বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নওগাঁর মান্দায় এক গৃহবধূ ববিতা খানমকে (২২) যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগে ছড়িয়ে পড়ার (ভাইরাল) পরার পর ওই গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়ীকে আটক করেছে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে হাসপাতাল থেকে রোববার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বুধবারে নির্যাতন করার পর স্থানীয় এক যুবক সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়।
রোববার ভোরে তাদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামী জাহিদ হোসেন মোল্লা (৩২) পলাতক থাকায় তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের গনেশপুর দালালপাড়া গ্রামের সামির উদ্দিন মোল্লা (৬৫) ও তার স্ত্রী হাজেরা বিবি (৬১)।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ, তার স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ৭ মাস আগে নওগাঁ সদর উপজেলা তেলিপুকুর হঠাৎপাড়া গ্রামের মর্জিনা বিবির মেয়ে ববিতা খানমের সাথে গনেশপুর দালালপাড়া গ্রামের সামির উদ্দিন মোল্লার ছেলে জাহিদ হোসেন মোল্লার বিয়ে হয়। ববিতা জাহিদ হোসেনের তৃতীয় স্ত্রী। জাহিদ বিভিন্ন হাট-বাজারে ছাগলের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ আগের দুই স্ত্রীও জাহিদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে তালাক নিয়ে চলে যান। ববিতার সঙ্গে বিয়ের সময় তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকও নেন জাহিদ হোসেন। এরপরেও ববিতার কাছে আরও যৌতুক দাবি করেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিসহ বিভিন্ন বাহানায় ববিতাকে নির্যাতন করে আসছেন বলেও তাঁদের অভিযোগ।
গৃহবধূর মা মর্জিনা বিবি জানান, বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে একাধিকবার সালিসও হয়েছে। এরপরেও ববিতার ওপর নির্যাতন থামেনি। গত বুধবার দুপুরে তাঁকে মারধর শুরু করেন স্বামী জাহিদ। মুঠোফোনে কেউ একজন নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ববিতাকে মাটিতে ফেলে চুলের মুঠি ধরে এলোপাথাড়ীভাবে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে লাথি ও কিলঘুষি মেরে চলেছেন জাহিদ । এ সময় নির্যাতনের সহযোগিতা করেন ওই গৃহবধুর শ্বশুর ও শাশুড়ী এবং তাকে আরো মারপিটের নির্দেশ দেন শ্বশুর ও শাশুড়ী । নির্যাতনের একপর্যায়ে তার বস্ত্র ছিঁড়ে বিবস্ত্র করা হয়। প্রতিবেশি কয়েকজন ববিতাকে জাহিদের কাছ থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। তাদেরকে মারতে উদ্যত হন জাহিদ। অনেক চেষ্টায় ববিতাকে জাহিদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেন স্থানীয় লোকজন।
গৃহবধূ ববিতা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় তার স্বামী যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু আমার পরিবার গরীব হওয়ায় দাবি করা যৌতুকের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। এর ফলে অধিকাংশ সময় তাকে বাপের বাড়িতেই থাকতে হয়েছে। একই দাবিতে বুধবার তাঁর ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর ওই গৃহবধূ থানায় অভিযোগ করতে আসেনি। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে পুলিশ ওই গৃহবধূ শ্বশুর-শাশুড়ীকে আটক করা হয়েছে। স্বামী জাহিদ পলাতক থাকায় আটক করা সম্ভব হয়নি। ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। দ্রুত জাহিদকে আটক করা সম্ভব হবেও বলে ওসি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।