রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
নাটোরের ক্ষতিগ্রস্ত ভূমির মালিক ও ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে দায়ের করা রিট নিষ্পত্তির আগেই শরু হতে যাচ্ছে নাটোরের চার লেনের প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ। এমনই অভিযোগ করেছেন প্রধান সড়কে অবস্থানকারী ভূমি মালিক মো. রুহুল আমিন, এরশাদ, আবু, বুলেট, শাহীনসহ অনেকেই।
তারা জানান, প্রধান সড়ক চার লেনে প্রশস্তকরণ করতে গিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ভবনের অংশবিশেষ সড়কের মধ্যে পড়ে যায়। সড়ক প্রশস্তকরণ করতে সব মিলিয়ে ৫৪.৬৭ শতক জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন দেখা দেয়। এ জন্য ৭১ জন ভূমিমালিক ও ৩১ জন ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। ক্ষতিপূরণের জন্য ভূমির মূল্য বাবদ ২ কোটি ৮৫ লাখ ও ব্যবসায়িক ক্ষতি বাবদ ২০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা প্রয়োজন পড়ে। প্রকল্প প্রস্তাবে এই টাকা বরাদ্দ না থাকায় নতুন করে মন্ত্রণালয়ে টাকার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। দীর্ঘদিনেও এ টাকার জোগান দিতে পারেনি সড়ক বিভাগ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ কেস (এল/এ ৮/১৯-২০) নি®পত্তি না হওয়ায় ভূমি মালিকদের মধ্যে ১০ জন মো. রুহুল আমীনকে আমমোক্তার নিয়োগ করে ভূমি অধিগ্রহণ মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন (৮১৫১/২১) করেন।
রিটে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও নাটোরের জেলা প্রশাসকসহ ৭ জনকে প্রতিপক্ষ করা হয়। প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট প্রতিপক্ষদের কারণ দর্শানোর আদেশ দেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানো হলেও আজঅবধি রিটটি নি®পত্তি হয়নি। এদিকে নাটোর জজ আদালতেও ভূমিমালিক ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের দাবিতে ১১টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় জেলা প্রশাসনকে মোকাবিলা বিবাদী করা হয়। এ মামলাগুলো এখনো নি®পত্তি হয়নি। এদিকে নাটোর শহরের মধ্যে দিয়ে প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণ এর জন্য অধিগ্রহণকৃত ভূমির ন্যায্যমূল্যের দাবি জানিয়েছেন ভূমি হারানো মালিকরা।
ভূমি মালিকরা জানান, ২০১৭ সালের ভূমি অধিগ্রহণ আইনের তোয়াক্কায় করা হচ্ছে না। ৮ ধারায় নোটিশ প্রদানের পর ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদানের কথা বলা থাকলেও এক বছর পর কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ীকে চেক প্রদান করে প্রকল্পটি চলমান রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গেজেটে ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসকের অনুকূলে টাকা প্রদানে ব্যর্থ হলে অধিগ্রহণের সকল কার্যক্রম বাতিলের কথা বলা হলেও তা মানা হচ্ছে না। জমির মালিকগণ আবেদন করেন প্রকৃত বাজার মূল্য নির্ধারণে সরকারের প্রতিনিধির পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রকে অন্তর্ভুক্ত করে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে স¤পত্তির প্রকৃত বাজার মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে নাটোর ছাড়া অন্যান্য জেলায় ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণের যে দৃষ্টান্ত রয়েছে সেগুলো অনুসরণেরও দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিক ও রিট আবেদনকারী আমমোক্তার মো. রুহুল আমিন জানান, যেহেতু আইন অনুযায়ী ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে অধিগ্রহনকৃত ভূমির মূল্য পরিশোধ করতে জেলা প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণে অধিগ্রহনের সকল কার্যক্রম বাতিল বলেই ধরে নেয়া যায়। এখন যেটা প্রশাসন করতে যাচ্ছে তা আইন অনুযায়ীই অবৈধ হবে বলে তিনি জানান।
জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শওকত মেহেদী বলেন, ভূমি অধিগ্রহণে আমাদের কোনো অবহেলা ছিল না। প্রত্যাশিত সংস্থা (সওজ) সময়মতো টাকা ছাড় না করার কারণে মাত্র সাত দিন দেরি হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নাটোরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, আমরা আইন অনুযায়ীই কার্যক্রম চালাচ্ছি। রিটের নিষ্পত্তি না হলেও উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে কোন বাধা নেই।
উল্লেখ্য, নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের পূর্ব বাইপাস থেকে পশ্চিম বাইপাস পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার সড়ক ৪৮ ফুট প্রশস্তকরণ প্রকল্পের জন্য ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। একনেক ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলে ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।