পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সরকার যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়। গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ করে। সুতরাং এই দানব সরকারকে হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। গতকাল বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে স্বৈরাচার নিপাত যাক-গণতন্ত্র মুক্তি পাকগ্ধ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল হয়। জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদাতের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, এনডিপির আবু তাহের, ইসলামী ঐক্যজোটের মওলানা এমএ রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন, জাতীয় দলের এহসানুল হুদা, সাম্যবাদী দলের নূরুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও জাগপার ও বিশদলীয় জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা বলে আসছেন বিএনপি নাকি বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা বলবো- বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে। আজকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকা গিয়ে ধর্ণা দিচ্ছেন। তিনি দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য বলেছেন। অথচ আওয়ামী লীগ সবসময় বলে বিএনপি নাকি বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দেয়। কিন্তু আজকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রকাশ্যে বলেছেন- দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে হবে। এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি নয় আওয়ামী লীগই বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে।
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম একটি ন্যায় ভিত্তিক গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই মানুষের অধিকার হরণ করে। গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ করে। এরা সবসময় ঢোল পেটায় যে দেশে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। অথচ দেশের মানুষ না খেয়ে মরছে। ৬০% মানুষ দরিদ্র হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক অবনতি হয়েছে। সড়কের নিরাপত্তা নেই। সেতুমন্ত্রী ব্যর্থ হয়েছেন।
জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম শফিউল আলম প্রধানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে আপোসহীন ছিলেন। যারা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেছেন তাদের অন্যতম তিনি। আজো তার খুব প্রয়োজন ছিলো। আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষের অধিকার নেই। দেশে পুরোপুরি লুটের রাজত্ব তৈরি করা হয়েছে। তারা দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এসময় বিচিত্রা ৭৪’র একটি সংখ্যা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওই সময়ের বিচিত্রা দেখলে দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সাথে মিলে যাবে। দেখবেন লুট, হত্যা চলছিলো। এখনো তা চলছে।
তিনি বলেন, আজকে দেশের সংকট উত্তরণে সমস্ত রাজনৈতিক দলের ঐক্য প্রয়োজন। সেইসাথে গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নির্বাচন দিতে হবে। খালেদা জিয়া ভীষণ অসুস্থ। তার জন্য দোয়া করবেন। আমাদের লক্ষ্য ভয়াবহ দানব সরকারকে হটিয়ে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আমরা বিএনপিকে ক্ষমতায় বসার কথা বলছি না। আমরা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলছি। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই আমরা বলবো- খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। অথচ তারা পুরনো মামলায় আমাদের নেতাদের গ্রেফতার করছে। যাতে যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করছে তাদেরকে গ্রেফতার করে সাজা দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের নেতা ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও তার মুক্তির দাবি জানাই।
ড. আবদুল মঈন খান বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে মরহুম শফিউল আলম প্রধান ছিলেন আপোসহীন। তিনি ভারতের আধিপত্য বিস্তারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। মনস্তাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর আক্রমণ করতো ভারত। তখন শফিউল আলম প্রধান ছিলেন সাহসী বীর। তিনি বুক ফুলিয়ে কথা বলতেন প্রতিবাদ করতেন। আজকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পঞ্চাশ বছর পরও আমাদের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে হচ্ছে। তাহলে কেনো একাত্তরে লাখ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছিলো? আসুন আমরা যারা দেশের সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তায় বিশ্বাসী, খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করি দেশের স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে একদফা দাবিতে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকারকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে।
খন্দকার লুৎফর রহমান বলেন, আমরা রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি একটি লক্ষ্য নিয়ে। সেটা হলো দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। এমতাবস্থায় আসুন আমরা সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতা মরহুম শফিউল আলম প্রধানের মতো সাহস নিয়ে আবারো ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। তিনি খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।