Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেরপুরের চান্দের নগরে দুইশ বছরের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা

শেরপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ এপ্রিল, ২০২২, ৩:৩৬ পিএম

শেরপুর সদর উপজেলার চান্দের নগরের আসলে কবে বাংলার ঐতিহবাহী বৈশাখৗ মেলা শুরু হয় তা কেউ জানেনা ? তা কেও জানেনা। তবে ধারনা করা হচ্ছে অন্তত দুইশ বছর আগে এ মেলার প্রথম আয়োজন করা হয়েছিলো। প্রতি বছরই বংশ পরম্পরায় এ মেলাটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। পূর্ব পুরুষরা করে গেছে, এ ঐতিহ্য ধরে রাখতেই করা হয় মেলার। মেলাতো নয় এটি হচ্ছে এ গ্রামের একটি বৃহৎ উৎসব। সবাই অপেক্ষা করে কবে আসবে পহেলা বৈশাখ। উদযাপন করবে বৈশাখী মেলা আর উৎসব। যা আনন্দ দেয় সবাইকে।
এ মেলার আয়োজক বৈশাখী সংগঠন ও মেলা কমিটির পক্ষ থেকে দিনব্যাপী মেলায় ঘোড়দৌড়, গাঙ্গি বা কুস্তি খেলা ও দৌড়, মুরগের লড়াইসহ গ্রামীণ বিভিন্ন খেলা ও প্রতিযোগিতা অনুুষ্ঠিত হয়। এবং বিকেল ৬টায় এ মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হয়।
মেলা উপলক্ষে ঝি-জামাইদের নিমন্ত্রন করে প্রায় প্রতিটি পরিবার। সবাই মিলে এ উৎসবে যোগদিয়ে আনন্দ উপভোগের রেওয়াজ হয়ে গেছে। শিশু কিশোর, যুবক বৃদ্ধসহ সবাইমিলে আনন্দ ভোগ করে থাকে।
সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এ মেলায় খুব আনন্দ উপভোগ করি। বৈশাখ আইলে এই মেলা হয়। কিন্তু গত দুইবছর এই মেলা বন্ধ আছিল করোনার কারনে। আমরা আবার এলাকা মেলা দেখলাম অনেকদিন পর।
জুব্বার মিয়া বলেন, এই মেলা আমগর গ্রামের ঐতিহ্য। আমরা এই একটাদিন অনেক মজা করি। পাশের গ্রাম থাইক্কা সব আসে মেলা দেখতে। সবাই একসাথে হয়ে আনন্দ করি।
মো: করিম মিয়া বলেন, আগে আমার বাপ আমারে কান্দো ক্িরা নিয়া মেলায় আইছে। এহন আমি আমার পুরিরে কান্দো নিয়া মেলা দেহাবার নিয়া আইছি। খুব ভালা নাগতছে।
লিপি আক্তার বলেন, আমর বিয়ে হয়ে গেছে। বিয়ের পর তো শশুর বাড়ি থাকি। কিন্তু এইমেলার দিন আমাগো এলাকার মেয়ে জামাইদের মিলন মেলা হয়। আমরা সবাই জামাই নিয়া বাপের বাড়ি আসি।
তবে মেলার জায়গা আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যাচ্ছে। সরকারী কোন জায়গা নেই, মানুষের মালিকানা জমিতে এখানে মেলা হয়ে থাকে। এজন্য এলাকাবাসীর দাবী সরকার যেন এখানে জায়গার বন্দোবস্ত করে দেন।

মো: মোশারফ হোসেন বলেন, এই মেলা আগে মেলা বড় হইতো। কিন্তু এখন আস্তে আস্তে জায়গা কইমা জাইতাছে। আমরা চাই সরকার কিছু অনুদান দিয়ে আমগর এই মেলাডা টিকাই রাহুক।
হরিয়ে যেতে বসা বৈশাখী মেলায় এসে আলাদা আনন্দ উপভোগ করছে এখানে আসা শিশু-কিশোর, পুরুষ-মহিলাসহ সর্বস্তরের মানুষ। ঐতিহ্যবাহী এ মেলা যাতে প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত হয় এ দাবী মেলায় আসা জনসাধারনের।

শেরপুর সদর চান্দের নগর মেলা উদযাপন পরিষদ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান জানান, এ মেলা যে কত বছর থেকে এখানে হচ্ছে তা আমরাও বলতে পারি না। আমরা প্রতিবছর এ মেলা আয়োজন করার চেষ্ঠা করি। দুইবছর করোনার কারণে বন্ধ থাকলেও আজ আবার দুইবছর পর জমে ওঠেছে এ মেলা। মেলার আমরা প্রতি বছরই আয়োজন করার চেষ্টা করবো। মেলা আগে বড় করে আয়োজন হতো এখন জায়গা কমে যাওয়ার পরিধি একটু কমেছে। কিন্তু মেলায় আসা মানুষজনের সংখ্যা আরোও বেড়েছে।
মেলার পুরুষ্কার বিতরনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি বলেন, এসব দেশের ঐতিহ্য। এসব ঐতিহ্য ধরে রাখতে মেলার আয়োজনে সরকারীভাবেও সহযোগিতা করা হবে। জায়গার অভাবে এ মেলা যাতে হারিয়ে না যাই আমরা এইটা দেখবো। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান মো: রফিকুল ইসলাম ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা ও হুইপ কন্যা ডা: শারমিন রহমান অমি ও ছোট কন্যা সাদিয়া রহমান অপি প্রমুখ।

 

 

শিল্পপতি ইদ্রিস মিয়ার প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী আজ
শেখ সাঈদ আহাম্মেদ সাবাব :
আজ ১২ এপ্রিল দেশের অন্যতম ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সেরা শিল্পপতি, দানবীর, শিক্ষানুরাগী, বহু শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব মো: ইদ্রিস মিয়ার প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী। ২০২১ সালের এই দিনে শিল্পপতি ইদ্রিস মিয়া হাজার হাজার মানুষকে কাদিয়ে চিরবিদায় নেন। তার ইন্তোকালে শেরপুরসহ বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে শোকের ছায়া নেমে আসে। আজো ভুলতে পারেনি দানবীর ইদ্রিস মিয়াকে তার কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী, সমাজের দরিদ্র অসহায় ও বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সৎজীবন যাপন ও ব্যবসা বানিজ্য করে জিরো থেকে হিরো হয়েছিলেন। ব্যবসা বানিজ্য ও শিল্প প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি নিজেকে অর্থনৈতিকভাবে শক্ত ভিতের ওপর দাড় করান। তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তুলেন শিল্প প্রতিষ্ঠান। তার অধীনে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণ। তিনি কেউ অন্যায় করলে তাকে প্রশাসনিক শাস্তি দিলেও পরবর্তেিত তার আর্থিক কষ্টের কথা চিন্তা করে সবকিছু মাফ করে দিতেন। এমন মনের মানুষকে হারিয়ে ওই কোম্পানীর শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তারা আজও কেদেঁ ফিরেন মহানুভব ইদ্রিস মিয়াকে। অনেকেই তার কথা মনে হলেই চোখের পানিতে বুক ভাসায়।

শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলার পাশাপাশি তিনি সমাজ সেবায়ও রেখেছেন অনন্য অবদান। মানুষের দূখে সুখে পাশে দাড়াতেন।
প্রতিষ্ঠা করেছেন ইদ্রিসিয়া কামিল মাদ্রাসা, আলহাজ্ব বাবার আলী জামে মসজিদ, জিহান সরাকরী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাবর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, রেহানা ইদ্রিস মডেল একাডেমীসহ বহু ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

অসংখ্য গুনের অধিকারী আলহাজ্ব ইদ্রিস মিয়ার জন্য আজো কাদেঁন অনেকেই।
তার মৃত্যু দিবস উপলক্ষে আজ সন্ধায় ৮ হাজার মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করা, ৬৩টি মসজিদে দোয়া মাহফিল, কোরআন খানি, নৃ-ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ, ইদ্রিস এন্ড কোম্পানী প্রা: লি: এর সকল ব্রাঞ্চে এবং নিজ বাসায় বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে তার প্রথম মৃত্যু বার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন শেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, নতুনযুগ পত্রিকার সম্পাদক মো: মেরাজ উদ্দিনসহ সাপ্তাহিক নতুনযুগ পরিবারের সদস্যগণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ