বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঈদ-উল-ফিতরের ভিড়কে পুঁজি করে রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে বেসরকারী পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে নজিরবিহীন নৈরাজ্য চলছে আকাশ পরিবহন সেক্টরে। সরকারি নূন্যতম নজরদারির অভাবসহ সীমাহীন উদাশীনতায় এখন ঢাকা-বরিশাল ৬১ এ্যারোনটিক্যাল মাইলের আকাশ পথের ভাড়া দেড় হাজার কিলোমিটারের ঢাকা-ব্যাংককের প্রায় দেড় গুন। নৌ ও সড়ক পথেও নৈরাজ্য চললেও এসব কিছু দেখার কেউ আছে বলে মনে করছেন না যাত্রী সাধারণ। এমনকি সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে রাষ্ট্রীয় পরিবহন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নজিরবিহীন উদাসীনতা ও ব্যর্থতার কারণেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যাত্রীদের পকেট কাটছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
করোনা মহামারীর দু’বছরের ক্রান্তিকাল কাটিয়ে এবার নিকট জনের সাথে ঈদ করতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ দক্ষিণাঞ্চলে ফিরবে। এ সুযোগকে পুঁজি করেই বেসরকারি পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। মাস তিনেক আগে ডিজেলের ২৩% মূল্য বৃদ্ধির সুযোগে বেসরকারি নৌযানের ডেকে প্রায় ৪০% এবং কেবিনে ২৫-৩০% যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। এখন ঈদকে সামনে রেখে যে যেমন খুশি ভাড়া আদায় করছে। এক বছর আগে ঢাকা-বরিশাল রুটে ডেক শ্রেণিতে ২শ’ টাকার স্থলে এখন কোনো কোনো নৌযানে ৪শ’ টাকাও আদায় করছে। প্রথম শ্রেণির একক শয্যার ৯শ’ টাকার কেবিন এখন দেড় হাজার টাকা, দ্বৈত শয্যার ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকার কেবিনে ২ হাজার ৮শ’ টাকা আদায় করা হচ্ছে। বেসরকারী নৌযানগুলোতে নানা মানের ভিআইপি কক্ষের ভাড়া ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
ঈদ উপলক্ষে ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা নৌপথে প্রায় ২৭টি সরকারি-বেসরকারি নৌযানে যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যে প্রস্তুত রয়েছে। এমনকি ভিড় সামাল দিতে বেসরকারি নৌযানগুলো ঈদের আগের ৩ দিন ও পড়ের অন্তত ৪ দিন ডবল ট্রিপেও যাত্রী পরিবহনের প্রস্তুতি নিলেও রাষ্ট্রীয় বিআইডব্লিউটিসি ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য স্বাভাবিক সময়ের সিডিউলও রক্ষা করতে পারেছে না। সড়ক পথেও বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও উত্তরাঞ্চল এবং পশ্চিমের খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যে বেসরকারি পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো খেয়াল খুশিমত ভাড়া বৃদ্ধি করেই প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে।
তবে চরম নৈরাজ্য চলছে আকাশ পথে। ঈদকে পুঁজি করে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থাও ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। ঢাকা-বরিশাল সেক্টরে বর্তমানে বেসরকারি ইউএস বাংলার দুটি ছাড়াও রাষ্ট্রীয় বিমান বাংলাদেশ ও নভো এয়ারের আরো দুটি করে ফ্লাইট চলছে। ঈদকে সামনে রেখে ইউএস বাংলা ফ্লাইট না বাড়ালেও ৪ হাজার টাকার স্থলে ১০ হাজার ৮শ’ টাকায়ও টিকেট বিক্রি করছে। অপর বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভো এয়ার একটির পরিবর্তে দুটি করে ফ্লাইট চালাবে ২৪ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত। তবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮শ’ থেকে ৮ হাজার ৪শ’ টাকা।
আর এ অবস্থায় জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার নিয়মিত ফ্লাইটের অতিরিক্ত ২৯ এপ্রিল ও ১ মে এবং ঈদের পড়ে ৬ ও ৭ মে দুটি করে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনের ঘোষণা দিয়েছে সরকারি এ আকাশ পরিবহন সংস্থা। কিন্তু সেখানেও ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে স্বাভাবিক সাড়ে ৩ হাজার টাকার স্থলে সাড়ে ৬ হাজার টাকা থেকে ৭ হাজার ৪শ’ টাকা। ফলে আসন্ন ঈদে নিকটজনের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা থাকছে না। বেসরকারি সংস্থাগুলোর সাথে সমান তালেই সরকারি এয়ারলাইন্সও ঈদের ভিড়কে পুঁজি করে ভাড়া বৃদ্ধি করেছে।
বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি দুটি এয়ারলাইন্সের স্থানীয় অফিসের মতো বিমানের বরিশাল বিক্রয় অফিসের ব্যবস্থাপকও কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি। তার মতে, এসব বিষয়ে বিমান-এর সদর দফতরই সবকিছু বলতে পারবেন। তবে বেসরকারি একটি এয়ারলাইন্সের জনৈক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যাত্রীদের মধ্যে যখন টিকেটের চাহিদা বেশি থাকে তখনই আকাশ পথে ভাড়াও বাড়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।