Inqilab Logo

সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী

ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের চরম ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৯ এএম

ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে বেড়ে চলছে যানজট। ঈদ ও রমজানকে কেন্দ্র করে রাজধানীর যানজট আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। রোজা রেখে অসহনীয় গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে পড়ে নাকাল নগরবাসী। নগরীর লোকসংখ্যা ও যানবাহনের তুলনায় বাড়েনি সড়কের ও এর পরিধি। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছানোর বৃথা চেষ্টা নগরবাসীর।

ঢাকায় দুই সিটি করপোরেশনের মোট সড়কের পরিমাণ ২ হাজার ৭০০কিলোমিটারেরও বেশি। বুয়েটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন যানজটে আটকে থেকে নষ্ট হচ্ছে ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা। টাকার অঙ্কে বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৭ হাজার কোটি। ব্যক্তিগত গাড়ি কমিয়ে গণপরিবহন বাড়ালে ঢাকার যানজট কিছুটা কমবে বলে মনে করেন অনেকে। পরিবহন শ্রমিক থেকে যাত্রী, সবাই এ অসহনীয় যানজট থেকে মুক্তি পেতে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ চায়।

টঙ্গী সংবাদদাতা জানান, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ে অসংখ্য যানবাহনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে ক্রমেই ব্যস্ত করে তুলেছে। মাঝে-মধ্যে মহাসড়কে পণ্য বোঝাই ট্রাক ও অন্যান্য গাড়ি অচল বা উল্টে গিয়ে সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হয়। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে মহাসড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা অস্থায়ী বাজার। ভ্যান গাড়িতে তৈরি পোশাক থেকে শুরু করে কাচা বাজার সবকিছুর পসরা সাজিয়ে অবৈধ বাজার গড়ে ওঠার দরুন টঙ্গী আব্দুল্লাহপুর, চেরাগ আলী মার্কেট, কলেজ গেট, বোর্ড বাজার ও চান্দনা চৌরাস্তায় সারাদিনই তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এছাড়া ইজিবাইক ও অটোরিকশার কারণে যানজটকে হঠাৎ অস্বাভাবিক করে তুলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী পর্যন্ত তুলনামূলক যানজট কম। টঙ্গীর কলেজ গেট ও মিলগেট এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজের জন্য কোথাও কোথাও সড়ক সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে টঙ্গী আসা যাত্রী রুবেল হোসেন জানান, চান্দনা চৌরাস্তায় ও ভোগরা বাইপাস সড়কে সামান্য যানজট পেয়েছি। রাস্তায় আর কোথাও কোন যানজট নেই। তবে

আজ বৃহস্পতিবার থেকে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়লে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজটের আশঙ্কা করছেন চালক ও যাত্রীরা।
সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জনান, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ ততই বাড়ছে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের গড়ে উঠা অস্থায়ী বাস কাউন্টাগুলোতে অগ্রিম টিকেট বিক্রি বাড়ছে। যাত্রীদের ও পরিবহনের চাপ গতকয়েক দিনের তুলায় দিন দিন বাড়ছে। ফলে থেমে থেমে অস্থায়ী বাস স্টপিজের সামনে এবং মহাসড়কের সিগ্যানালগুলোতে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হচ্ছে না।

গতকাল সকাল সরেজমিনের দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জের সাইন বোর্ড থেকে মেঘনা পর্যন্ত মোট ৭টি পয়েন্টে থেমে থেমে যানজট সৃষ্ট্ িহচ্ছে। সাইনবোর্ড, সানারপাড়, চিটাগাংরোড, কাঁচপুর, মদনপুর, মুগড়াপাড়া ও মেঘনা টোলপ্লাজার সামনের থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হচ্ছেনা। তবে মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে সিগ্যানালের কারণে একটু বেশি যানজাট সৃষ্টি হচ্ছে।

যানজটমুক্ত রাখতে হাইওয়ে পুলিশ বেশি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যেমন ওয়ান বাই ওয়ান রোডের বেশ কিছু জায়গা গাড়ি ঘুরানোর জন্য কাটা ছিল। ঈদ উপলক্ষ্যে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয় সেই জন্য হাইওয়ে পুলিশ অনেক জাগায় সেইসব কাটাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ এসব কাটা জাগায় গাড়ি ঘুরালে যানজটের সৃষ্টি হয়। হানিফ পরিবহনের যাত্রী সোহাগ জানায়, আমি ঢাকা থেকে চিটাগাং যাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জে আসতে বেশি সময় লাগিনি। সিগ্যানালে একটু যানজট ছিল তবে সহনীয়। স্টার লাইন পরিবহনের ড্রাইভার মানিক বলেন, ফেনী থেকে ঢাকা আসছে বেশ কয়েক জায়গায় যানজটের কবলে পড়েছি তবে বেশিক্ষণ বসে থাকতে হয়নি।

এব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশের ঢাকা চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জ অংশের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত সুত্রধর ইনকিলাবকে জানান, আজ থেকে (বুধবার) ঈদ উপলক্ষে একটু যাত্রীচাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে আমরা ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৮টি ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কে ৭টি ট্রাফিক টিম যানজট নিরসনে কাজ করছে। তাছাড়া ৩টি মোবাইল টিম ও ৩টি মোটরসাইকেলে টিম কাজ করছে। কোথাও কোন যানজটের খবর পেলে তাৎক্ষনিক তারা ছুটে যাবে সেখানে। ঈদের বাড়ি ফেরা মানুষ যেন যানজটমুক্ত নিরাপদে ফিরতে পারে সেই জন্য হাইওয়ে পুলিশ দিনরাত কাজ করছে। এখন পর্যন্ত মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আশা করছি কোন সমস্যা এবার হবে না। ###



 

Show all comments
  • Fahim Bijoy ২৮ এপ্রিল, ২০২২, ১২:৫৯ এএম says : 0
    রাজধানীর এ যানজট কবে যে শেষ হবে একমাত্র আল্লাহই জানে। মাঝে মধ্যে মনে হয় এ দেশের কোনো অভিভাবক নেই। রাজধানী থেকে রিকশা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এছাড়া রাস্তার বেশিরভাগ অংশ থাকে ফুটপাতের দখলে। এ ফুটপাত দ্রুত অপসারণ করলে এ থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যেতো
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ