Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ায় সম্পত্তির লোভে প্রবাসী চাচাকে খুন করলো সন্ত্রাসী ভাতিজা, গ্রেফতার ৫

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০২২, ৬:৩৭ পিএম

বগুড়ায় ‘সম্পত্তির লোভে’ আব্দুর রাজ্জাক সরকার (৬৫) নামের এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ীকে তার ভাইয়ের ছেলের নেতৃত্বে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে একদল সন্ত্রাসী। ঘটনার সময় তিনি তার মৃত মায়ের কবর জিয়ারত করে ফিরছিলেন। হামলার সময় তাকে বাঁচাতে গ্রামবাসী এগিয়ে আসা ছাড়াও প্রাণ বাঁচাতে নিহত ব্যবসায়ী নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল থেকে গুলিও ছোড়েন, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তিনজন। তারা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর পুলিশ সেখান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও কয়েক রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার মহিষবাথান বাজারে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

নিহত আব্দুর রাজ্জাক সরকার মহিষবাথান গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ সরকারের ছেলে। তিনি আমেরিকার নাগরিকত্ব পেয়ে স্ত্রী- সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করতেন। তবে বগুড়া শহরে ও গ্রামের বাড়িতে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অনেক সম্পত্তি থাকায় বছরের অর্ধেক সময় বগুড়ায় বসবাস করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক মাস আগে আব্দুর রাজ্জাক সরকারের মা মারা গেছেন। ঈদের দিন রাতে তিনি বগুড়া শহর থেকে সিএনজি চালিত একটি অটোরিকশা ভাড়া করে মহিষবাথান গ্রামে মায়ের কবর জিয়ারতে যান। কবর জিয়ারত শেষে তিনি মহিষবাথান বাজারের একটি টি স্টলে বসে চা" পান করছিলেন।

এ সময় তার ভাতিজা সন্ত্রাসী ওমর খৈয়ম সরকার রোপণ ওরফে হাত কাটা রোপণ এর নেতৃত্বে অন্তত ১০ টি মোটরসাইকেলে একদল সন্ত্রাসী তাকে ঘিরে ধরে। এরপর একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুর রাজ্জাক সরকারকে কোপ দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে রাজ্জাক তার লাইসেন্স করা পিস্তল বের করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। সন্ত্রাসীরাও গুলি ছুড়তে ছুড়তে তাকে ধাওয়া করে। কিছু দূর দৌড়ে গিয়ে ত্রিমোহনী নামক স্থানে রাজ্জাক পড়ে যান। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মহিষবাথান গ্রামের বাসিন্দারা জানান, রোপণ সরকারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা রাজ্জাকের ওপর হামলা করলে গ্রামের কিছু লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। সেসময় সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে গ্রামবাসীর মধ্যে আব্দুল হান্নান নামের একজন গুলিবিদ্ধ হলে গ্রামের লোকজন পিছু হটে। পরে রাজ্জাককে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। গ্রামবাসীর ধারণা, আব্দুর রাজ্জাকের পরিবারের সবাই আমেরিকা থাকায় সম্পত্তি দখলের জন্য তার ভাতিজা রোপণের নেতৃত্বে তাকে খুন করা হয়েছে।

এদিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে আব্দুল হান্নান ছাড়াও জনি ও আল আমিন নামের দুই যুবক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে ভর্তি হয়েছেন।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল হক বলেন, সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ জনি ও আল আমিন সহ ৫জনকে আটক দেখানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল ও বেশ কিছু গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ