Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুবি শিক্ষকদের একের পর এক যৌন হয়রানি, এবার চারুকলার শিক্ষক !

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২২, ৪:১১ পিএম

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে একের পর এক যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠছে। কয়েকদিন আগে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধীন ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডি‌সি‌প্লিনের সহকারী অধ্যাপক বিটপ শোভন বাছাড়ের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। ২২ জন শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এনেছেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৩ এপ্রিল তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাধারণত যৌন হয়রানির ঘটনাগুলোকে স্পর্শকাতর ঘটনা হিসেবে অনেকটাই গোপনে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। কিন্তু শোভন বাছাড়ের বিরুদ্ধে একই সাথে ২২ জন শিক্ষার্থী অভিযোগ দেয়ায় বিষযটি চাপা থাকেনি। অবশ্য অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক বিটপ শোভন বাছাড় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে ষড়যন্ত্র ও সাজানো বলে দাবি করেছেন।
এদিকে, বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। যারা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত মানসিক ও শারিরিকভাবে হয়রানি করছেন। লোকলজ্জার ভয়ে অনেক শিক্ষার্থীই বিষয়গুলো প্রকাশ করেন না। অভিযোগ প্রকাশ করলে একাডেমিক ভাবে হয়রানির আশংকাও তারা করে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, কিছু শিক্ষক আছেন, যারা কারণে অকারণে নিরিবিলি দেখা করতে বলেন। তাদের কক্ষে কখনো একা প্রবেশ করলে আপত্তিকর ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন। ক্লাসেও অনেক সময় অশ্লীল রসাত্মক কথা বলেন। সম্মানের ভয়ে আমরা প্রতিবাদ করি না। তাছাড়া শিক্ষকদের হাতে আমাদের বিষয় ভিত্তিক কিছু নম্বর থাকে, যে কারণে ভয়ে আমরা প্রতিবাদ করি না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানির ঘটনা নতুন কিছু নয়। গত বছর ২৬ আগস্ট গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক ছোটন দেবনাথের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন তারই এক নারী সহকর্মী। ৬০ কার্যদিবসে তদন্ত শেষ করার বিধিবিধান থাকলেও সাত মাস পার হয়ে গেছে কিন্তু এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি তদন্ত কমিটি।
দু’ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ডিসিপ্লিনের শিক্ষক মীর সোহরাব হোসেন সৌহার্দ্যর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময় পত্রপত্রিকায় বিষয়টি ফলাও করে প্রকাশ হয়। ২০১৭ সালে নিজ ডিসিপ্লিনের ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো. শরীফ উদ্দিনকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। ২০১২ সালে অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ড. সাইফুল ইসলাম, ২০১৩ সালে বাংলা বিভাগের আনিসুর রহমান, ২০১৬ তে অ্যাগ্রো ডিসিপ্লিনের আমিনুল ইসলামকে যৌন হয়রানির অভিযোগে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
অপ্রীতিকর এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিব্রত বলে জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। তিনি বলেন, সব কিছু সুচারুভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। সর্বশেষ অ‌ভি‌যোগ পাওয়ার পর ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডি‌সি‌প্লি‌নের সহকারী অধ্যাপক বিটপ শোভন বাছাড়কে সাম‌য়িক বরখাস্ত করা হ‌য়ে‌ছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন জানান, শিক্ষকরা হচ্ছেন সমাজের আদর্শ। তারা বিচ্যুত হলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে গোটা সমাজে। সেক্ষেত্রে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ