Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নর্থ-সাউথের চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

হাতিয়ে নেয়া হয় ৩০০ কোটি টাকার বেশি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০২২, ১২:০৫ এএম

৩০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থার উপ-পরিচালক মো: ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারি বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান আজিমউদ্দিন, ট্রাস্টির সদস্য এম.এ. কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং ‘আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভলপার্স লি:-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মোহাম্মদ হিলালী।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হচ্ছে বোর্ড অব ট্রাস্টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের অনুমোদনকে পাস কাটিযে বোর্ড অব ট্রাস্টির কতিপয় সদস্য অনুমোদনের মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালযের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৭ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত হিসেবে অপরাধজনকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্তে¡ও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথম বিক্রেতাকে টাকা পরিশোধ করেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে ক্যাশ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। পরে নিজেরা এ এফডিআরের টাকা আত্মসাৎ করেন। আসামিরা সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেরা অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন। বেআইনি কার্যক্রম করার ক্ষেত্রে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে কমিশন বা ঘুষের আদান প্রদান করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, আত্মসাতের অর্থ হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দÐবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সনের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা তৎসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এফডিআর করার নামে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট, স্ত্রী-স্বজনদের চাকরি দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আসামিরা। সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়ি ক্রয় অবৈধভাবে বিলাসবহুল বাড়ি ব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিশ্ববিদ্যালয ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আজিম উদ্দিন ও এম এ কাশেম সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি লুটেপুটে খাচ্ছে। মূলত এ সিন্ডিকেটের কারণে নর্থ সাউথে অনিযম পরিণত হয়েছে নিয়মে। কম মূল্যের জমি বেশি দামে ক্রয়, ডেভেলপার কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ, শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, লাখ টাকা করে সিটিং অ্যালাউন্স গ্রহণ, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ অ্যালাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয তহবিলের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে কয়েক গুণ শিক্ষার্থী ভর্তি ইত্যাদি অভিযোগ রয়েছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ