Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাম্পার ফলনেও বিপাকে পেঁয়াজ চাষিরা

মাগুরা থেকে সাইদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৩ এএম

মাগুরার শ্রীপুরে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। পরিবেশ অনুকুল এবং চাষিদের যথাযথ পরির্চযায় এ বাম্পার ফলন সম্ভব হয়েছে। উৎপাদনে খুশী হলেও বিক্রয়মূল্য চরমভাবে পড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে শ্রীপুর উপজেলার পেঁয়াজ চাষিরা। লাভ দূরে থাক চাষাবাদের খরচের টাকা তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চাষিদের। গেল কয়েক মৌসুম পেঁয়াজের ভালো দাম পেলেও চলতি মৌসুমে বিপাকে পড়েছে পেঁয়াজ চাষিরা।
উপজেলার একাধিক পেঁয়াজ চাষিদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, জমি তৈরি, বীজ বোপণ, সার, কীটনাশক, পানি ও শ্রমিকের খরচ মিলিয়ে প্রতি শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ আবাদে খরচ হয় ১২ থেকে ১৩শ’ টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। যে কারণে মুনাফার আশা ছেড়ে দিয়ে খরচের টাকা তুলতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তররের পক্ষ থেকে জানান হয়, চলতি মৌসুমে শ্রীপুরে ৩১৫ হেক্টর জমিতে আগাম মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়। যার হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে ১৫ মেট্রিকটন। মোট ফলন ৬৭২৫ মেট্রিকটন। এ মৌসুমে আগাম ১৬ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়। এছাড়া ৬ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে হানি পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। যার হেক্টর প্রতি গড় ফলন ১৩ মেট্রিকটন। উপজেলায় লাল তীর কিং, লাল তীর হাইব্রিড ও বারি পেঁয়াজ-১ আবাদ হয়েছে। সিংহভাগ জমিতে লাল তীর কিং জাতের পেঁয়াজ আবাদ করেছে চাষিরা। গত বছর ৫ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এবার ও লক্ষমাত্রা ধরা হয় একই। । তবে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৮০ হেক্টর বেশী জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। চাহিদানুযায়ী বাজার দর না থাকায় বিপাকে পড়েছে পেঁয়াজ চাষিরা। অর্থাভাবে অধিকাংশ কৃষক বাজারে নতুন পেঁয়াজ বিক্রি করলেও উন্নত বাজার দরের আশায় নিজ বাড়িতে পেঁয়াজ সংরক্ষণে রাখছে কেউ কেউ।
উপজেলার মালদাহ গ্রামের চাষি সুধির কুমার বিশ্বাস বলেন, চলতি মৌসুমে ১৭০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন তিনি। এতে তার খরচ হয়েছে পরিশ্রম বাদে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু যে পেঁয়াজ পাবে তা বিক্রি করলে ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকার বেশি পাওয়া যাবেনা।
উপজেলার সারঙ্গদিয়া গ্রামের চাষি শাখাওয়াত খোন্দকার বলেন, পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হলেও লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করছে হচ্ছে। এক মণ পেঁয়াজের ফলন পেতে ৯’শ থেকে এক হাজার টাকা খরচ হয়। এরপর বাজারজাত করণের খরচও আছে। বাজারে এখন ৬’শ থেকে সাড়ে ৬›শ টাকা মণে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। যে কারণে লোকসান গুনতে হচ্ছে পেঁয়াজ চাষিদের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। অনূকুল আবহাওয়ায় এ বছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিসের লোকজন নিয়মিত পেঁয়াজ চাষিদের পরামর্শ ও তদারকি অব্যাহত রাখায় পেঁয়াজের উৎপাদন ভাল হয়েছে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ