বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সম্মেলন ছাড়াই পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনৈতিক লেনদেন হয়েছে দাবি করে কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন, সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন নেতাকর্মীরা।
গত মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) হঠাৎ করেই পাবনা জেলা ছাত্রলীগের প্যাডে জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ আলী ও সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম প্রকাশ করা হয়। এতে মল্লিক মিলন মাহমুদ তন্ময়কে সভাপতি এবং খন্দকার আরমানকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা ও আবির হাসান শৈশবকে সভাপতি এবং মারুফ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের পৌর কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটি ঘোষণার পরপরই সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নূরুজ্জামান বিশ্বাস, ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নায়েব আলী বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টুসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে কমিটি হয়েছে দাবি করে সংসদ সদস্য নূরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় এমপি হিসেবে আমার সঙ্গে কোনো আলোচনা বা সম্মেলন না করে কমিটি ঘোষণা গর্হিত অপরাধ। যেভাবে কমিটি করা হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগ ও নৌকার ভোট নষ্ট হবে। এই দালালি চলবে না, এখানে টাকা-পয়সার খেলা আছে। অবৈধ প্রক্রিয়ায় ঘোষিত কমিটি মানি না, মানি না, মানি না। নায়েব আলী বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর দাবিও একই। তারা বলেন, কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করে এবং বিতর্কিত পরিবারের সন্তানদের নিয়ে যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সে বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা এমনকি জেলা আওয়ামী লীগও অবগত নয়। যে পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তা স্থগিত করে অবিলম্বে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর থেকেই বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। কমিটি ঘোষণার দিন মঙ্গলবার রাতেই বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা। পরদিন বুধবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ওই কমিটিকে পকেট কমিটি অ্যাখ্যায়িত করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিক্ষুব্ধরা। সংবাদ সম্মেলন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঈশ্বরদী বাজার সড়কে অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে রাস্তা অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা ঘটনাস্থল ছাড়ার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভান। কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাংগঠনিক নিয়ম মেনে ও নেতাকর্মীদের পরামর্শ অনুযায়ী আংশিক এই কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে যারা আছেন, তারা সংগঠনের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা। এখানে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি ঘোষণা হয়। জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই উপজেলা ও পৌর কমিটির মেয়াদ ছিল দুই বছর। মেয়াদ পার হওয়ার তিন বছর পর হঠাৎ নতুন এই কমিটি ঘোষণা করা হলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।