বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা আ.লীগের নবগঠিত কমিটিতে সহসভাপতির পদ পেয়েছেন দুই বারের বহিষ্কৃত আওয়ামীলীগ নেতা ও নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী আশ্রাফ উদ্দীন রাজন রাজু। বিতর্কিত এ নেতাকে তিরস্কারের পরিবর্তে পুরষ্কৃত করা নিয়ে তৃণমূল উপজেলা আওয়ামী লীগে চলছে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ।
আশ্রাফ উদ্দিন রাজু উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চরকাদিরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোতাহের হোসেন কালনের ছেলে। পারিবারিক ভাবে তিনি একসময়ের বিএনপির সমর্থক ছিলেন।
সুত্র জানায়,আশ্রাফ উদ্দীন রাজুর বাবা মোতাহের হোসেন কালন এক সময়ে বিএনপি শীর্ষ নেতা ছিলেন। এর জের ধরে রাজুর গোটা পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। সাবেক স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রয়াত শফিউল বারী বাবুর অনুসারী হিসেবে তিনি বেশ পরিচিত ছিলেন।
পরবর্তীতে ২০১১ সালে তিনি (রাজু )আ.লীগে যোগ দিয়ে ভাগিয়ে নেন নৌকার টিকেট। হয়ে যান চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত কমলনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল আমিন রাজুর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। এতে নৌকার পরাজয় ঘটে। এই দুই নেতার রশি টানাটানিতে লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ মুহাম্মাদ শামছুল আলম উপজেলা চেয়ারম্যান হন। তখন করা হয় রাজুকে বহিষ্কার। এর পর রাজু রাজনীতির মাঠ থেকে অনেকটা দুরে সরে যান। পরে ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম সাগরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মোটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে প্রার্থী হন রাজু। ওই নির্বাচনে নৌকা মার্কা ও বিদ্রোহী প্রার্থী রাজু উভয়ে বিপুল ভোটে হেরে যান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহর সাথে। এর পর রাজুকে দ্বিতীয় বারের মতো বহিষ্কার করা হয়। ছয় মাস যেতে না যেতেই গত ১৩ মে শুক্রবার উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে পদায়ন করা হয় সহ-সভাপতি পদে। এতে তৃণমূলে চলে ক্ষোভের আগুন।
এ নিয়ে তৃণমূল আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মীরা জানান,আওয়ামী লীগের মতো একটি রাজনৈতিক দলকে নিজের ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করছেন রাজু। চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তার হাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে আশ্রাফ উদ্দীন রাজু বলেন,২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আমি জিবন বাজী রেখে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছি। তখন বিএনপি জামায়াতের লোকেরা আমার ৫০ লাখ টাকার ট্রাক পুড়িয়ে দেয়। উপজেলা আওয়ামীলীগ আমাকে লিখিত কোন বহিষ্কার করেনি।শুধু মাত্র মৌখিক ভাবে বলেছে। পরে আমি আমার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলে তারা আমাকে কাউন্সিলর করেন। আমি ভোট দিয়েছি।এখন তারা আমাকে সহ-সভাপতি করেন।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল আমিন রাজু বলেন , দলের সুনির্দিষ্ট গঠনতন্ত্র আছে। এক সময়ের বিএনপি নেতা আশ্রাফ উদ্দীন রাজুর বেলায় কোনো নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। আমার দিক থেকে আপত্তি ছিল। কিন্তু দলের গুটিকয়েক নেতা একক সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজটি করেছেন। একজন চিহ্নিত দুই বারের বহিষ্কৃত নেতা এখন আওয়ামী লীগ নেতা সেজে তার ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করছেন। 'রাজুকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে'। এবিষয় আপনার লেখালেখি করলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন,বহিষ্কৃত ব্যক্তি কিভাবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি হয় সেটা তাঁরও প্রশ্ন বলে দাবী করে তিনি আরো বলেন 'রাজুকে আমরা কেউ সহসভাপতি করিনি -এক্ষেত্রে দলের হাইকমান্ডের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে দাবি করেন তিনি'।
বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় লেখালেখি করার জন্য অনুরোধও করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।