বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কোণঠাসা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে। দীর্ঘ সাত বছরের পুরনো কমিটি ভেঙ্গে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে নতুন নেতৃত্বের সাজে আসছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি। একই সাথে মহানগর বিএনপিরও কমিটি উঁকি দিবে। জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও অনেকটা শেষ পর্যায়ে। নতুন কমিটিতে স্থান পেতে কয়েকমাস ধরেই চলছে নেতাদের লবিং। কমিটিতে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন ফুটে উঠবে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে। আর এমনটি হলে সাংগঠনিকভাবে ঝিমিয়ে পড়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও মহানগর বিএনপি সকল নীরব নিস্তব্ধতা কাটিয়ে ডিসেম্বরে পুরোদমে সরব হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন নেতাকর্মীরা।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে এতোদিন নতুন কমিটি না করায় তৃণমূলে বেড়েছে অসন্তোষ। তার উপর সিটি কর্পোরেশন হওয়ার ৫ বছরেও মহানগর কমিটি না হওয়ায় নগরকেন্দ্রিক নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েন। দলের সহযোগী এবং অঙ্গসংগঠনগুলোর কার্যক্রমও অনেকেটা স্থবির হয়ে পড়ে। আবার সরকার বিরোধী ‘ব্যর্থ আন্দোলন’ ঘিরে বেশিরভাগ নেতাকর্মীর ভাগ্যে জুটে মামলার খড়গ। হাজার হাজার নেতাকর্মী শত শত মামলা আর গ্রেফতার আতঙ্কে থাকে আত্মগোপনে। ক্রমশই ঝিমিয়ে পড়তে থাকে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম। নগরীর কান্দিরপাড়ের দলীয় কার্যালয়ে দেখা দেয় সুনশান নিরবতা। ডিসেম্বরে নতুন যে দুইটি কমিটি হবে সেখানে সুবিধাভোগীদের পদে না রেখে তৃণমূল নেতাদের প্রধান্য থাকলে কুমিল্লায় বিএনপির হারানো শক্তি ফিরে আসবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটিতে সভাপতি পদ পাবার জন্য অনেকেই ঢাকায় লবিং শুরু করেছেন। তবে বয়স ও শারীরিক অবস্থার কারণে এবারের নতুন কমিটিতে সভাপতি পদে থাকতে চাইছেন না বর্তমান সভাপতি বেগম রাবেয়া চৌধুরী। তাই সভাপতি পদে নতুন মুখের যারা চেষ্টা তদবির শুরু করেছেন তাদের মধ্যে সাবেক এমপি কর্নেল অব. আনোয়ারুল আজিম, সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মো. ইউনুস, ফজলুল হক ফজলু, সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী, সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূইয়া ও সাবেক এমপি মাহবুবুর রহমান রয়েছেন। সভাপতির পদের দৌড়ে এখন পর্যন্ত আনোয়ারুল আজিম ও ফজলুল হক ফজলু এগিয়ে রয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে মোস্তাক মিয়া ছাড়া তেমন কোন নেতার নাম এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। সেইদিক থেকে একসময়কার তুখোড় ছাত্রনেতা কুমিল্লা বিএনপির নিবেদিত নেতা মোস্তাক মিয়াই হতে পারেন দক্ষিণ জেলার নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মোবাশ্বর আলম ভূইয়ার নাম শুনা যাচ্ছে। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা বর্তমান কমিটির প্রচার সম্পাদক মোস্তফা জামানের নাম কেন্দ্রিয়ভাবে অনেকটা গ্রহণযোগ্যতার জায়গায় রয়েছে বলে জানা গেছে। বিএনপির যে ক্রান্তিকাল চলছে এসময়টিতে মোস্তফা জামানের মতো নেতারা সাহসিকতার সাথে দলের সাংগঠনিক কর্মকা- পরিচালনা করছেন।
অন্যদিকে মহানগর কমিটিতে সভাপতি পদে বর্তমান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন অনেকটা নিশ্চিত। তবে মহানগরেও সভাপতি হতে চান মনিরুল হক চৌধুরী। তিনি জেলা বা মহানগরের যেকোন একটিতে সভাপতি হওয়ার জন্য চেষ্টা তদবির করছেন বলে জানা গেছে। সাধারণ সম্পাদক পদে সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ছাড়া আর কোন নেতা এ পদে আসতে চাইছেন না। সেই হিসেবে সাক্কুই হতে পারেন মহানগরের সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম সম্পাদক পদে মেয়র সাক্কুর ঘনিষ্ঠজন ত্যাগী নেতা আবদুর রউফ চৌধুরী ফারুকের নাম শোনা যাচ্ছে। আর সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন শহর বিএনপির বর্তমান সভাপতি আলহাজ জসিম উদ্দিন ভিপি। একই পদে আসার জন্য লবিং করছেন জেলা যুবদল সভাপতি আমিরুজ্জামান আমির।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া বলেন, ‘কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছে। এবছরের ডিসেম্বরেই দক্ষিণ জেলা ও মহানগর কমিটির ঘোষণা আসবে। কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে বলা যেতে পারে। আমরা আশাবাদী, দুটি কমিটিতেই ত্যাগী ও যোগ্য নেতারাই স্থান পাবেন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।