রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
পাখির কিচির-মিচির সকালে ঘুম থেকে জেগে ওঠা আর হরেক রকম পশু-পাখি ও বন্য প্রাণীর ভয়ংকর শব্দ এক আনন্দময় ঘুমিয়ে পড়া মানুষ এখন বর্তমানে আর সেই আগের মতো রোমাঞ্চকর অনুভূতি শুনতে পায় না। স্বাধীনতার দীর্ঘ কয়েক বছরের ব্যবধানে গহীন অরণ্য মন্ডিত ভয়ঙ্কর বন্যপ্রাণী জন্য ও নিয়ন্ত্রিত এলাকা হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম পাহাড়গুলো বর্তমানে পরিণত হয়েছে বিরানি ভুমিতে।
এই অবস্থা বন্ধ ও যথাযথ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে দ্রুত কয়েক বছরের মধ্যে এই পাহাড় মরুভূমিতে পরিণত হবে বলে মনে করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। হাটহাজারীর উল্লেখযোগ্য ভূখণ্ড জুড়ে গহীন জঙ্গল পাহাড়ি এলাকা। বর্তমানে দিনকে দিন ধ্বংস হচ্ছে বনাঞ্চল কাটা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
কাঁটা হচ্ছে অসাধু লোকের ছোবলে পাহাড়, আর পাহাড়ের মাটি দিয়ে ধানি জমিসহ বাউন্ডারি ওয়াল, পাশাপাশি কমে যাচ্ছে পাহাড়ের উর্বরতা শক্তি, সব মিলিয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হচ্ছে এই পাহাড়ি জনপদ। এককালে এই পাহাড়ে দেখা যেত হরিণ, বাঘ, হাতি, বনসাই, ভাল্লুক, কুকুর, ময়না, টিয়া, তোতা, এবং বিভিন্ন প্রজাতির সাপসহ বহু প্রজাতির আরো অনেক নাম-না-জানা পশুপাখি। পাহাড়ে পশুপাখি হারিয়ে যাওয়ার কারণ হলো পাহাড় থেকে গাছ কেটে নেওয়ার ও নির্বিচারে পাহাড় কাটার কারণে ছোট-বড় সব প্রজাতির গাছপালাসহ বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে এমনকি বৃষ্টির সময় পাহাড়ি পানির সাথে অজগর সাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী এসে লোকালয়ে আটকা পড়ার নজির রয়েছে। পাশাপাশি গাছ চোরা কারবারিদের অর্থ উপার্জনের কাঁচামাল হিসেবে নির্বিচারে কাঠ কাটায় হাটহাজারীর পশ্চিম পাহাড়গুলো বনজ সম্পদ ও সরকারের কোনো দায়িত্বশীল না থাকার কারণে এই অবস্থা। গাছে গাছে ফুল ফোটে নতুন ফললাভ করার সময় শীত মৌসুমে গাছপালা কেটে উজাড়। বন বিভাগ নীরব ভূমিকায় থাকার কারণে অসাধু ব্যক্তিরা একের পর এক নির্যাতন চালিয়ে আসছে পাহাড় ও পাহাড় এর গাছপালাগুলোর উপর। হাটহাজারীর পশ্চিমের পাহাড়ি অঞ্চলের গাছ ও পাহাড় কেটে পাহাড় গুলোকে একেবারে ন্যাড়া করে দিয়েছে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ফলে পাহাড়ে বিচরণ করা বিভিন্ন প্রজাতির বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। যদি প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পাহড়ের অবস্থা খুবই খারাপ দিকে এগুতে থাকবে। উপজেলার ছারিয়া, সরকার হাট, ফরহাদাবাদ ও চৌধুরীহাট ঠান্ডছড়ি এলাকায় কাটছে পাহাড়, আর পাহাড়ি মাটি দিয়ে ভরাট করছে ধানি জমি, স্কেবেটার দিয়ে পাহাড় কেটে বানানো হচ্ছে বাড়ি ভিটা উত্তর-পশ্চিম হাটহাজারীর পাহাড়ি অঞ্চল থেকে প্রতিদিন অর্থ লোভি প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গাছ ও পাহাড় কেটে পাহাড় কে ধ্বংস করছে, পাশাপাশি পাহাড়ি জীববৈচিত্র্য প্রাণীর জীবন নাশও করছে। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তাদের নজরদারি করার জন্য পরিবেশবাদীরা দাবি তুলে। এদিকে গত তিন বছরে সরকারি-বেসরকারি এক জরিপে জানা গেছে মেছোবাঘসহ আনুমানিক ২৪ থেকে ২৫টি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও বিপন্ন প্রজাতির সাপ বিভিন্ন এলাকায় লোকালয় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলম জানান, আমরা এ পর্যন্ত জমির টপসয়েল মাটি কাটার বেশ কয়েকটি স্কেবেটার জব্দ করি এবং তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে, তবে পাহাড় কাটার খবর গেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এই ব্যাপারে বন কর্মকর্তা মোঃ ফজলুল কাদের জানান, অসাধু কিছু ব্যক্তি রয়েছে রাতের বেলায় গাছ কেটে পাচার করলেও তবে আমরা সবাই এ পর্যন্ত বেশ কিছু কাঠ ও গাড়িসহ আটক করতে সক্ষম হয়েছি এবং আমাদের অভিযান রীতিমতো চলবে।
এদিকে হাটহাজারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মামুন সিকদার জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঢালু জমি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট নির্মাণের কারণে বর্তমানে কৃষিজমি সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। এই ব্যাপারে সকলে পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।