বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরগুনার তালতলীতে স্থানীয় প্রভাবশালী মালেক আকন স্লুইসগেট খুলে মাছের ঘেরে লবণাক্ত পানি উঠায়। এই লোনা পানি ঢুকে ক্ষেতের ২০ একর বোরো ধানের চারা জ্বলে গেছে। আর পরিকল্পিতভাবে নোনা পানি উঠানোর কারণে জমির ধান নষ্ট হওয়াতে ঋণের ভারে জর্জরিত কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়ছে।
জানা যায়, উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের সকিনা ও নিদ্রার চর এলাকার ২৭ জন কৃষক ২০ একর জমিতে এবার ফসল চাষ করেছেন। ফসল ভালো হলেও স্থানীয় প্রভাবশালী মালেক আকন পরিকল্পিতভাবে স্লুইসগেট খুলে মাছের ঘেরে নোনা পানি উঠানোর কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন বোরোর চাষী কৃষকরা। কিছু দিন পরেই কৃষকের ঘরে আসতেন এই বোরো ধান। তবে ২০ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ লোনা পানিতে জ্বলে শেষ হয়ে গেছে। অনেক কৃষক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এই বোরো আবাদ করেন। এই ধান ঘরে তুলতে না পেরে ঋণের ভারে জর্জরিত ২৭ জন কৃষক এখন দিশেহারা পড়ছে। এ বিষয়ে একাধিক কৃষক প্রভাবশালী মালেক আকনের কাছে বলতে গেলে উল্টো হুমকি দেয়। তিনি বলেন, আমার ঘেরে পানি দরকার তাই স্লুইসগেট খুলে নোনো পানি উঠানো হয়েছে। এতে তোমাদের ক্ষতি হলে আমি কি করতে পারি। তোমরা(কৃষকরা) যদি বেশি বাড়াবাড়ি করো তাহলে হাত পা ভেঙে দেওয়া হবে। কৃষকরা কোনো উপায় না পেয়ে বিচারের জন্য উপজেলা ও জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিচার চেয়ে অভিযোগ দেয়। এদিকে বিচার চেয়ে প্রতিদিনই ঐ ২৭ পরিবার বোরো ফসলের মাঠে মানববন্ধনসহ অবস্থান ধর্মঘট করেন।
বৃধবার(১৩ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার সকিনা ও নিদ্রার চর এলাকা সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বোরো ধান খেত নোনা পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এসময় ঐ ফসলী মাঠে কৃষকদের মানববন্ধনসহ অবস্থান ধর্মঘট করতে দেখা যায়। সাংবাদিকদের দেখেই ঐ কৃষকরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বলেন, আমরা আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই। কেউ কেউ বলছে ধান ঘরে তুলতে না পেরে এনজিও ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না।
কৃষক মনির আকন বলেন, আমি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ২ একর বোরো ধানের চাষ করেছি। এ বছর এমন বিপদ হবে বুঝতে পারিনি। স্থানীয় প্রভাবশালী মালেক আকন তার ব্যক্তি মালিকানা ঘেরে পরিকল্পিতভাবে স্লুইসগেট খুলে নোনা পানি উঠায়। এ জন্য আমার ২ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। আমি আমার ক্ষতিপূরণ চাই।
আরেক কৃষক নিজাম জোমাদ্দার, আমার নিজের দেড় একরসহ অন্য কৃষদের ২০ জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এবিষয়ে মালেক আকনের কাছে বললে তিনি উল্টো হুমকি দেয়। বলেন তোরা যা পারো কর, আমি কোনো ক্ষতি পূরণ দিতে পারবো না।
এ বিষয়ে মালেক আকন বলেন, আমি ঘেরে পানি উঠিয়েছি। তাতে কিছু কৃষদের ক্ষতি হয়েছে। তবে তারা যে পরিমান ক্ষতির কথা বলে তা হয়নি। বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন,আমি পানি উঠানোর আগে সবাইকে জানিয়েছি। তিনি আরও বলেন আমি কোনো কৃষককে হুমকি দেইনি।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসের বলেন, এবিষয়ে আমার কাছে স্থানীয় মালেক আকনের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ এসেছে। তিনি বেশি ভালো লোক না তাই উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থার জন্য থানায় পাঠানো হয়েছে কৃষকদের। তিনি আরও বলেন নোনা পানির কারণে অনেক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।