Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী শিবু অপহরণের ঘটনার মূল নায়ক ল্যাংড়া মামুন তিন সহযোগীসহ গ্রেফতার

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০২২, ৮:৫২ পিএম

পটুয়াখালীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসকে অপহরণের পর ২০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবীর ঘটনার মাস্টার মাইন্ড ল্যাংড়া মামুন সহ ৩ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।পটুয়াখালী জেলা পুলিশের রিকুইজিশনের ভিক্তিতে গতরাতে ডিএমপি ডিবি পুলিশ ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পটুয়াখালী পুলিশের ফেসবুক পেইজে নিশ্চিত করা হয়েছে।এ সময় এ অপহরণ কাজে জড়িত তার অপর তিন পলাতক সহযোগী পিচ্চিরানা,জসিমউদ্দিনও আশিকুর রহমানকে মুক্তিপণ আদায়ে ব্যবহ্রত প্রাইভেট কার ,মোবাইল ফোন, গামছা এবং ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

এদিকে এ অপহরনের ঘটনায় জড়িত পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান পারভেজ সহ শামিম আহমেদ, আক্তারুজ্জামান সুমন, মো. মিজানুর রহমান সাবু গাজী, মো. বিল্লাল ও সাব্বির হোসেন জুম্মানকে গত ১৬ এপ্রিল পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়াও গত ১৭ এপ্রিল ঢাকার উত্তরা থেকে জসিম মৃধা নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। জসিম মৃধা ১৮ এপ্রিল পটুয়াখালীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকোরক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।

পটুয়াখালী পুলিশ সুপার সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মারামারি, মাদক এবং অপহরণের একাধিক মামলা রয়েছে। অপহরন ঘটনার মূল হোতা ল্যাংড়া মামুন ওরফে মুফতি মামুন তার পিতার মাওলানা হিসেবে সুখ্যাতি এবং নিজের পঙ্গুত্বেরর দোহাই দিয়ে বিভিন্ন ভান ভনিতা করে অনেক অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার চেষ্টা করলেও সে এক দুর্র্ধষ ক্যাডার। অপহরণ বাণিজ্য চালানোর জন্য পটুয়াখালীতে সে গড়ে তুলেছিল টর্চার সেল।সে একজন মাদক সেবী, মাদক ব্যবসায়ী এবং নারী লোভী ব্যক্তি ও বটে। তার কৃত্রিম পায়ের ফোকরে অনায়াসে হাজার হাজার পিস ইয়াবা বহন করে নিয়ে যেতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে।

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার সূত্রে জানা গছে, ব্যবসায়ী শিবুলাল দাসকে অপহরন করে মুক্তিপনের টাকায় দক্ষিণবঙ্গের বড় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি করার উদ্দেশ্যে ল্যাংড়া মামুন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে তার সহযোগী, পিচ্চি রানা, পাভেল ও বিআরটিসির ড্রাইভার জসিমকে নিয়ে পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১১ এপ্রিল সোমবার রাতে গলাচিপা থেকে পটুয়াখালী শহরের নিজ বাসায় যাওয়ার সময় পটুয়াখালী-গলাচিপা হাইওয়ে রোডের শাঁখারিয়ার নির্জন স্থানে থেকে শিবু লাল দাস ও তার গাড়ী চালক অপহরন হন। রাত ১২ টা ২ মিনিট ও ১টা ৫৯ মিনিটের সময় ভিকটিমের মোবাইল থেকে তার স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি জানায় ভিকটিমকে তাদের নিকট আটক করে রেখেছে একই তারিখ ১২ এপ্রিল দুপুর ২টার মধ্যে ২০ কোটি টাকা মুক্তিপন দিলে ভিকটিমকে তারা জীবিত অবস্থায় তাদের কাছে ফেরত দিবে নতুবা তাদের লাশ পাবেন। পরে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ এর নেতৃত্বে জেলা পুলিশের সকল টিম সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে শিবুলাল দাসের গাড়ীটি একটি পেট্রোল পাম্প থেকে উদ্ধার করে। ২৪ ঘন্টার পরে শহরের এসপি কমপ্লেক্স শপিংমলের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে ল্যাড়া মামনুনের গোডাউন থেকে জীবিত অবস্থায় শিবু লাল দাস ও তার ড্রাইভার মিরাজকে উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের ছেলে বুদ্ধদেব দাস বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তিতে মামলার তদন্ত কাজে ভিকটিমের দেয়া তথ্য উপাত্ত, সিসিটিভির ফুটেজ, তথ্য প্রযুক্তির ও প্রচলিত নিয়মে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অত্র ঘটনার মুল পরিকল্পনাকারী নেতৃত্বেদানকারীসহ অপহরন কাজে বিভিন্ন পর্যায়ে অংশ গ্রহনকারীদের সনাক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থান হতে অভিযান পরিচালনা করে ১৬ এপ্রিল রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে ৬ জন আসামীদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভিকটিমকে বহনকৃত ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সাও উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে , আদালতের মাধ্যমে পুলিশ রিমান্ডে এনে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার সহ সকল রহস্য উদঘাটন পটুয়াখালী পুলিশের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ