Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বৃষ্টি বিহীন দুঃসহ গরমে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত সেচ সংকটে ফসলের উৎপাদন বিপর্যয়ের আশংকা

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ এপ্রিল, ২০২২, ৪:১৯ পিএম

লাগাতার বৃষ্টির অভাবে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সুস্থ জনজীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যয়ের কবলে। রমজানে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ সর্বোচ্চ পর্যয়ে পৌছায় রোজাদার সহ শিশু ও বৃদ্ধদের দূর্ভোগ ক্রমশ বাড়ছে। গত মাসে বরিশালে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের শতভাগ কম। এসময়ে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা থাকলে কোন বৃষ্টি হয়নি। দুঃসহ গরমের সাথে বৃষ্টির অভাবে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। গত ৩ মাসে দক্ষিণাঞ্চলে শুধু সরকারী হাসপাতালগুলোতই নারী ও শিশু সহ প্রায় ২০ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত চিকিৎসা গ্রহন করেছে। সরকারী হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা গ্রহনকারীর সংখ্যা অন্তত দ্বিগুন হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন।

শুক্রবার দুপুরে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৩.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে দশমিক ২ ডিগ্রী বেশী ছিল। অপরদিকে আবহাওয়া বিভাগ চলতি মাসে দক্ষিণাঞ্চলে স্বাভাবিক ১৩২ মিলিমিটারের স্থলে ১২০ থেকে ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা জানালেও মাসের প্রথম ১৫ দিনে কোন বৃষ্টি হয়নি।

ফলে মাঠে থাকা বোরো এবং আউশ ধান ছাড়াও বিভিন্ন রবি ফসলের ঝুকি ক্রমশ বাড়ছে। বৃষ্টির অভাবে অনেক রবি ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হবার আশংকা ক্রমশ প্রবল হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও গত দেড় মাসে কোন বৃষ্টি হয়নি। পানির অভাবে বিপুল পরিমান বোরো ধান ও আউশের জমিতে সেচ সংকট দেখা দিচ্ছে। এমনকি এবার দক্ষিণাঞ্চলে এযবতকালের সর্বাধীক পরিমান জমিতে তরমুজ আবাদ হলেও বৃষ্টির অভাবে এ অঞ্চলের অন্যতম এ অর্থকারী ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হবার আশংক্রা পবল হচ্চে। সারা দেশে এরবার যে ৩০ লক্ষাধীক টন তরমুজ উৎপাদনের আশা রয়েছে তার ২০ লাখ টনই আসবে দক্ষিণাঞ্চল থেকে।

অপরদিকে চলতি রবি মৌসুমে পৌষের শেষভাগে ঘন কুয়াশার সাথে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের নিচে নেমে যাওয়ায় বোরো বীজতলা একাধীকবার কোল্ড ইনজুরী’র ক্ষতির শিকার হয়। বরিশাল কৃষি অঞ্চলের ১১ জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৩ লাখ ৬৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের মাধ্যমে প্রায় ১৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। কিন্তু ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নিম্নচাপ ‘জাওয়াদ’এর প্রভাবেও বোরো বীজতলা এবং গোল আলু ছাড়াও উঠতি আমনের সাথে বিভিন্ন রবি ফসলের ক্ষতির পরিমান ছিল প্রায় ১শ কোটি টাকা।

এখন বৃষ্টি বিহীন দুঃসহ গরমে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবনে বিপর্যয়ের সাথে ফসলেরক্ষতিও বাড়ছে। আবহাওয়া বিভাগের মতে, লঘু চাপের বর্ধিতাংশ হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিম বঙ্গ ও সৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আগামী ৭২ ঘন্টায় বজ্রবৃষ্টির প্রবনতা অব্যাহত থাকা সহ উত্তরবঙ্গে মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে জানান হলেওদক্ষিণাঞ্চল যুড়ে ক্ষড়তাপে রোজাদার সহ শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের দূর্ভোগ বর্ণনার বাইরে চলে যাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ