Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেতন ও বোনাসের দাবিতে মির্জাপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ

মহাসড়ক অবরোধ : শ্রমিক পুলিশ সংঘর্ষে ওসিসহ আহত ৬০

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদাদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৩ এএম

মির্জাপুরের গোড়াই শিল্পাঞ্চলের নাহিদ কটন মিলে পুর্নমাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছে। এ ঘটনায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মির্জাপুর থানার ওসি মো. আলম চাঁদ ও দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আইয়ূব খানসহ ১০ পুলিশ সদস্য এবং কমপক্ষে ৫০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দেড় ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। বিকেলে পৌনে ছয়টা দিকে স্থানীয় এমপি খান আহমেদ শুভ একান্ত সহকারী ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নাহিদ কটন মিলের শ্রমিকরা জানান, দুপুর দুইটার দিকে তাদের বেতন ও ঈদ বোনাস দেয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ। এ সময় তাদের অর্ধেক মাসের বেতন ও অর্ধেক বোনাস দেয় মিল কর্তৃপক্ষ। কিন্ত শ্রমিকরা পূর্ণ মাসের বেতন ও বোনাসের দাবি করেন। কিন্ত মিল কর্তৃপক্ষ তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে শ্রমিক ও মিল কর্তৃপক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। এতে শ্রমিকরা মিল থেকে বেরিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে মির্জাপুর থানা ও গোড়াই হাইওয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সড়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্ত তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক থেকে না সরার ঘোষণা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ করে শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চার্জ ও রাবার বুলেট পুলিশ নিক্ষেপ করে। ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে শ্রমিক ও পুলিশ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৬০জন আহত হয়।

খবর পেয়ে বিকেলে পৌনে ছয়টার দিকে টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের এমপি খান আহমেদ শুভর একান্ত সহকারী আসিফ অনিক মিল গেটে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এমপি নায্য দাবির সাথে একমত প্রকাশ করেছেন। তাদের পক্ষে মিল মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে তিনি কারখানায় আসতে চাইছেন। কিন্ত মহাসড়ক অবরোধ থাকায় এমপি মিলে আসতে পারছেন না। শ্রমিকদের মহাসড়কের অবরোধ ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান। পরে শ্রমিকরা তার কথায় মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে এমপি মিলে গিয়ে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে শ্রমিকদের নায্য দাবি মেনে নেয়ার পরামর্শ দেন। আহত পুলিশ ও শ্রমিকদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে কারখানাটির সামনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ওসি আলম চাঁদ বলেন, পুর্নমাসের বেতন ও ঈদ বোনাস নাহিদ কটন মিলের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছিল। শ্রমিকদের বুঝিয়ে বললে তারা সড়ক ছেড়ে দিলেও কিছু অতিউৎসাহী শ্রমিক ইটপাটকেল ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিপেটাসহ শটগানের গুলি ছুড়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

নাহিদ কটন মিলের জেনারেল ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের ঈদ বোনাস তিন দিন আগেই দেয়া হয়েছে। তাদের দাবিকৃত চলতি মাসের পূর্নমাসের বেতন দিয়ে দেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ