পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কমিটি গঠন নিয়ে অনিয়ম, দায়িত্ব পালনে অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অভিযোগের কারণে ভেঙে দেয়া হচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। শিগগিরই নতুন নেতৃত্ব আসছে বিএনপির ভ্যানগার্ড খ্যাত এই সংগঠনটিতে। যদিও সর্বশেষ কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে ভোটে নির্বাচিত হয়েছিল, এবার আর সেই পদ্ধতিতে হচ্ছে না। বর্তমান ৬০ সদস্যের আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটির ৪৩ জনই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমানকে কমিটি গঠনসহ ছাত্রদলের বিষয়ে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে ক্ষমতা দিয়েছেন। ফলে তিনিই ঘোষণা করবেন নতুন নেতৃত্ব। গত মঙ্গলবার প্রায় ৮ ঘণ্টা ব্যাপী বৈঠকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে তারেক রহমান বর্তমান কমিটির শীর্ষ নেতাদের বিষয়ে মতামত শুনেন। শীর্ষ ৫ নেতা ছাড়া উপস্থিত ৪৩জন নেতাই ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের প্রতি অনস্থা জানিয়েছেন বলে মতামত দেয়া নেতারা জানান। এসময় তারা নতুন কমিটি গঠনের পক্ষে মতামত দেন এবং এ সংক্রান্ত যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে তারেক রহমানকে ক্ষমতা অর্পণ করে লিখিত চিঠিও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
ছাত্রদলের নেতাদের খোঁজখবর তারেক রহমানের কাছে পৌঁছান এমন কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রদলের সাথে বৈঠকের পর থেকেই তারেক রহমান নিজেই যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যেই কমিটি ঘোষণা করা হবে বলেও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল নির্বাচিত হন। ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর ৬০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর এ কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি বর্তমান নেতৃত্ব। এছাড়া ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও কমিটি গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গরিমসি করে দীর্ঘসূত্রিতা করার অভিযোগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকে নতুন কমিটি গঠনের দাবি ওঠে সংগঠনের মধ্য থেকে। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে শীর্ষ নেতাদের ৫ দফা সময়ও বেধে দেয়। যার সর্বশেষ তারিখ দেয়া হয়েছিল ৩০ মার্চ। কিন্তু এর মধ্যেও কমিটি করতে পারেনি ছাত্রদল নেতারা। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ সংগঠনটির অভিভাবক তারেক রহমান। একইসাথে উপজেলা, পৌর ও কলেজ কমিটি গঠন এবং জেলা কমিটি গঠন নিয়েও নানা অভিযোগ জমা পড়ে তারেক রহমানের কাছে। এর মধ্যে বেশ কিছু কমিটিতে আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ, ভিডিও ফুটেজও পাঠানো হয়েছে তার কাছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটিতে দায়িত্ব পালন করা একাধিক নেতা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতারও অভিযোগ আনেন। এসব বিষয় নিয়েই ছাত্রদলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি।
এরই প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার রাতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামত নেন তারেক রহমান। বিকাল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ৪৩ জন নেতার মতামত নেন তিনি। পৃথকভাবে নেওয়া ছাত্রদল নেতাদের মতামতের মধ্যে অধিকাংশই নতুন কমিটির পক্ষে অবস্থান নেন।
বর্তমান কমিটির বিষয়ে কী করা উচিত, নতুন কমিটি করলে কী ধরনের নেতা নির্বাচন করা উচিত এবং জেলা কমিটির বিষয়ে কী করা উচিত ইত্যাদি নানা প্রশ্ন করেন তারেক রহমান। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা তারেক রহমানকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার ন্যস্ত করেন।
মত নেওয়ার সময় ছাত্রদলের ৬০ সদস্যের আংশিক কমিটির মধ্যে ঢাকার বাইরে ও অসুস্থতাজনিত কারণে ১২ জন অনুপস্থিত ছিলেন। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক উপস্থিত থাকলেও তাদের মতামত নেওয়া হয়নি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে ওই বৈঠকে মতামত দিয়েছেন এমন একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা, ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কমিটি কেন হচ্ছে না তা জানতে চান। এক্ষেত্রে প্রায় সকলেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে দায়ী করেন। তাদের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হবে না বলেও মতামত দেন তারা। ঢাকার কমিটিগুলোর ক্ষেত্রে শীর্ষ নেতারা পছন্দের লোক বসাতে গিয়েই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান এসব নেতারা। এর মধ্যে ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ইউনিট রয়েছে। কবে নাগাদ এসব কমিটি গঠন করা হবে তা কেউ নিশ্চিত করতে পারছেন না। এতে পদপ্রত্যাশী অনেক নেতাকর্মী তাদের রাজনৈতিক পরিচয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এছাড়া কমিটি আটকে রেখে মেয়াদ দীর্ঘায়িত করার অভিযোগ আনেন বৈঠকে অংশ নেয়া নেতারা। তারা বলেন, এটি হলে সংগঠনের ক্ষতি হবে, সংগঠনের ধারাবাহিকতা নষ্ট হবে, নতুন নেতৃত্বের পথ তৈরির পথ বাধাগ্রস্ত হবে। তাই তারা নতুন কমিটি গঠনের জন্য সংগঠনের অভিভাবক তারেক রহমানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। এসময় কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনসহ ছাত্রদলের বিষয়ে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা অর্পণ করে তাদের স্বাক্ষরিত একটি চিটিও তারেক রহমানের কাছে দিয়েছেন ৪৩জন নেতা। যদিও চিঠিতে স্বাক্ষর দেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দেয়া ছিল যে কেউ চাইলে স্বাক্ষর না করেও বিপরীতে অবস্থান নিতে পারে।
এদিকে নতুন কমিটি ঘোষণার ইঙ্গিত পেয়েই দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। এদের মধ্যে রয়েছেন- সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সভাপতি সাজিদ হাসান বাবু, যুগ্ম সম্পাদক শাহনেওয়াজ, মাহিনউদ্দিন রাজু প্রমুখ।
সাধারণ সম্পাদক পদে- কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক তানজিল হাসান, রিয়াদ ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব মিয়া, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নিজামউদ্দিন রিপন, রনি প্রধান, আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া, রাশেদ ইকবাল প্রমুখ।
ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, কমিটির মেয়াদ যেহেতু শেষ হয়েছে তাই নতুন কমিটি হতেই পারে। কমিটি ভাঙা-গড়া এটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়ারই অংশ। তারেক রহমান আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক তিনি ছাত্রদলের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সেটা আমরা অতীতেও মেনে নিয়েছি আগামীতেও মেনে নেব। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।