Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চৌগাছায় ই-কমার্সের নামে ২ কোটি টাকা আত্মসাত

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২২, ৬:১৩ পিএম

যশোরের চৌগাছায় ই-কমার্স’র নামে প্রতিষ্ঠান খুলে অর্ধশত গ্রাহকের প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপসের মাধ্যমে আইডি খুলে এবং সুপার সপ ‘ইউনিক মার্ট ও ইউনিক রেস্টুরেন্ট’ খুলে এই টাকা হাতিয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে প্রেসক্লাব চৌগাছায় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার বাড়ীয়ালী গ্রামের বাসিন্দা ও ফটোকপি ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ রাজু।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ঢাকার মালিবাগ রেল গেট (আয়েশা কমপ্লেক্স-৩য় তলা) এলাকা ইউনিক ওয়ার্ল্ড লিমিটেড নামের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দেশে ৬৪ জেলায় সুপার সপ, রেস্টুরেন্ট, কোমল পানীয় প্রতিষ্ঠান, জুতার কারখানা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করে সেখান থেকে আমাদের লভ্যাংশ দেয়ার অফার দেয়। এর মাধ্যমে আমরা যারা গ্রাহক হয়েছি তাদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে। তারা চৌগাছা শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ডে পুরাতন সোনালী ব্যাংক ভবনের দ্বিতীয় তলায় ইউনিক মার্ট ও ইউনিক রেস্টুরেন্ট নামে দুটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ চৌগাছা উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষ ও চৌগাছার ডিভাইন কফি সপে ইউনিক মার্ট সুপার সপের বিভিন্ন কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। তারা মূলত: চৌগাছার স্থানীয় কিছু অসাধু ও বাটপার মানুষের দ্বারা তাদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করত। তাদের সমন্বয়ে ইউনিক ওয়ার্ল্ডের গ্রাহককে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা তুলেছে। আমরা চৌগাছার মাড়–য়া গ্রামের রাজু আহাম্মেদ ওরফে সোহাগ (কোম্পানীর ডেপুটি ডিরেক্টর), আন্দারকোটা গ্রামের আক্তারুল ইসলাম (সুপার সপ তত্ত্বাবধায়ক ও উপজেলা কর্মকর্তা), শহরের সিদ্দিক টেইলার্সের সিদ্দিকের ছেলে শাহারিয়ার নাফিস (মার্কেটিং কর্মকর্তা), পৌরসভার কারিগরপাড়ার বাসিন্দা ও চৌগাছা বাজারের ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া (মার্কেটিং কর্মকর্তা), তার ছেলে আল মাসুদ (মার্কেটিং কর্মকর্তা), মিন্টুর মেয়ে জুলেখা জামান (মার্কেটিং কর্মকর্তা) এবং মিন্টুর মেয়ের জামাই ও বরিশালের কুয়াকাটার বাসিন্দা মনিরুজ্জামানদের ( কো-অর্ডিনেটর) বিশ^াস করেই সবাই কোম্পানির সাথে যুক্ত হই। তারাই আমাদের টাকা আত্মসাৎ করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পরে জানতে পেরেছি এই প্রতারকরাও কোম্পানির বিভিন্ন পদের কর্মকর্তা ছিলো।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কোম্পানির চৌগাছার ইউনিক মার্ট (সুপার সপ) ও ইউনিক রেস্টুরেন্টের মাধ্যমে চক্রটি চৌগাছা পৌরসভার বাকপাড়া গ্রামের হাসিবুল হাসান শান্তর ১০ লাখ ৫০ হাজার, নাজমুল কবীরের ৭ লাখ ৫০ হাজার, রেহেনা পারভীনের ৩ লাখ, রুমা আক্তারের ২ লাখ, জাহিদ হাসানের ৪ লাখ, উপজেলার বাড়িয়ালী গ্রামের আব্দুর রশিদ রাজুর ৪ লাখ, ফুলসারা গ্রামের ফয়সাল আহমেদের ২ লাখ ৬০ হাজার ছাড়াও রহমাত আলী সেতুর ১৬ লাখ, মুনজুরুল সোহাগের ১২ লাখ ১৫ হাজার, মারুফ হোসেনের ১ লাখ ৩২ হাজার, ইকরামুলের ২ লাখ, রেজওয়ানের ১ লাখ ৩৫ হাজারসহ বিভিন্ন গ্রামের গ্রাহকদের প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রহমত আলী সেতু, ফয়সাল আহমেদ, হাসিবুল হাসান শান্ত, নাজমুল কবীর, জিাহদ হোসেন, আমীর হামজা, রেজওয়ান ইসালমসহ ভুক্তভোগিরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, তাদের পাওনা টাকার বিপরীতে তাদের কারও কাছে বিভিন্ন অংকের টাকার চেক দিয়েছিলেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা। সেসব হিসাবে টাকা না থাকায় ইতিমধ্যেই চেক ডিজ-অনারের প্রস্তুতি নিয়েছেন কয়েকজন। এরই মধ্যে উকিল নোটিশ পাঠানো হলেও তাদের স্থায়ী ঠিকানায়ও কাউকে পাওয়া যায়নি। চৌগাছার যারা কোম্পানিটির সাথে জড়িত ছিলেন তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। এছাড়া কোম্পানিটির ঢাকা কার্যালয়ে কোম্পানির চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান হীরা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম, এডমিন ডিরেক্টর মাসুদ রানা, চৌগাছা উপজেলা কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা সাড়া দিচ্ছেন না। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ