বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন পারাপারের ফলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষ সড়ক ও নৌ পথে স্বস্তিতে ঘরে ফেরার পরে এখন কর্মস্থলমুখি জনস্রোতের অপেক্ষায় ফেরি ঘাট ও দক্ষিণাঞ্চলের নৌ টার্মিনালগুলো। যাত্রী ও যানবাহনের অপেক্ষায় বিভিন্ন সেক্টরে বিআইডব্লিউটিসি’র ফেরি বহর। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্বম বরিশাল নদী বন্দর সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব টার্মিনালে সরকারী বেসরকারী নৌযানের বহর যাত্রীর অপেক্ষায় থাকলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তেমন কেন ভীড় ছিলনা।
এবার ঈদের আগেই ৩দিন ছুটি ছাড়াও করোনা মহামারী সংকটে দু বছর বাদে নিকট জনের সাথে ঈদ করতে কিছুটা আগেভাগেই মানুষ ঘরমুখি হতে শুরু করায় দক্ষিণাঞ্চলমুখি মূল ভীড়ের সময়টিতে সড়ক ও নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কম ছিল। ফলে ঈদের আগে বিগত বছরগুলোর তুলনায় স্বস্তিতেই ঘরে ফিরেছেন মানুষ। যাত্রী সংকটে রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখি অনেক বাসের যাত্রা পর্যন্ত বাতিল করতে হয়েছে রোববার বিকেল থেকে। সোমবারেও ছিল একই চিত্র। এমনকি নৌপথেও যাত্রী সংকটে অনেক নৌযানের ডবল ট্রিপ বাতিল হয়েছে ঈদের আগের দুদিন ।
ঈদ পরবর্তি দুটি দিনও সড়ক ও নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের তেমন চাপ ছিলনা। এমনকি বৃহস্পতিবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরে সাড়ে ১২ হাজার যানবাহন পারাপারের পরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, মাওয়া সেক্টরের শিমুলিয়া এবং ভোলাÑলক্ষ্মীপুর সেক্টরে কোন যানবাহান অপক্ষেমান ছিলনা। তবে ৭টির মধ্যে দুটি ফেরি বিকল থাকায় চাঁদপুরÑশরিয়াতপুর সেক্টরে পৌনে ৬শ যানবাহন পারাপারের পরে ৬০টি অপক্ষেমান ছিল। বরিশাল ও ভোলার মধ্যবর্তি লাহারহাটÑভেদুরিয়া রুটেও দু শতাধীক যানবাহন পারাপার হলেও প্রায় ৫০টি গাড়ী অপেক্ষমান ছিল । এ সেক্টেরেও ৪টির মধ্যে দুটি ইউটিলিটি ফেরি বন্ধ রয়েছে।
অথচ শনিবার সকলে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রায় ২১ হাজার যানবাহন পারাপারের পরেও অপেক্ষমান ছিল ২ হাজার ১৬৯টি। রোববারও ১৯ হাজার ৫৪৬টি যানবাহন পারপারের পরে প্রায় ১৮শ অপেক্ষমান ছিল। কিন্তু রোববার দুপুরের পর থেকেই দৃশ্যপটের পরিবর্তন হতে শুরু করে। ফেরিঘাটগুলো ক্রমশ ফাঁকা হয়ে আসে। সোমবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় প্রায় ১৬ হাজার যানবাহন পারপারের পরে অপেক্ষমানের সংখ্যা মাত্র ৫৬২টিতে হ্রাস পায়। এসময়ে শুধু পাটুরিয়া সেক্টরেই সাড়ে ৯ হাজার যানবাহন পারাপারের পরে অপেক্ষমানের সংখ্যা শুণ্যের কোঠায় নেমে আসে। দুপুর ১২টাতেও একই চিত্র দেখা যায় পটুরিয়া ও মাওয়া সেক্টরে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় পাটুরিয়া সেক্টরে প্রায় ৭ হাজার ২শ যানবাহন পারাপার হলেও কোন অপক্ষেমান ছিলনা। এমনকি এ সেক্টরে যানবাহনের অভাবে ২টি ফেরি বন্ধ রাখতে হয়েছে। রাজধানী সহ পদ্মার পূর্বতীরের সাথে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সংক্ষিপ্ত সড়ক পথের মাওয়া সেক্টরে এসময়ে ৪ হাজার ২৭২টি যানবাহন পারপারের পরে ৫০টির মত গাড়ী অপক্ষেমান থাকলেও দুপুর ১২টায় এ সেক্টরের পদ্মার উভয় পাড়ের ৪টি ফেরি ঘাটই ছিল ফাঁকা। ফলে দেশের বৃহত্বম পাটুরিয়া ও মাওয়া সেক্টরে গাড়ীর অপক্ষোয় রয়েছে বিপুুল সংখ্যক ফেরি। বর্তমানে পাটুরিয়াতে রো-রো, কে-টাইপ, মিডিয়াম, স্মল ও ইউটিলিটি টাইপ-১ সহ ২৪টি এবং মাওয়া সেক্টরেও ১টি রো-রো সহ ১০টি ফেরি যানবাহনের অপেক্ষায়। তবে শুক্রবার সকাল থেকে গাড়ীর চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল।
এমনকি চট্টগ্রামÑবরিশালÑখুলনা/মোংলা মহাসড়কের ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের মধ্যবর্তি ২৮কিলোমিটার দীর্ঘ উপমহাদেশের সর্বাধীক দৈর্ঘ্যের মেঘনার ফেরি সেক্টরে ৪টি কে-টাইপ ফেরির সাহায্যে ২০২টি যানবাহন পারাপার হলেও কোন যানবাহন অপক্ষেমান ছিলনা। তবে চাঁদপুরÑশরিয়তপুর সেক্টর এবং লাহারহাটÑভেদুরিয়া সেক্টরে বিকল ৪টি ফেরি জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের তাগিদ দিয়েছেন যানবাহনের চালক ও মালিকগন। নচেত এ দুটি সেক্টরে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে যেত পাড়ে।
রাষ্ট্রীয় জাহাজ চলাচল প্রতিষ্ঠান,বিআইডব্লিউটিসি ২৬ এপ্রিল থেকে গত ১০ দিনে বহরের ৫৪টি মধ্যে ৪৯টি ফেরির সাহায্যে দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজারের বেশী যানবাহন পারাপার করেছে বলে জানা গেছে। এসময়ে উর্ধে ২ হাজার থেকে সোমবার সকালেই সর্বনি¤œ ৫৬২টি যানবাহন অপক্ষেমান থাকলেও গত কয়েকদিন ধরেই ঘাটগুলোতে কোন যানবাহনই অপক্ষেমান থাকছে না। সংস্থার কারিগড়ি, বানিজ্য ও মেরিন বিভাগের কর্মকর্তাÑকর্মচারীগন পদ্মা সেতু চালু হবার পূর্বের সম্ভবত শেষ ঈদের ভীড় সামাল দিতে এবার যুদ্ধকালীন তৎপড়তায় সর্বকালের রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন পারাপারে পরিস্থিতি সমাল দেয়া সম্ভব হয়েছে।
তবে শুক্রবার থেকেই কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের ¯্রােত শুরু হবে রাজধানী সহ কর্মস্থলের দিকে। বেশীরভাগই শণিবারের মধ্যে কর্মস্থলে ফিরতে চেষ্টা করবেন। কর্মস্থলমুখি সে ভিড় সামাল দেয়া কতটা সম্ভব হবে তা দেখার অপেক্ষায় পর্যবেক্ষক মহল।
অপরদিকে নৌপথেও বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানীমুখী নৌযানগুলোতে তেমন কোন ভিড় ছিলনা ঈদের দুদিন আগে থেকেই। তবে শুক্রবার থেকে ঢাকা ও চাঁদপুর হয়ে চট্টগ্রামুখি নৌযানগুলোতে ভীড় বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিআইডিব্লিউটিএর বন্দর কর্মকর্তাগন। সে লক্ষে এবার শুধু বরিশাল বন্দরেই অন্তত ২৭টি বেসরকারী নৌযান প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্মকর্তা। পটুয়াখালী ও ভোলা নদী বন্দর সহ দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানী মুখি অন্তত ৬০টি নৌযান প্রস্তুত রয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় বিআডব্লিউটসি ঈদের আগের ৩দিন এবং পরের ৩দিন দৈনিক সার্ভিস পরিচালনের পরে সব দায়িত্ব শেষ করছে। শণিবারের পরে সংস্থাটির দৈনিক সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে সরকারী-বেসরকারী প্রতিটি ফ্লাইটই স্বাভাবিক সময়ের তিনগুন ভাড়াও ঈদের আগে এবং পড়ে ফুল লোড নিয়ে ঢাকাÑবরিশালÑঢাকা আকাশপথে যাত্রী পরিবহন করছে। এমনকি বিমান ও নভো এয়ারের বিশেষ ফ্লাইটে দ্বিগুনেরও বেশী ভাড়ায় টিকেট মিলছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।