Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লৌহজংয়ে সর্বনাশা পদ্মার ফের মানচিত্র আঘাত

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০২২, ৩:০৪ পিএম

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মানচিত্র ফের আঘাত হানছে সর্বনাশা পদ্মা। অসময়ে পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় হঠাৎ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতে উত্তাল ঢেউ আর প্রবল স্রোতের কারণে অসময়ের এই ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে পদ্মা নদী ঘেঁষা উপজেলার আশপাশের গ্রাম ও বসতভিটা। গত ১ সপ্তাহে ইতোমধ্যে ২টি বসতভিটা বিলীন হয়েছে। সর্বনাশা পদ্মার ছোবলে প্রতিবছরই আঘাত হানছে আড়াই লাখ জনসংখ্যার বসবাসরত লৌহজং উপজেলার মানচিত্রে। উপজেলার কনকসার ইউনিয়নের সিংহেরহাটি গ্রাম ও লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া গ্রামের ১নং ওয়ার্ডে সপ্তাহ খানেক যাবত ভাঙন শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে হোসেন মোল্লার ৪'শ বছরের পুরনো ভিটেবাড়ি ভেঙে যায়। পরে তরিগরি করে ঘরটি ভেঙে অন্য স্থানে সরিয়ে রাখা হয়। মিঠু মোল্লার একটি ঘরের আংশিক পদ্মার গর্ভে চলে গেছে। ১নং ওয়ার্ড বড় নওপাড়া গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কখন পদ্মায় গিলে খায় সে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীর পাড়ের মানুষ।

আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, প্রায় ২৫ বছর যাবত আমি এই বাসায় থাকি। আমার বাসার বিল্ডিং ভেঙে যাচ্ছে। সামনের বাড়িঘর সব পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। আমরা অহন কোথায় যামু। ফরিদ মাঝি বলেন, গত ৩ দশক যাবত দেখছি প্রতিবছর গ্রামের পর গ্রাম পদ্মায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফাতেমা বেগম জানান, ১৭ বছর যাবত বিয়ে হয়েছে তখন আশপাশে নদী দেখিনি। এখন নদীর প্রতিটি ঢেউ কানে বাজে। আমরা আতঙ্ক দিনরাত কাটাচ্ছি। রাতে ঘুমাতেও পারি না। মনে হয় এই বুঝি পদ্মায় খেয়ে ফেলবে। দ্রুত এ ভাঙ্গনের স্থায়ী সমাধান চাই।

এদিকে ভাঙনের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেন। তাৎক্ষণিক পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা ভাঙন এলাকায় আসেন। এবং ভাঙ্গনরোধে জিও ব্যাগ ফেলার আশ্বাস প্রদান করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল আউয়াল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, গতকাল ভাঙান এলাকা পরিদর্শন করেছি। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ডেকেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এসে ছবি তুলে নিয়ে গেছে। এবং তাদের দ্রুত ভাঙ্গনরোধে জিও ফেলার জন্য বলেছি। তারা আগামী দুই একদিনের মধ্যে এসব এলাকায় ভাঙ্গনরোধে জিও ব্যাগ ফেলবে।

এছাড়া গত বুধবার লৌহজং-টঙ্গাবাড়ি উপজেলায় ৪৪৬ কোটি টাকার স্থানীয় বাঁধ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। এ প্রকল্পে লৌহজং উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম ও টংগিবাড়ী উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ৪টি গ্রামের ৯ হাজার ১০০ মিটার নদী তীরবর্তী এলাকায় বাঁধের কাজ হবে। সে প্রেক্ষিতে প্রথমে জিও ব্যাগ ফেলে ফাউন্ডেশন করা হচ্ছে। তারপর পাথর দিয়ে বাঁধ দেওয়া হবে। আর এখন চলছে বর্ষা মৌসুম সে ক্ষেত্রে পদ্মায় স্রোতের তীব্রতা দিনদিন বাড়ছে। আর লৌহজংয়ে নদীর পাড়গুলোতে ঢেউয়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ হয়ে গেলে এ এলাকায় ভাঙন সমস্যায় আর থাকবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ