পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তীব্র গরম ও যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। ভয়াবহ তাপপ্রবাহ ও ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে যানজট মিলে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে গণপরিবহনের যাত্রীদের। বিশেষ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থাকা যাত্রীবাহী বাসের নারী ও শিশুদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে। এছাড়া বিজয় সরণিতে ভোরে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে উল্টে যাওয়া একটি কভার্ডভ্যান। এটি সরাতে ছয় ঘণ্টা লেগে যাওয়ায় সপ্তাহের শেষ দিনের শুরুতেই যানজটে ভুগতে হয় অফিসগামী যাত্রীদের।
সকালে ক্রেন এনে কভার্ডভ্যানটি সরানো হয়। সকাল সোয়া ৯টা পর্যন্ত বিজয় সরণি মোড় হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় আশপাশের সড়কে যানজট তৈরি হয়। কভার্ডভ্যানটি সরাতে দেরি হওয়ায় মহাখালী, ফার্মগেট, বনানী, গুলশান, মগবাজার, বিজয়নগর, পল্টন, গুলিস্তান, বাড্ডা, রামপুরা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে যানজটের তীব্রতা। বিজয় সরণির মোড়ে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে দুর্ঘটনায় পড়া মালবোঝাই কভার্ড ভ্যানটি উড়োজাহাজ ক্রসিং থেকে তেঁজগাওয়ের দিকে যাচ্ছিল। আর বাসটি আসছিল ফার্মগেইটের দিক থেকে। সংঘর্ষের পর কভার্ডভ্যানটি উল্টে যায়।
কয়েক দিন ধরেই দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে প্রচন্ড ভ্যাপসা গরম। কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টি বা কালবৈশাখী বয়ে গেলেও অসহনীয় গরম কিছুতেই কমছে না। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় তাপমাত্রা কম থাকলেও গরম অনুভ‚ত হচ্ছে বেশি। আরও ১৫ বা ২০ দিনের মতো এই ভ্যাপসা গরম থাকতে পারে। যদিও মাঝে কালবৈশাখী বা হালকা বৃষ্টি হবে কোথাও কোথাও।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, তিন কারণে এইরকম গরম অনুভ‚ত হচ্ছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি, বাতাসের গতিবেগ কম, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কম থাকা এবং দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের আলো মাটিতে পড়ার কারণে গরম যতটা না তারচেয়ে বেশি অনুভ‚ত হচ্ছে।
এই সময় এমন গরম পড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকে এই সময়ে। এই জলীয় বাষ্পের কারণে শরীরে প্রচুর ঘাম হয়। ঘাম সহজে শুকায় না। আর এই ঘামের কারণে একটু গরম পড়লে মনে হয় গরমটা অনেক বেশি। এছাড়া এখন বছরে অন্য সময়ের চেয়ে দিন বড়। ফলে দীর্ঘ সময় সূর্যের তাপ মাটিতে পড়াটাও একটি কারণ।
এদিকে আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যকার পার্থক্য না থাকাটাও গরমের একটি বড় কারণ। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পার্থক্য মাত্র ৭ ডিগ্রির। সাধারণত তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রির কম থাকলে এরকম গরম অনুভব করার কথা।
গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, দিনের শুরুতে সকাল থেকে অসহনীয় যানজটে পড়েছেন রাজধানীবাসী। প্রধান সড়কসহ অলি গলির মুখগুলোতে যানবাহনের জটলা দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানী ঢাকার যাত্রীদের। যথাসময়ে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মস্থলগামী মানুষ এবং স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা। এক থেকে দেড় কিলোমিটার সড়ক যেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগছে।
যানজটের কারণে গণপরিবহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে ছুটছেন অতিষ্ঠ নগরবাসী। কোনো কোনো সড়কে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফিরে যাচ্ছে গাড়ি। বিমানবন্দর সড়কে উত্তরা থেকে মহাখালী, কল্যাণপুর, গাবতলী, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, শ্যমলী, মিরপুর, বাংলামোটর ও তেজগাঁও এলাকার সড়কে যানবাহন চলাচলের অবস্থা ছিলো স্থবির। এর প্রভাব শহরের অন্যান্য এলাকায়ও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
বাস যাত্রীরা জানান, মালিবাগের আবুল হোটেল থেকে মধ্যবাড্ডা পর্যন্ত সড়কের দুইপাশেই যানজট রয়েছে। অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ভ্যাপসা গরম ও যানজটে ঘেমে তাদের জীবন অতিষ্ঠ। যানজটের কারণে সদরঘাট এবং যাত্রাবাড়ী থেকে গাজীপুর-আব্দুল্লাপুর-টঙ্গী রুটের অনেক যাত্রী বাস থেকে নেমে ফিরে যাচ্ছেন। আরেক যাত্রী জানান, রামপুরা বাড্ডা হয়ে গুলশান রাস্তাগুলোতে যানচলাচল প্রায় বন্ধ। গরমে ট্রাফিক জ্যামে আটকে আছি দেড় ঘণ্টা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় বসে থাকতে হচ্ছে।
এ সড়কে চলাচলকারী ব্যবসায়ী মাহফুজুল হক বলেন, আমি সকালের দিকে উত্তরা থেকে প্রাইভেটকারে মতিঝিল এলাকায় অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা দিলেও ঠিক সময়ের এক ঘণ্টা পর অফিসে এসেছি। গত কয়েকদিনের চেয়ে আজ মনে হচ্ছে বেশি গরম ও রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। যানজটের কারণে এক জায়গায় অনেকক্ষণ বসে থাকতে হচ্ছে।
পুলিশের ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের শেরে বাংলা জোনের সহকারী কমিশনার শোভন চন্দ্র হোড় বলেন, বাসটি বেশ কিছুক্ষণ পর সরানো হলেও কভার্ডভ্যানটি সরাতে অনেক সময় লেগে যায়। ক্রেন এনে কভার্ডভ্যানটি সরানোর পর সকাল সোয়া ৯টার দিকে রাস্তায় যানবাহন চলাচল শুরু হয়। বিষয়টি বেশ জটিল ছিল। বাসটি আমরা সকাল ৭টার দিকে সরাতে পেরেছি। কিন্তু মালবোঝাই বড় কভার্ডভ্যান সরানোর জন্য বড় ক্রেন প্রয়োজন ছিল। তাছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হয়েছে। বিজয় সরণির এই ঘটনার জের পুরো শহরে পড়েছে। এক দিকে বিমানবন্দর সড়ক, উত্তরা, অন্য দিকে বিজয়নগর পর্যন্ত জ্যামের প্রভাব পড়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা ট্রাফিক জোনের ডিসি সাইফুল হক ইনকিলাবকে বলেন, বিমানবন্দর থেকে উত্তরা সড়কে নিয়মিতই যানজট সৃষ্টি হয়। উন্নয়ন কাজের কারণে গত কয়েকদিন ধরে যানজট বেশি হচ্ছে। যাত্রীদের স্বাভাবিক চলাচলের জন্য ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।