Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সিলেটে কৈলাসটিলার গ্যাস জাতীয় গ্রেডে সরবরাহের উদ্বোধন করলেন সিনিয়র সচিব মাহবুব

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০২২, ৫:৩৮ পিএম

সিলেট কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ৭ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়েছে আজ (শনিবার)। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের অধীনস্থ এ গ্যাস ক্ষেত্রের

গ্যাস সরবরাহ কাজের উদ্বোধন করেন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট গ্যাস ফিল্ডের মহাব্যবস্থাপক (পরিচালন) প্রকৌশলী আব্দুল জলিল প্রামাণিক।
তিনি বলেন, ‘আজ শনিবার সকাল ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। এই কূপ থেকে প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে ১৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ৭নম্বর কূপ থেকে গত ৭ মে পরীক্ষামূলক গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এই প্রক্রিয়া সফলতা পাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে পুরোদমে গ্যাস সরবরাহ শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এরই প্রেক্ষিতে আজ আনুষ্ঠানিক গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হয়েছে।

গ্যাস ফিল্ড সূত্র মতে, কৈলাসটিলা গ্যাস ফিল্ডের সাতটি কূপের মধ্যে এতোদিন দুটি কূপ থেকে দৈনিক ২ কোটি ৯০ লাখ ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতো। এখন ৭ নম্বর কূপ থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হচ্ছে। সবমিলিয়ে এখান থেকে ৪ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুট গ্যাস প্রতিদিন যাবে জাতীয় গ্রিডে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মিজানুর রহমান জানান, এ কূপটি (৭ নম্বর) ওয়ার্ক ওভারের আগে তাদের প্রত্যাশা ছিল দৈনিক ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস এখান থেকে পাওয়া যাবে। কিন্তু দৈনিক পাওয়া যাচ্ছে ১৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এর সঙ্গে উপজাত হিসাবে মিলবে প্রতিদিন ২৫০ ব্যারেল কনডেনসেট যা থেকে জ্বালানি তেল পাওয়া যাবে আনুমানিক ২২ লাখ টাকার। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আরপিসের ধারণা মতে এই স্তরে মজুত রয়েছে ৭৫৮ বিলিয়ন ঘটফুট গ্যাস। প্রতি হাজার ঘটফুট গ্যাস ১০ ইউএস ডলারে হিসাব করলে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা বলে ও জানান তিনি।

অপরদিকে এক নির্ভরযোগ্য তথ্যমতে, ২০১০-১২ সালে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানি বাপেক্সের কারিগরি সহায়তায় সিলেটের গোলাপগঞ্জের কৈলাসটিলা, জৈন্তাপুরের হরিপুর ও হবিগঞ্জের রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রে নতুন করে ত্রিমাত্রিক ভূতাত্ত্বিক (থ্রিডি সাসমিক) জরিপ চালানো হয়। এ জরিপে কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ৭ নম্বর কূপে তেল ও গ্যাস মজুতের সম্ভাব্যতা পায় বাপেক্স। এ কূপের ১২টি স্তরে তেল ও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানায় তারা। তন্মধ্যে চারটিতে তেল, একটিতে তেল-গ্যাস আর বাকি সাতটিতে গ্যাস মজুতের ধারণা দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোলাপগঞ্জ সফর করে দেশের প্রথম তেল খনি হিসেবে ঘোষণা করে এই কূপের কাজ উদ্বোধন করেন তিনি। পুরোদমে খনন শুরু হয় ২০১৪ সালের ১৭ অক্টোবর। ২০১৫ সালের ৮ মার্চ খনন কাজ শেষে একটি স্তরে গ্যাসের সন্ধান পেলেও তেলের খোঁজ পায়নি বাপেক্স। ২০১৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় গ্রিডে ৮-১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু হয় এই কূপ থেকে। কিন্তু ২০১৬ সালের অক্টোবরে গ্যাস উত্তোলনের হার ০.৫ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এলে ২ নভেম্বর বন্ধ হয়ে যায় এই কূপ। এখন ফের শুরু হলো গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ। মূলত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্তৃপক্ষ কূপটিতে ওয়ার্ক-ওভার শুরু করে। তাদের হয়ে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব তেল, গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানি বাপেক্স এই কাজ শুরু করে। বাপেক্সের কাজ শুরু হয় গেল মাসে। বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জাতীয় গ্রিডে এই কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হলো। এখন এই কূপ থেকে ২ হাজার ৮০০ পিএসআইতে হচ্ছে গ্যাস উৎপাদন, এমন তথ্য জানান তিনি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ