Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ডাকুয়া নদীর ব্রিজ নির্মাণের নামে হয়রানি

স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া থেকে : | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ব্যস্ততম পাকা সড়কের জরাজীর্ণ সেতু ভেঙে করা হবে নতুন পিএসসি গার্ডার সেতু। তাইতো সড়ক ভেঙে বড় পুকুর কাটা হয়েছে। সেই পুকুরের মাটি দিয়ে জরাজীর্ণ বিকল্প সড়ক নির্মাণ করে লাপাত্তা ঠিকাদার। সেখানে নেই কোন সতর্কীকরণ সাইবোর্ড। নেই দুর্ঘটনা প্রতিরোধক ব্যবস্থা। তারপর আবার বৃষ্টিতে ধ্বসে গেছে সড়কটি। প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানযট। যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে চরম বিপাকে পড়েছে জনগণ। এক কথায় সেতু ও সড়কটি এখন জনগণের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতুটি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লালন বাজার-পান্টি বাজার সড়কের ঐতিহ্যবাহী পান্টি বাজারের ডাকুয়া নদীর উপর অবস্থিত। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু নির্মাণের খোঁজ নেই। অথচ সেতু থেকে সড়ক বিচ্ছিন্ন করে পুকুর কেটেছে। পুকুরের মাটি দিয়ে কোনমতে বিকল্প কাঁচা সড়ক নির্মাণ করে পালিয়েছে ঠিকাদার। হঠাৎ বৃষ্টিতে সড়কের কয়েকটি স্থান ধ্বসে গেছে। এতে জরাজীর্ণ সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে যানযট সৃষ্টি হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে পারাপার হচ্ছে জনগণ। ঘটছে দুর্ঘটনা।
গত শনিবার দুপুরে নির্মাণাধীন সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দুইপাড়ে প্রায় কয়েক কিলোমিটার যানযট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে মানুষ। বিকল্প সড়কের কয়েকটা স্থান ধ্বসে গেছে। সেতুর দুইপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে রড, পাথর ও যন্ত্রপাতি রেখেছে। চরম ভোগান্তিতে চলাচল করছে মানুষ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ডাকুয়া নদীর দুইপার ঘেষে ঐতিহ্যবাহী পান্টি বাজার। উপজেলার দ্বিতীয় শহর বলা হয় পান্টিকে। উপজেলার চাঁদপুর, বাগুলাট, পান্টি ও যদুবয়রা ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ চলাচল করে এই সড়ক দিয়ে। এছাড়াও শৈলকূপার একাংশ কুষ্টিয়া শহরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে এই সড়ক। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জন্য সড়ক কেটে ফেলে পালিয়েছে ঠিকাদার। যোগাযোগ রক্ষার জন্য কাটা সড়কের মাটি দিয়ে জরাজীর্ণ বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। বৃষ্টিতে সড়ক ধ্বসে গেছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানযট
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পান্টি বাজার এলাকায় ডাকুয়া নদীর ওপর প্রায় ৮১ মিটার পিএসসি গার্ডার ব্রিজের অনুমোদন দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর। যার চুক্তিমূল্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি ৭২ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা। ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি করার অনুমোদন পায় কুষ্টিয়ার ত্রিমোহনীর ডন-রুমানা-জেভি। চুক্তি অনুয়ায়ী ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট কাজ শুরু হয়ে শেষ করা কথা রয়েছে চলতি বছরের ৩০ ডিসেম্বর।
স্থানীয় ভ্যান চালক সিরাজ হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে রাস্তা ভেঙে গেছে। গাড়িঘোড়া চলতে পারছে না। মানুষের খুব ভোগান্তি হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিৎ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ী ও পথচারীরা বলেন, কয়েকমাস হলো এখানে দুর্ভোগ। কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। ঈদের সময় ভিড় বেশি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানযট হচ্ছে। কিন্তু জনগণের ভোগান্তি দেখার লোক নেই।
পান্টি গোলাবাড়ি বাজারের সভাপতি মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ৩/৪ মাস পার হলো সড়ক কাঁটা হয়েছে। কিন্তু কাজের কোনো খোঁজ নেই। কিছু মালামাল ফেলে পালিয়েছে ঠিকাদার।
পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন বলেন, ঈদের দিন থেকে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদারের অবহেলায় সরকারের উন্নয়ন অম্লান হচ্ছে। জনগণের কাছে বদনামী হচ্ছে সরকার।
সেতু নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ফারুক আহমেদ মুঠোফোনে বলেন, বৃষ্টিতে বিকল্প সড়ক ধ্বসে গেছে। জনবল সঙ্কটে মেরামতে বিলম্ব হচ্ছে। দ্রুতই মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে। নির্মাণ এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। যার কারণে সেতু নির্মাণে দেরি হচ্ছে। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম বলেন, বিকল্প সড়ক মেরামতের জন্য ঠিকাদারকে বলা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ