Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিরাইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শনে কৃষিমন্ত্রী

বাঁধ সিন্ডিটেকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝাড়লেন কৃষকরা

মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার, দিরাই (সুনামগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৩ এএম

কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, হাওরপাড়ের কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে সত্যিই আমি আতঙ্কিত। যারা ফসলি জমির উপর নির্ভরশীল, সেই কৃষকদের কল্যাণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে সরকার বিভিন্ন ধরণের কার্ডের ব্যবস্থা করে দেবে। এছাড়া প্রণোদনা হিসেবে আগামী বোরো মৌসুমে এই হাওরের ফসল ডুবির শিকার কৃষকদেরকে বিনামূল্যে সার-বীজ ও কীটনাশক দেয়া হবে। গতকাল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ডুবে যাওয়া চাপতি হাওর পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদেরকে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, প্রতি বছর হাওর এলাকায় বন্যার পানি একটু আগেই চলে আসে, একটি মাত্র ফসল বোরো ধানেই এই এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা। সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জে হাওর এলাকা রয়েছে। গত কয়েক বছর ভালই ছিল, ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যার কারণে কৃষকরা মোটেই তাদের ধান কাটতে পারেনি। এ বছর চাপতির হাওরের বৈশাখীর বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে। তাতে কৃষকদের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে।
আবহাওয়া দফতরের আশঙ্কা অনুযায়ী, সামনে আরও বৃষ্টি হতে পারে। সেটি যদি হয়, তবে আমাদের জন্য হবে চরম দুঃখজনক। ফলে অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে যারা অতি কষ্ট করে বোরো ধান করে ঘরে তুলতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর হাওরের ফসল ডুবির জন্য আমরা কতগুলো কারণ চিহ্নিত করেছি। এরমধ্যে আমরা যে ধানের জাত চাষ করি, সেগুলো আসতে ও পাকতে একটু সময় লাগে। আরেকটা হল, বাঁধগুলোর রক্ষণা-বেক্ষণ ব্যবস্থা আশানুরূপ না। আগামিতে বাঁধগুলোকে টেকসই করতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, এই এলাকার মানুষের অনেক দিনের দাবি নদী খনন করা, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে না পারলে শুধু বাঁধ দিয়ে হবে না। নদী খনন করে সেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে বলেই মানুষের কথা চিন্তা করে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি।
তিনি আরও বলেন, আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরেই বাঁধের কাজ শুরু করতে হবে এবং বন্যা আসার আগেই তা শেষ করতে হবে। চাপতির হাওরে প্রায় ১২ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রশাসন থেকে কিছুটা সহযোগিতা করা হয়েছে। আগামীতে ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে। দেশে খাদ্য নিয়ে কোন হাহাকার নেই, সেই হিসেবে এই এলাকার মানুষও না খেয়ে থাকবে না।
এদিকে কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক চাপতি হাওরের বৈশাখি বাঁধের আসার সাথে সাথেই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বাঁধ সিন্ডেকেটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বার বার এই সিন্ডিকেটের কথা মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। পরে মন্ত্রী তার বক্তব্যে বাঁধ বিষয়ে পুরো পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. বেনজির আলম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরসহ জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ