Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কলেজছাত্রকে নির্যাতন

ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঝালকাঠির এক কলেজছাত্রকে ঢাকায় নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে একটি চক্র পরিবারের কাছ থেকে ৫০ হাজার মুক্তিপণ আদায় করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের সময় তার অশ্লীল ছবি তুলে রেখে দেয় অপহরণকারীরা। এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নিলে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দেয়া হয়। নির্মম নির্যাতনের শিকার সরোয়ার রাব্বিকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন নির্যাতিত ওই যুবকের পরিবার। রাব্বি সদর উপজেলার আগরবাড়ি গ্রামের মো. শাহ জালালের ছেলে।
সরোয়ার রাব্বির পরিবার জানায়, দুই মাস আগে ঢাকার গাজীপুর এলাকার সাকিব হাসান নামে এক যুবকের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় ঝালকাঠি সরকারি কলেজ থেকে এইএচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সরোয়ার রাব্বির। এইচএসসি পাশ করার পরেই রাব্বির মাথায় চাকরি করার চিন্তা ঢুকে পড়ে। ফেসবুকে পরিচয় হওয়া সাকিব হাসান তাকে ৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দিবে বলে ঢাকায় যেতে বলে। গত ৭ এপ্রিল রাব্বি ঝালকাঠির লঞ্চে ঢাকায় যায়। সাকিবের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী ৮ এপ্রিল গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি জরাজীর্ণ ভবনের সামনে গেলে রাব্বিকে ৬ জন যুবক অপহরণ করে ভবনের একটি কক্ষে আটকে রাখে। ফোন করে বাবার কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণের টাকা না দিলে তাকে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। কখনো ইলেকট্রিকসট, লোহার রড দিয়ে আঘাত, দেওয়ালের সঙ্গে মাথায় আঘাত করা হয় রাব্বিকে। তার অশ্লীল ছবি তুলে রাখে ওই চক্রটি। এ ঘটনা কাউকে জানালে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ভাইরাল করা হবে বলে ভয় দেখানো হয়। এক পর্যায়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। রাব্বিকে দিয়ে ফোন করিয়ে অপহরণকারীরা তার বাবার কাছে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে একঘণ্টার মধ্যে তার ছেলেকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। রাব্বির বাবা অপহারণকারীদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের টাকা দিলে ছেলেকে গাজীপুর বাসস্ট্যান্ডে ছেড়ে দেয়। সেখান থেকে ৯ এপ্রিল ঝালকাঠির বাড়িতে আসলে গতকাল তাকে ভর্তি করা হয় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে রাব্বির।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্র রাব্বি জানায়, জিম্মীকারীরা শুধু আমাকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে নির্যাতনই করেনি, বিদ্যুতের তার দিয়ে বেধরক পিটিয়েছে। মাথা দেয়ালের সাথে ঠুকেছে। তারা আমাকে নগ্ন করে ভিডিও করে রেখে দেয়। এ ঘটনা কাউকে জানালে এ ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক দ্বীন মোহম্মদ বলেন, ছেলেটির শরীরে বৈদ্যুতিক শকের অনেক পোড়া ক্ষত রয়েছে। সে মানুষিক ভাবেও ভেঙ্গে পড়েছে। আমরা তাঁকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছি।
ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানান, নির্যাতিত ওই ছেলেটির পরিবারকে যোকোন সহযোগিতা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ