Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাইরাসে মরছে ‘সাদা সোনা’

‘৮০ ভাগ ঘেরে মড়ক লেগে চিংড়ি মরে গেছে’

এস এম সামছুর রহমান, বাগেরহাট থেকে | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০২২, ১২:৩৪ এএম

বাগরহাটের রামপাল ও মোংলা উপজলায় ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মরছে ‘সাদা সোনা’ খ্যাত চিংড়ি মাছ। এর ফলে মৌসুমের শুরুতে এ দুই উপজলায় চিংড়ি শিল্পে কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন চিংড়ি চাষিরা। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, অপরিকল্পিত ঘের করা ও ভাইরাসযুক্ত পোনা ছাড়ায় এমনটা হতে পারে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র ও ভুক্তভোগীদেরে সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাগেরহাটের রামপাল ও মোংলা উপজেলায় চিড়িং চাষি রয়েছে কয়েক হাজার। এ দুই উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার চিংড়ি ঘের রয়েছে। গত এক সপ্তাহর ব্যবধানে এ দুই উপজলার বিভিন্ন এলাকায় চিংড়ি ঘেরে হঠাৎ করে মাছ মরতে শুরু করে। তবে কি কারণে চিংড়ি মরছে চাষিরা তার সঠিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। তারা ধারণা করছেন, ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই মাছগুলো মরে যাচ্ছে।

রামপাল উপজেলার ভোজপাতিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ী নুরুল আমিন বলেন, আমাদের ইউনিয়নের ৮০ ভাগ চিংড়ি ঘেরে মড়ক লেগে চিংড়ি মরে গেছে। এতে চাষিরা সর্বস্ব হারিয়েছে। কি কারণে মাছ মরছে তাও তো কেউ বলতে পারছে না।

উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের চিংড়ি চাষি রাজীব সরদার বলেন, ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ ঘেরের চিংড়ি মরে শেষ। যারা লোন নিয়ে চিংড়ি চাষ করেছে তারা একবারই নিঃস্ব হয়ে গেছে। এ উপজেলার রাজনগর, বাইনতলা ও পেড়িখালি ইউনিয়নের সব চিংড়ি ঘেরের অবস্থা একই রকম।

মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন সরদার বলেন, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমার তিন বিঘা জমিতে মাছ ছেড়ে ছিলাম। গত কয়েক দিন ধরে মাছ মরতে শুরু করেছে। ঘের থেকে মরা মাছ উঠিয়ে দেখি প্রতিটি মাছের গায়ে সাদা সাদা দাগ রয়েছে। কি রোগে মাছ মরছে, তা তো বুঝতে পারছি না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমার তো পথে বসা লাগবে।

একই উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের কাটাখালি এলাকার বাসিন্দা মারুফ হাওলাদার বলেন, এর আগেও ঘেরে মাছ মরেছে, কিন্তু এত দ্রুত কখনও মাছ করতে দেখিনি। সব মাছ মরে ঘেরের পানির তলায় রয়েছে। ঘেরে নামার পর হাতিয়ে মরা মাছ উঠাচ্ছি।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম রাসেল বলেন, জেলার রামপাল ও মোংলা উপজেলার প্রায় ২০ হাজার চিংড়ি ঘেরের ৩৫ শতাংশ ঘেরের মাছ মারা গেছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তবে কি কারণে চিংড়ি মারা যাচ্ছে, সেটি বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ধারনা করছি অতিরিক্ত গরম, হোয়াইট স্পট সিনড্রম ভাইরাস বা মৌসুমের শেষে ভাইরাস যুক্ত চিংড়ি ঘেরে ছাড়ার কারণে এমনটা হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, জেলার অধিকাংশ ঘের প্রস্ততির আগে চাষিরা ব্লিচিং পাউডারসহ ভাইরাস মুক্ত করণের যে সব পদ্ধতি আছে তা প্রয়াগ না করে গতানুগতিকভাবে ঘের প্রস্তত করে চিংড়ি ছাড়েন। এছাড়া চিংড়ি পোনা ছাড়ার আগে পোনা ভাইরাসমুক্ত কিনা তা পিসিয়ার পরীক্ষা না করে পোনা ছাড়ার কারনে এমনটা হতে পারে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ