Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তলিয়ে গেছে প্রায় ৫শ’ একর জমির ফসল

পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণার ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি

নেত্রকোনা থেকে এ কে এম আব্দুল্লাহ্ : | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়নের কয়েকটি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের বাহিরের অধিকতর নিচু প্রায় ৫শ একর জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষকদের আশংকা, এভাবে পাহাড়ী ঢলের পানি আসতে থাকলে নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে ফসল রক্ষা বাঁধ তলিয়ে খালিয়াজুরী উপজেলার ২১ হাজার হেক্টর জমির ফসল যে কোন সময় তলিয়ে যেতে পারে।
খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মওসুমে খালিয়াজুরী উপজেলায় ২১ হাজার ১ শ ২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। হাওরাঞ্চলে বেশীরভাগ জমিতে বোরো ধানের তোর বের হয়ে দুধ ও দানা বাঁধতে শুরু করেছে। আগামী ১৪/১৬ দিনের মধ্যেই ধান পাকতে শুরু করবে। আর ২০/২৫ দিন পরই ধান কাটা শুরু হবে। কৃষকরা যাতে তাদের সারাবছরের একমাত্র বোরো ফসল ঠিক মতো ঘরে তুলতে পারে তার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সময় মতো টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছিল।
পাহাড়ী ঢল অব্যাহত থাকায় গত কয়েকদিন ধরে ধনু নদীর পানি বাড়তে থাকে। ইতিমধ্যেই পাহাড়ী ঢলের পানিতে খালিয়াজুরী উপজেলার ফসল রক্ষা বাঁধের বাইরের অধিকতর নিচু এলাকার প্রায় ৫শ একর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। খালিয়াজুরী সদরের কৃষক মহসিন মিয়া জানান, খালিয়াজুরী উপজেলার বিভিন্ন স্থানের অধিকতর নিচু এলাকার প্রায় ৫শ একর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। তার প্রায় ১০ একর জমির কাঁচা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া, আবুল হাসেম জানান, ঢলের পানিতে তাদের প্রায় ১৩ একর জমির ফসল তলিয়ে নষ্ট হয়েছে।
খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে পাহাড়ী ঢলের পানি অব্যাহত থাকায় ধনু নদীর পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে সপ্তাহ খানের মধ্যেই ফসল রক্ষা বাঁধ উপচে খালিয়াজুরী উপজেলার সমস্ত বোরো ফসল তলিয়ে যাবে। নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত গতকাল সোমবার বিকালে জানান, নেত্রকোণার হাওরাঞ্চলের ফসল রক্ষার জন্য এবার ২৩ কোটি ৬ লাখ টাকার ব্যয় ১৮৩ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ভারতের চেরাপুঞ্জি থেকে বৃষ্টির পানি বাংদেশের সুনামগঞ্জের যাদুকাটা ও সুরমা নদী দিয়ে খালিয়াজুরীর ধনু নদীতে ঢল আকারে নামছে। গত ৩০ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত ধনু নদীর পানি ৮ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তিনি আরো বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আগামী কয়েক দিনও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। যদি সেখানে বৃষ্টি হয়, তবে কয়েক দিনের মধ্যে সেই বৃষ্টির পানি এসে তা ধনু নদীর বিপদ সীমা অতিক্রম করবে। অতিরিক্ত পানি বেড়ে উপচে পড়লে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা কঠিন হয়ে যাবে।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট একটি নিয়মের উচ্চতায় প্রতি বছর হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এবারও নিয়ম অনুযায়ীই যথা সময়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত মাত্রায় পাহাড়ী ঢলের পানি বেড়ে গিয়ে বাঁধ ভাঙ্গার উপক্রম হলে সেই ক্ষেত্রে বাঁশ ও বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে কোন রকমে পানি ঠেকিয়ে ফসল রক্ষার চেষ্টা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ