Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কলাপাড়ায় নদীর তীরে টোলের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

কলাপাড়া পৌরশহরের আন্ধারমানিক নদীর তীরে নৌ-যান থেকে পণ্য কিংবা মালামাল ওঠা-নামা করালেই এখন দিতে হচ্ছে নির্দিষ্ট অংকের টাকা। আর এ টাকা আদায় করা হচ্ছে ব্যবসায়ী ও গ্রাম-গঞ্জ থেকে শহরে হাটবাজার করতে আসা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। এমনকি পৌরসভার বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ব্যবহার না করে নদীর পাড়ে ব্যবসায়ীদের তৈরী নিজস্ব জেটি দিয়ে পণ্য ওঠা নামা করালেও ইজারাদার টোলের নামে টাকা আদায় করে নিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা বিষয়টি সমাধান নতুবা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালা মেরে বন্ধ করে দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে। তবে বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ব্যবহার না করলে টোল আদায় করা হচ্ছে না এমন দাবি কর্তৃপক্ষের। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন।

স্থানীয় ও বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রে জানা যায়, শহরের আন্ধারমানিক নদীর তীরে লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট, খেয়া ঘাট, ফেরী ঘাট ব্যবহার করে নৌযানগুলো মানুষ কিংবা পণ্য ওঠা নামা করালে সংশ্লিষ্ট ঘাট ইজারাদারকে সহনীয় টোল দিয়ে অভ্যস্ত ছিল সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। এবছর পৌরসভা থেকে বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন নামে ইজারা নেয় পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ ও তার সহযোগীরা। আর এ ইজারা নেয়া হয় যুবলীগ নেতা গাজী মশিউর রহমান মামুনের নামে। চলতি মাসের ১৩ তারিখ পৌর মেয়র ও নির্বাহী প্রকৌশলী বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশনের ইজারার টোলের মূল্য/হারে স্বাক্ষর করেন। এরপর বেপরোয়া হয়ে ওঠে ইজারাদাররা। পৌর সভার বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ব্যবহার না করলেও পৌরশহরের সীমানার মধ্যে নদী তীর ব্যবহার করে পণ্য ওঠা নামা করালে টোল আদায় শুরু করেন তারা। এমনকি ব্যবসায়ীদের কাছে পণ্যের ওজন ও বস্তা প্রতি টোল দাবি করেন তারা। তাদের এ ইজারা আদায়ের সীমানা নির্ধারিত না থাকায় ব্যবসায়ীদের কাছে তাদের টোল দাবির বিষয়টি অযৌক্তিক বলে বিবেচ্য হওয়ায় সংক্ষুব্ধ হয়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন তারা।

একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, কয়েকজনজন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশনের ইজারা নিয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের উপর আর্থিক নির্যাতন শুরু করেছে। বিষয়টি ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।

এবিষয়ে বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশনের ইজারাদার গাজী মশিউর রহমান মামুন বলেন, আমার নামে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকায় বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশনের এক বছরের ইজারা নেয় পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ। যা ভ্যাট, ট্যাক্স নিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ইজারা মূল্য পড়েছে। তার দাবি, বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ছাড়া অন্য কোথাও থেকে ইজারা আদায় করা হচ্ছে না।

পৌরসভার সচিব মো: হুমায়ুন কবির বলেন, বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ইজারা সংক্রান্ত কোন বিষয় অবগত নন, তবে নির্বাহী প্রকৌশলী সব জানেন বলে তিনি জানান।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ধ্রুব লাল দত্ত বলেন, এবছর পৌরসভা থেকে বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশনের ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারা মূল্য অনুযায়ী বোট ল্যান্ডিং ষ্টেশন ব্যবহারকারী নৌযানসমূহ থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

কলাপাড়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দীন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ সিকদার বলেন, একাধিক ব্যবসায়ী তাদের কাছে এ সংক্রান্ত অভিযোগ দিয়েছেন। ঈদের পর পৌর প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের মধ্যস্ততায় ব্যবসায়ী সমিতি এর সমাধান চায়। অন্যথায় তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যেতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ