পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719387402](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিদিনই ফের করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এতে বাংলাদেশেও করোনার চতুর্থ ঢেউ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে নমুনা পরীক্ষায় ভারতে দৈনিক আড়াই হাজারের বেশি শনাক্ত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমণ সামান্য কমলেও আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৮৩ জন। ভারতের বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, আগামী জুন-জুলাইয়ে আছড়ে পড়বে করোনার চতুর্থ ঢেউ। ২৪ ঘণ্টায় আগের মতোই শনাক্তের শীর্ষে রাজধানী দিল্লী। গত কিছুদিন দিল্লি, গাজিয়াবাদ ও নয়ডা শহরে শিক্ষার্থীদের করোনা ধরা পড়ায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই’র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দিল্লি ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় গত ১৫ দিনে কারও সামাজিক বলয়ে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি থাকার সংখ্যা ৫০০ শতাংশ বেড়েছে। এমন এক সময় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, যখন প্রতিটি রাজ্যে করোনা সংক্রান্ত বেশিরভাগ বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করা হয়েছে, বিশেষ করে যাতায়াতের ক্ষেত্রে। এমনকি অনেক রাজ্যে জনসম্মুখে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতাও তুলে নেয়া হয়েছে। যদিও সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক পরে থাকার সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে ভারতে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরন ‘এক্সই’ সংক্রমণ প্রবণ। আর ভারতে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই টেউ আছড়ে পড়ে। এ কারণে বাংলাদেশেও বাড়ছে উদ্বেগ। সামনে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ ঘিরে সেই উৎকণ্ঠা আরও দানা বেঁধেছে। ফলে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর আগের ধারাবাহিকতায় ভারতে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ে। এক্ষেত্রে ভারতে ছড়ানোর দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে বাংলাদেশেও সংক্রমণ ছড়ায়। তাই এখনই সতর্ক থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। বিশেষ করে সব বন্দরগুলোতে স্ক্রিনিং জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন।
অবশ্য বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ভারতে নতুন করে সংক্রমণ বাড়ছে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যাতায়াত আছে এবং ঈদে তা আরও বাড়ে। পাশাপাশি ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে একটি বড় অংশ বিদেশে ভ্রমণে যাবেন। এ থেকেও করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। একই সঙ্গে ঈদে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন নগরী থেকে গ্রামমুখী হবে লাখ লাখ মানুষ। সবকিছু মিলিয়ে ঈদের পরপরই করোনার ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা করছেন দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করায় প্রতিবেশী দেশটিতে ভ্রমণকারীদের প্রতি নজর দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন। সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আছে। মৃত্যুও শূন্যের কোঠায়। এটি আমাদের ধরে রাখতে হবে। তাই সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে। সংক্রমণ যেন আবার না বাড়ে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইনকিলাবকে বলেছেন, ভারতে ফের সংক্রমণ বাড়ায় সব বন্দরের প্রবেশ পথে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্ক্রিনিংসহ কঠোর মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ভারতে করোনার সংক্রমণ বাড়ার বিষয়টি উদ্বেগের। দেশটির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, ভ্রমণসহ নানা কারণে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে অন্যান্য দেশের তুলনায় যাতায়াত অনেক বেশি। ফলে সে দেশে সংক্রমণ বাড়লে তা বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়বে।
করোনার আগের বিভিন্ন ঢেউয়ের বাস্তবতা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ভারতে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও বাড়ে। প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং যাতায়াতের কারণে সহজেই সংক্রমণ প্রবণ এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে। ঈদ সামনে রেখে এরই মধ্যে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ ভারতের ভিসা নিয়েছেন। ভারতে গত ১৮ এপ্রিল এক দিনে সংক্রমণ বেড়েছে ৯০ শতাংশ। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর আগে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চীনে বাড়ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার। ইউরোপের দেশগুলোতেও নতুন করে হানা দিচ্ছে করোনা।
বাংলাদেশে সংক্রমণ নিম্নমুখী হলেও পার্শ্ববর্তী দেশসহ এশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। তাই জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি উদ্বেগ প্রকাশ করে এখনই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। পরামর্শক কমিটি দেশের সব বন্দরের প্রবেশ পথে স্ক্রিনিং জোরদার, শতভাগ সঠিকভাবে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে কমিটি। এছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাজার ও কেনাকাটা এবং ঘরমুখী মানুষের যাতায়াতের সময় মাস্ক পরা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে তারাবির নামাজ ও ঈদ জামাতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা এবং জিনোম সিকোয়েন্সিং ও সার্ভেলিয়েন্স জোরদারের পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইমেরিটাস প্রফেসর ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, আগের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, ভারতে সংক্রমণ ছড়ানোর দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ে। ভারতে শনাক্ত হওয়া নতুন ধরন এক্সই সংক্রমণ প্রবণ। আর তাই সবাইকে বিশেষভাবে সতর্ক হতে হবে। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সামনে ঈদ। তাই ঈদে গ্রামে গেলেও যাতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। মনে রাখতে হবে, টিকা শতভাগ সুরক্ষা দেবে না। টিকা নেয়ার পরও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে অবশ্যই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।