Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভুল চিকিৎসায় কৃষকের উপার্জন বন্ধ

বিরামপুর (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৪ এএম

বিরামপুরে ভুল চিকিৎসার কারণে আড়াই লাখ টাকা দামের ফিজিয়ান জাতের গর্ভবতী গাভী প্রসবকালীন সময়ে মৃত্যু ঘটে। এক লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বিরামপুর উপজেলার জোতবানি ইউনিয়নের ধনসা গ্রামের হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী সুমি আক্তার গত ১ বছর পূর্বে পরিবার উন্নয়ন সংস্থার কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে গাভী পালনের জন্য ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভী ক্রয় করে। গাভীটি লালন পালন করে আসছিলেন। গর্ভবতী ফ্রিজিয়ান গাভী বাচ্চা প্রসব করতে পারে মর্মে গত ২৬/৩/২১ তারিখে নিকটতম পশু চিকিৎসক রবিউল ইসলামকে গরুটি দেখার জন্য আসতে বলেন। বাড়িতে এসে পশু চিকিৎসক গরু দেখেই বলেন, ফিজিয়ান গরু এখনই বাচ্চা প্রসব করবে, বাচ্চা প্রসবের জন্য ইনজেকশন দিতে হবে।
প্রসবের ব্যথা উঠানোর জন্য ইনজেকশন দেয়া জরুরি বলেই ৩/৪টি ইনজেকশন পুশ করে চলে যেতে চাইলে গাভীর মালিক শামীমা আক্তার সুমি তাকে ডেলিভারি হওয়া পর্যন্ত থাকতে বলেন। ইনজেকশন দেয়া মাত্র ফিজিয়ান গরু ছটফট করতে থাকলে উক্ত রবিউল ইসলাম অস্থির হয়ে পালাতে থাকলে গ্রামের লোকজন তাদের বাচ্চা প্রসব হওয়া পর্যন্ত থাকতে বললে রবিউল ইসলাম আরও তিনজনকে মোবাইলে ডেকে নিয়ে গরুটিকে বেঁধে গাভির পেটের ভেতর বাচ্চা গর্ভে দুটি বড় রড লোহার হুক জাতীয় দিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা পর গাভীর পেট থেকে বাচ্চা বের করে। বাচ্চাটি মুমূর্ষ অবস্থায় প্রসব করলেও তাৎক্ষণিক ফ্রিজিয়ান গাভী রক্তক্ষরণসহ অজ্ঞান হয়ে পড়লে পুনরায় একটি ইনজেকশন দিয়ে গরুটি ফেলে তারা চলে যায়। এ সময় রবিউলের সাথে ছিলেন সঙ্গী বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের শাহজাহান, ফুলবাড়ী উপজেলার মাদিলাহাট ইউনিয়নের রাধিকাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম। এর কিছুক্ষণ পরেই ফ্রিজিয়ান গাভীটি ও বাচ্চাটি মারা যায। ভুল টিটমেন এর কারণে আমার গাভীটি ও বাচ্চাটি মৃত্যুবরণ করেছে। আমাকে কালক্ষেপণ করে বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে গরুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য আনতে দেয়া হয়নি বলে জানান গভীর মালিক সুমি।
এ ব্যাপারে অসহায় পরিবারটি ভুল চিকিৎসা দিয়ে গরুটিকে মেরে ফেলার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল জানান, শামীমা আক্তার খুব গরিব মানুষ। ঋণ নিয়ে ফ্রিজিয়ান গাভীটি কিনে বাড়িতে লালন-পালন করে আসছিল। ভুল চিকিৎসার কারণে ফ্রিজিয়ান গাভীটি মরে যাওয়ায় নিদারুণ কষ্টে পড়েছে এই পরিবারটি।
প্রতিবেশীরা জানান, দুধ বিক্রি করে ঋণের কিস্তি পরিশোধের আশা-নিরাশায় রইল। ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না পরিবারটি। ভুল চিকিৎসায় সব উপার্জন বন্ধ হলে গেল।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং থানার ওসি বরাবরে ভুল চিকিৎসায় ফিজিয়ান গর্ভবতী গাভী মৃত্যুও অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে বলেও জানা যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ