Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ঈদ আনন্দে মাতোয়ারা রাজশাহীর গাঁও গেরামের মানুষ

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০২২, ১২:৪৮ পিএম

করোনার বিষাদ কাটিয়ে ঈদ আনন্দে মতোয়ারা রাজশাহী অঞ্চলের গাঁও গেরাম। বিগত দুটি ঈদ ছিল ভয় স্বজন হারানোর শোক আর বিধি নিষেধের বেড়া। এবার এসব ভয় ডর ছিলনা। নাড়ীর টানে বাড়ি ফিরেছে মানুষ। সেই আগের দিনের মত করে মেতে ওঠে ঈদ আনন্দে।

এবার ঈদের ছুটিটা ছিল লম্বা। ফলে পথের বিড়ম্বনা ছিল কম। যখন যে পেরেছে পরিবার পরিজন নিয়ে চলে এসেছে। দীর্ঘদিন পর স্বজনদের কাছে পেয়ে গ্রামে থাকা মানুষগুলো উল্লসীত। ফলে এবারের ঈদ আনন্দটা ছিল অন্যরকমের। যদিও রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপাদহ মানুষকে বেশ খানিকটা কাহিল করে দিয়েছিল। কিন্তু ঈদের আগের দিন ভোর রাতে আল্লাহর রহমতের ভারী বর্ষন তপ্ত আর রুক্ষ আবহাওয়ায় এনে দেয় সিক্ততা ও সজীবতা। যদিও বর্ষন ঈদ জামাতে ছন্দপতন ঘটিয়েছে। দু’বছর পর ঈদগাহে নামাজ আদায়ের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও শেষ পর্যন্ত বর্ষনের কারনে মসজিদে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে। কি শহর কি গ্রাম সর্বত্র ছিল এমন অবস্থা। খরার পর বর্ষনে মানুষ ভীষন খুশী। যেন ঈদ আনন্দের সাথে এমন বর্ষনও ছিল আনন্দের। কারন খরায় ঝরে পড়ছিল আম, লিচু, আর কটাদিন পর পুরোদমে কাটা শুরু হবে বোরো ধান। বর্ষনে সজীবতা ফিরে এসেছে রুক্ষ প্রকৃতিতে। হঠাৎ করে বদলে গেছে আবহাওয়ার রুপ। ধুলোর আস্তরনে থাকা গাছ পালার পাতাগুলো ধুয়ে যেন আরো সবুজ হয়ে উঠেছে। অন্যান্য ফসলের ক্ষেতও প্রান পেয়েছে।

এবার কোভিড ভয় না থাকা আর লম্বা ছুটি পেয়ে চারিদিক থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছে মানুষ। কি শহর কি গ্রাম সর্বত্র মানুষ আর মানুষ। বিশেষ করে গাও গ্রাম যেন স্ব্জনদের কাছে পেয়ে প্রান ফিরে পেয়েছে। ঈদের দিন ভোররাতে বর্ষন হলেও আকাশের কালো মেঘের আড়ালে সূর্য হেসে ওঠে দুপুরে। বর্ষন জনিত কারনে ঘর বন্দী শহর থেকে আসা কিশোর কিশোরী তরুন তরুনীদের মাঝে আলোর ঝিলিক দেখা যায়। বড়দের পাশপাশি তারাও বেরিয়ে পড়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে। সবুজ ধান ক্ষেতের পাশে দাড়িয়ে গ্রামের নির্মল বাতাসে বুকভরে শ্বাস নিয়ে রিচার্জ করে নিয়েছে ফুসফুসটাকে । শহরে জীবন মানেতো যান্ত্রীকতায় ভরা আর বায়ুদুষনে দুষিত। পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় ঈদের দিন বিকেল থেকে দলবেধে নারী পুরুষসহ বিভিন্ন বয়েসী মানুষ ছুটেছে বিনোদন কেন্দ্রগুলোর দিকে। কি শহর কি গ্রাম সর্বত্র গড়ে উঠেছে বিনোদনকেন্দ্র আর পার্ক। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এখন শিশুপার্ক পিকনিক কর্নার গড়ে উঠেছে। গত দু’বছর এসব পার্ক আর বিনোদনকেন্দ্রে জঙ্গলে ভরে গিয়েছিল। এবার তা আবারো ঝকঝকে করে তোলা হয়েছে। এসব পার্কে রং বেরংয়ের ঈদের নতুন জামা পরে যুব তরুন তরুনীরা যেন প্রজাপতির মত উড়ে বেড়াচ্ছে। গ্রাম থেকে শহরের বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে ছুটে আসে মানুষ। ফলে শহর গ্রাম সব বিনোদন কেন্দ্রে রয়েছে উপচেপড়া ভিড়। ঈদের পরদিন বুধবার ভোররাতে আরো একদফা বর্ষন হয়েছে। ফলে আবহাওয়ায় এসেছে আরো খানিকটা শীতলতা। ভোররাতে বর্ষন হলেও সকালের সূর্যটা ছিল বেশ ঝলমলে।

ঈদ আনন্দের সাথে আরেকটি আনন্দ যোগ হয়েছে। তা হলো বিয়েসাদী। বিয়ের সানাই বাজতে শুরু করেছে। করোনার কারনে অনেক বিয়েসাদী আটকে ছিল। এবার সে বাধা নেই। আত্মীয় স্বজনরাও গ্রামে ফিরেছ্ ফেলে আগে থেকে দিনক্ষন ঠিক করে রাখা হয়েছিল। শুরু হয়েছে বিয়েসাদী। কদিন ধরেই এমনটা চলবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ