়াটা’ ব্রান্ডের ১ হাজার ৮৩৮ কিলোওয়াট ক্ষমতার দু’টি করে মেইন ইঞ্জিন ছাড়াও আমেরিকার ‘কামিন্স’ ব্রান্ডের ২৫০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি এবং ৮০ কিলোওয়াটের আরো একটি করে স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর থাকবে। এসব টাগে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এক্সটার্নাল ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম ছাড়াও ইউরোপের অরিজিন লাইফ সেভিং ফায়ার ফাইটিং রেসকিউ ইকুইপমেন্ট এবং বোট, ডেক মেশিনারী ছাড়াও ৩টন ক্ষমতার ১টি ডেক ক্রেন সংযোজন করা হবে। এসব অত্যাধুনিক টাগে প্রথমবারের মত ১টি করে সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এবং ওয়েলি ওয়াটার সেপারেটর স্থাপন করা হবে।
পায়রা বন্দরের জন্য নির্মিতব্য এসব টাগের নির্বিঘœ পরিচালন কার্যক্রম নিশ্চিত করতে জাইরো কম্পাস, ম্যাগনেটিক কম্পাস, রাডার, ইকো-সাউন্ডার, এআইএস, জিপিএস ও ভিএইচএফ বেতার যোগাযোগ যন্ত্র স্থাপন করা হবে। নৌযানগুলোতে ইউরোপের স্বনামধন্য অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রিক্যাল সুইচ বোর্ড স্থাপিত হবে।
বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর নিয়ন্ত্রনাধীণ খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যে প্রায় ৮০০ বিভিন্ন ধরনের উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন নৌযান নির্মাণ ছাড়াও আড়াই হাজার নৌযানের মেরামত সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানটি ইতোপূর্বে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জন্য লার্জ পেট্রোল ক্রাফট এবং পেট্রোল ক্রাফট ছাড়াও টাগ নির্মাণ করেছে। অনুরূপভাবে, প্রতিষ্ঠানটি কোষ্ট গার্ডের জন্যও দু’টি আন্তর্জাতিক মানের টাগ ছাড়াও পায়রা বন্দরের জন্য ২টি পাইলট ভেসেল এবং আরো ২টি হেভী ডিউটি স্পীড বোট নির্মাণ করেছে বলে জানা গেছে।
পায়রা বন্দরের জন্য নির্মিতব্য এসব টাগ আন্তর্জাতিক ক্লাসিফেকেশন সোসাইটি ফ্রান্সের ‘ব্যুরো ভেরিটাস’এর নীতিমালা অনুসরণ করে নির্মিত হবে। একসময়ে দায় দেনার ভারে রুগ্ন ও বিক্রি তালিকাভ‚ক্ত খুলনা শিপইয়ার্ড ১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর নৌ বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের পরে তার হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করে এখন দেশের উন্নয়নের এক অনন্য অংশিদার। করোনা মহামারীর গত দুবছরের সংকটকালীন সময়েও প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১৮৩ কোটি টাকা আয়কর ও ভ্যাট প্রদানের পরেও ১২৫ কোটি টাকা নীট মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ