Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাউমী শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ পেলে সমাজের বিভিন্নস্তরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে -বিশিষ্ট আরবী সাহিত্যক শাইখ মুহাম্মদ আমিনুল্লাহ

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২২, ৬:০০ পিএম | আপডেট : ৭:৪৮ পিএম, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

বিশিষ্ট আরবী সাহিত্যক ও বিচক্ষণ মুহাদ্দিস শাইখ আবু মুহাম্মদ আমিনুল্লাহ বলেন, কাউমী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হলে তারা সমাজের বিভিন্নস্তরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে। তিনি বলেন, কাউমী মাদরাসার অধিকাংশ শিক্ষক পড়ালেখা শেষে সরাসরি শিক্ষকতায় যোগ দিয়ে থাকেন। তারা সরকারী-বেসরকারী কোন প্রশিক্ষণ পায়না। স্কুল কলেজের শিক্ষকদের জন্য সরকারী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এর ব্যবস্থা থাকলেও কাউমী শিক্ষকরা সেই দিক থেকে বঞ্চিত।

প্রশিক্ষণ না থাকায় তারা বিভিন্ন ভাবে পিছিয়ে আছে। তারা বেশী পরিশ্রম করলেও তাদের কর্যক্রমগুলো অগুছালো থাকে। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসেনা।
অথচ এই বিশাল শিক্ষক সমাজ তাদের যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে
অবদান রাখতে পারে। তাই দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নাই।
তিনি বলেন, এই ঘাটতি পুরণের জন্য ইমাম মসুলিম ইসলামিক সেন্টার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়।

বিশিষ্ট আরবী সাহিত্যক শাইখ আবু মুহাম্মদ আমিনুল্লাহ বুধবার (১৩ এপ্রিল) কক্সবাজার ইমাম মুসলিম ইসলামিক সেন্টারে সপ্তাহ ব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সে একথা বলেন।
তিনি বলেন, সৌদি আরবে
কিং সওদ বিশ্বিবদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার আগে ও পরে তিনি এখনো শিক্ষকতায় আছেন। অথচ ওই প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তিনি অনেক বিষয়ে আমুল পরিবর্তন অনুভব করেছেন। তাই শিক্ষকদের প্রশিক্ষনের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চট্টগ্রাম দারুল মা'আরিফ আল ইসলামিয়া প্রতিবছর শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। এখান থেকে শিক্ষকরা দক্ষতা অর্জন করে থাকেন। তাই দারুল মা'আরিফের ছাত্র-শিক্ষরা অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে।

তিনি বলেন, ইমাম মুসলিম ইসলামিক সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শাইখ ছালাহুল ইসলামকে সবসময় এবিষয়ে চিন্তা করতে দেখেছেন। তিনি চান সারা বছর শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী অব্যাহত থাকুক। এটি অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে।

তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেফাকুল মদারেসসহ
কাউমী মাদরাসা সমুহের বিভিন্ন সংগঠন শিক্ষকদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এটি অবশ্যই ইতিবাচক।

বিশিষ্ট আরবী সাহিত্যক শাইখ আবু মুহাম্মদ আমিনুল্লাহ এখন চট্টগ্রাম দারুল মা'আরিফ আল ইসলামিয়ার মুহাদ্দিস ও উচ্চতর আরবী সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক।
একসময় তিনি ইমাম মুসলিম ইসলামিক সেন্টারের শিক্ষা পরিচালকও ছিলেন।

তিনি পটিয়া আল জামিয়া ইসলামিয়ায় দাওরায়ে হাদিস শেষে দারুল মা'আরিফ আল ইসলামিয়া থেকে উচ্চতর আরবী সাহিত্যের উপর ডিগ্রী অর্জন করে সেখানে অধ্যাপনা শুরু করেন। মহেশখালী মাতারবাড়ির কৃতি সন্তান শাইখ আমিনুল্লাহ সৌদি আরবের প্রাচীন ও উচ্চতর বিশ্ববিদ্যালয় কিং সওদ বিশ্বিবদ্যালয়ে 'মর্ডান এরাবিক ল্যাংগুয়েজ টিক্সের' উপর পোষ্ট গ্রেজুয়েশন ডিগ্রি নিয়ে আরবী ভাষার উপর বিশেষ পান্ডিত্ব অর্জন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ইমাম মুসলিম ইসলামিক সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শাইখ ছালাহুল ইসলাম বলেন, তিনি ভারতের দেওবন্দসহ উপমহাদেশের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করার ও বারবার ভিজিট করার সুযোগ পেয়েছেন। বর্তমান বিশ্বের শাইখুল ইসলাম পাকিস্তানের জাষ্টিস আল্লামা তক্বী ওসমানীর কাছে হাদিসের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

তিনি সৌদি আরবের রিয়াদের প্রসিদ্ধ ইমাম মুহাম্মদ বিন সউদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর যাবত আরবী ভাষা বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি ইমাম মুসলিম ইসলামিক সেন্টারে শিক্ষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করে আসছেন। আন্জুমানে ইত্তেহাদুল মদারেসকে এভাবে কাউমী মাদরাসা শিক্ষকদের জন্য পাঠদানে দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার আহবান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার শহরতলীর লিংক রোডে অবস্থিত ইমাম মুসলিম ইসলামিক সেন্টার কক্সবাজারে কাউমী ধারার দাউরায়ে হাদিস পর্যন্ত একটি সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
পাশাপাশি এখানে রয়েছে আলিম ক্লাশ পর্যন্ত মহিলা মাদরাসা ও জেলার সর্বোচ্চ সংখ্যক সহস্রাধিক এতিম লালন পালন কেন্দ্র। এর বিশাল নিজস্ব ক্যাম্পাসে রয়েছে
সুপরিসর দৃষ্টি নন্দন জামে মসজিদ। যেটি ইসলামী ঐতিহ্যের প্রকাশের পাশাপাশি পর্যটক আকর্ষণেও ভূমিকা রাখছে। ##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ