Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে করোনা ভ্যাকসিন প্রদানের হার প্রায় ৮০ ভাগ সংক্রমন হ্রাস পেয়েছে আশাতীতভাবে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২২, ৪:৫৮ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন আশাতীতভাবে হ্রাস পাবার মধ্যে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহনকারীর সংখ্যা ৮০% অতিক্রম করেছে। গত দু মাসে গনটিকা ও দু দফায় ক্যাম্পেইনে প্রায় ১২ লাখ সহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১ কোটি মানুষের মধ্যে এ পর্যন্ত ৭০ লাখ মানুষকে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রদান করা হয়েছে। আর একই সাথে আরো ৬৯ লাখকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ১০ লাখ ৩০ হাজার ছাত্রÑছাত্রী প্রথম ডোজ ও ৮ লাখ ৭০ হাজার দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহন করেছেন। তবে এ অঞ্চলে বুষ্টার ডোজ গ্রহনকারীর সংখ্যা এখনো ৫ লাকের কম। বুষ্টার ডোজ গ্রহনে সাধারন মানুষকে খুব বেশী আগ্রহী করে তোলা সম্ভব হয়নি এখনো। এ লক্ষে অবিলম্বে ব্যাপক প্রচারনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেজ্ঞ চিকিৎসকগন। দক্ষিনাঞ্চলের প্রায় ১ কোটি মানুষের মধ্যে ১২ বছরের উর্ধের জনসংখ্যা প্রায় ৮৮ লাখ। এমনকি ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ ছাত্রÑছাত্রী প্রথম ডোজ এবং প্রায় ৭ লাখ দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহন করেছে।
বরিশাল মহানগরীতেও প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ এবং ৩.৮০ লাখের মত দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহন করেছে বলে নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে।
অপরদিকে গত মার্চ মাসে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ১২২ জন। তবে এমাসেও দু জনের মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। আর ৫ এপ্রিল, মঙ্গলবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার কোথাও কোন করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। এ নিয়ে গত ৫ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছিল মাত্র দুজন।
গত ফেব্রুয়ারীতে দক্ষিণাঞ্চলে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮৩৪। মারা গেছেন ৬ জন। জানুয়ারী মাসে শনাক্তের সংখ্য ছিল ৩ হাজার ৭০ জন। মৃত্যু হয়েছিল দুজনের।
আর ২০২০-এর ১১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে সর্বমোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৫২ হাজার ৬৯৭ জনে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৯০ জনের। তবে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ১৮ জন সহ এ অঞ্চলে ৫০ হাজোর ৫৬২ জনের সুস্থ হয়ে ওঠার কথা জানিয়েছে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। ফলে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে চিকিৎসাধীন সক্রীয় করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১৩৫ জন।
সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলের সর্বাধীক সংক্রমিত বরিশাল মহানগরীতে করেনা রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ১২ হাজার। এ নগরীতে মৃত্যু হয়েছে ১০৫ জনের। আর মহানগরী সহ বরিশাল জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ২১ হাজার ২১৮ জনে। মহানগরী সহ এ জেলায় মারা গেছেন ২৩৫ জন। পটুয়াখালীতে মোট আক্রান্তে সংখ্যা দাড়িয়েছে ৭ হাজার ৩৮ জনে। জেলাটিতে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ১১০ জন। ভোলাতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণাঞ্চলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ৭ হাজার ৮৬৩। দ্বীপ জেলাটিতে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ৯২ জন। পিরোজপুরে ইতোমধ্যে ৬ হাজার ৩০৬ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৮৩ জন। দক্ষিণাঞ্চলের সর্বাধীক মৃত্যু হারের বরগুনাতে এপর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৪ হাজার ৬৬৮ জনের মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ আক্রান্ত হারের ঝালকাঠীতে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৬০৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৭০ জন।
দক্ষিণাঞ্চলে করোনা পজিটিভ শনাক্তের হার গত দু বছর ধরেই ছিল দেশের প্রায় সর্বোচ্চ। ফেব্রুয়ারীর শেষ দিনেও দক্ষিনাঞ্চলে শনাক্তের হার ছিল ৯.৩০%। কিন্তু এরমধ্যে বরগুনা ও ঝালকাঠীতে আক্রান্তের হার ছিল আরো বেশী। ঐ দিন নমুনা পরিক্ষার তুলনায় বরগুনাতে ১৬.৬৭% এবং ঝালকাঠীতে ৩০.৭৭%-এর দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলেও গত দু মাসে সংক্রমন আশাতীতভাবে হ্রাস পেয়েছে । দক্ষিনাঞ্চলে গড় শনাক্তের হার এখন প্রায় ৩%-এ নেমে এসছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ আশা করছে আগামী মাসের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলে ১১ বছরে ঊর্ধের প্রায় শতভাগ মানুষকে করোনা ভ্যকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। ফলে আগামীতে করোনা সংক্রমনের ঝুকি ও হার নিয়ন্ত্রনে রাখার ব্যাপারেও আশাবাদী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ