Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বরিশালে হাসপাতালের টয়লেটের প্যানে সন্তান প্রসব, পাইপ ভেঙে উদ্ধার

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২২, ৭:৪৭ পিএম

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের শৌচাগারে এক মা সন্তান প্রসবের পরে নবজাতক সুয়ারেজের পাইপের ভেতরে চলে গেলে পিতা প্রায় দু ঘন্টা চেষ্টায় পাইপ ভেঙ্গে শিশু সন্তানকে উদ্ধার করেছেন। নবজাতক ও তার মা উভয়ই এখন সুস্থ রয়েছেন। এর আগে গতবছর ৬ জুন একই হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

নবজাতকের বাবা নেয়ামত উল্লাহ এবং মা শিল্পী বেগম পিরোজপুর জেলার নেসাবারবাদ উপজেলার গণমান শেখপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। নেয়ামত উল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, ‘আমার স্ত্রী পেটে বাচ্চা নড়াচড়া না করা এবং রক্তক্ষরণ হওয়ায় নেসারাবাদ হাসপাতালে ভর্তির পরে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকগন বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এখানে ভর্তির পরে চিকিৎসকগন অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার দুপুরে অপারেশনের ওষুধ কিনে আনতে বললে, আমি সেগুলো কিনে আনতে যাই। ওষুধ নিয়ে ফিরে এসে দেখি টয়লেটে অনেক লোকজন ভিড় । লোকজন আমাকে জানায় আমার স্ত্রী টয়লেটে গিয়ে প্যানে বসতেই সন্তান প্রসব হয়ে গেছে। হাসপাতালের একজন আমাকে টয়লেটের মধ্যে হাত দিতে বললে আমি পুরো হাত ঢুকিয়ে দিয়েও কিছু পাইনি। কান পেতে টয়লেটের পাইপের মধ্য থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। তাই কারো অপেক্ষা না করে দ্রুত দোতলায় নেমে টয়লেটের পাইপ ভেঙে আমার মেয়ে সন্তানকে উদ্ধার করি। আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া ও জীবিত উদ্ধার হয়েছে’। তিনি ‘তার সন্তান ও স্ত্রীর জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা’ করেছেন।

নবজাতকের মা শিল্পী বেগম বলেন, ‘প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে তিনি দ্রুত ওয়ার্ডের সাথে থাকা টয়লেটে গিয়ে প্যানে বসতেই নবজাতক টয়লেটে পড়ে যায়। হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর ডাক-চিৎকার দিলে তার স্বামী ও ওয়ার্ডের লোকজন নীচে নেমে পাইপ ভেঙ্গে তার শিশুকে উদ্ধার করেন’।

বিষয়টি শুনে সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সাহ শাজেদা বলেন, এ ধরনের ঘটনা হাসপাতালে এর আগেও ঘটেছে। এ কারণে আগেভাগে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল। তাছাড়া এ ধরনের রোগীদের জন্য পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা থাকা দরকার। যেখানে গর্ভপাত হলেও শিশুটির কোন ক্ষতি হবে না।

আর হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. তালুকদার মোহাম্মদ মুজিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়, এটা হতেই পারে, তবে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে। তিনি বলেন, নবজাতকটি অপরিপক্ব হলেও সে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে’। তবে হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডের বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজী হননি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন শেবাচিম পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘শিশুটিকে ওয়ার্ডের স্ক্যান বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ওই নবজাতক ও তার মা শিল্পী বেগম দুজনই সুস্থ আছেন’। তবে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসা সুবিধা বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালকের কোনো কোন মন্তব্য করেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ