Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পেঁয়াজে বাম্পার ফলনেও কুষ্টিয়ার চাষিরা হতাশ

স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:১২ এএম

পেঁয়াজ চাষে বাম্পার ফলন হলেও সঠিক দাম না পেয়ে কুষ্টিয়া অঞ্চলের চাষিরা হতাশায় ভুগচ্ছেন। তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ২০২১-২২ অর্থবছরে পেঁয়াজ চাষে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমি। সেখানে আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৪১৯ হেক্টর। চাষিরা মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলা এবং পেঁয়াজ পরিস্কার করে ঘরে তোলার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে। কাকডাকা ভোর থেকে ওঠে দিনব্যাপী পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তোলা, বাড়িতে নিয়ে এসে পরিস্কার কাজে ব্যস্ত সময় পার করলেও পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় হতাশার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে।

গত বছরের চেয়ে কম দামে পেঁয়াজের বীজ ক্রয়, চারার মূল্য কম, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চাষিরা এবার ব্যাপকহারে পেঁয়াজ রোপন করছে বলে কৃষকেরা জানান। তবে চলতি মৌসুমে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, তেলের মূল্য বেশি, সেচ খরচ বৃদ্ধি ও পেঁয়াজের মাটি প্রস্তুতে খরচ বেশি, সে তুলনায় পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় চাষিরা হতাশার মধ্যে আছে। পেঁয়াজ চাষিরা জানান, যে পরিমান খরচ হচ্ছে তাতে করে পেঁয়াজের মূল্য বাজারে কম হাওয়ায় তারা লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্মখীন হচ্ছে বেশি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছে চাষিরা। তাই তাদের দাবি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানী বন্ধ করার। তা না হলে লোকসান আরো বেড়ে যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় তাহেরপুরী, বারী পেঁয়াজ-১, কিংসুপার ও মেটাল এই চার জাতের পেঁয়াজ কৃষকেরা রোপন করছে। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমি, সেখানে অর্জিত হয়েছে ১২ হাজার ৪১৯ হেক্টর জমি। এর মধ্যে পেঁয়াজ মুলকাটা ৩ হাজার ২৯৯ হেক্টর ও চারা রোপন পেঁয়াজ ৯ হাজার ১২০ হেক্টর। কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫৪০ হেক্টর, খোকসা উপজেলায় ৩ হাজার ২৭৭ হেক্টর, কুমারখালী উপজেলায় ৪ হাজার ২৫৫ হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় ৩৭০ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় ২৩৫ হেক্টর ও দৌলতপুর উপজেলায় ২ হাজার ৭৪২ হেক্টর। তবে কৃষকরা জানায় কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যের চেয়ে মাঠ পয্যায় কৃষকের পেঁয়াজ বেশি রোপন হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা দলবদ্ধভাবে শ্রমিক নিয়ে পেঁয়াজ তোলা কাজ করছেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পেঁয়াজের বীজ গেল বছর খোলা ৬ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও এ বছর তা কমে বিক্রি হয়েছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়। পেঁয়াজের চারা গত বছর ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় কেজি বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। বীজ, চারা, সার, পরিচর্যাসহ এবার বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদনে চাষিদের খরচ হবে ২৮ থেকে ৩২ হাজার টাকা। এ বছর বিদেশি কিংসুপার জাতীয় চারা রোপণ করা হয়েছে। এতে বিঘায় ৪৫ থেকে ৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হবে। যার বাজার মূল্য হবে ৪০ থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জিয়ারখী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া গ্রামের চাষি মোহর আলী বলেন আমি ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপণ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে খরচের চেয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছেনা। কিন্তু এ বছর পেঁয়াজের যে দাম আগে জানলে পেঁয়াজ রোপন করতাম না। বর্তমান বাজারে পেঁয়াজ ৬শ’ থেকে ৮শ’ টাকা দরে মণ বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া জানায়, পেঁয়াজ চাষিদের অর্থকারী ফসলের মধ্যে অন্যতম। এ অঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ চাষে উপযোগী। এ জন্য আমরা সবসময় কৃষকদেরকে পেঁয়াজ চাষে পরামর্শ দিয়ে আসছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ