পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় সংসদে আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সিনিয়র দুই নেতা তর্কে জড়িয়েছিলেন। সংসদের আলোচনা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগ্রহ কম থাকলেও বিরোধী দলের দুই নেতার বিতর্ক মানুষ দারুণভাবে উপভোগ করেছেন। দুই নেতা বর্তমান মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার বিতর্কের মধ্য দিয়ে দলটির স্বরুপ উন্মোচিত হয়েছে। তবে মশিউর রহমান রাঙ্গা জানিয়েছেন, বর্তমানে ঢাকার যানজট এবং মানুষের ভোগান্তি উন্নয়নের প্রসব বেদনা।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন, এরশাদের ওই দল নিয়ে কথা বলে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। ২০১৪ সাল থেকে দলটির সুবিধাবাদী চরিত্র দলটিকে জনবিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। দলটির নেতাদের ‘গাছের এবং তলার’ খাওয়ার যে মানসিকতা তাতে আগামীতে দলটি মুসলীম লীগের চেয়েও খারাপ অবস্থানে যাবে। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলটি শুধু ক্ষমতার উচ্ছিষ্টের লোভে ২০১৪ সাল থেকে জন প্রত্যাশার বিপক্ষে অবস্থা নিয়েছে। এরা মন্ত্রী হয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করেছে; ক্ষমতার বাইরে থেকে সরকারের ‘নাচের পুতুল’ হয়ে সরকারকে সহায়তা করছে। কোনো নেতা সরকারকে খুশি করতে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দলকে পরিচালিত করছেন। কোনো নেতা ব্যাক্তি স্বার্থে দলের বিরুদ্ধে বিরোধ জিইয়ে রাখছেন।
জাতীয় সংসদে গতকাল রাজধানীতে গণপরিবহনের অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন মুজিবুল হক চুন্নু ও মশিউর রহমান রাঙ্গা। গণপরিবহণের অব্যবস্থাপনার কঠোর সমালোচনা করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ঢাকা শহরে ঘর থেকে বের হওয়া কোনও উপায় নেই। ঢাকা শহরে যেসব বাস চলে তার বেশিরভাগই পুরনো ও লক্করঝক্কক। লাইসেন্স নেই, কোনও আইন মানে না। রাস্তায় যেখানে-সেখানে পার্ক করে রাখে। তিনি সরকার, সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও বাস মালিক সমিতির সমালোচনা করেন। বাস মালিকরা সরকারের সাথে যোগসাজশে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন কী না সেই প্রশ্নও তোলেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মশিউর রহমান রাঙ্গা। বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও এমপি মসিউর রহমান রাঙ্গা তার নিজের দলের নেতা মুজিবুল হক চুন্নু ‘কী উদ্দেশ্যে পরিবহন’ নিয়ে কথা বললেন সেই প্রশ্ন তোলেন। মুজিবুল হক চুন্নুর আগে মসিউর রহমান রাঙ্গা দলটির মহাসচিব ছিলেন। তিনি (চুন্নু) সেই ক্ষোভে এমন বক্তব্য দিয়েছেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাঙ্গা।
অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক দুর্ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ রাজধানীতে সাম্প্রতিক তিনটি দুর্ঘটনায় প্রসঙ্গ টেনে কথা বলেন। এসময় সংসদে পাশের সিটে বসা মশিউর রহমান রাঙ্গার প্রতি ইঙ্গিত করে চুন্নু বলেন, আমার পাশে বসে আছেন বাংলাদেশ বাস ওনার্স সমিতির সভাপতি। ওনাদের বলবো, আপনারা মানুষের প্রতি দরদী হন। যে সমস্ত গাড়ি ব্রেক নেই, পুরনো ইঞ্জিন, রঙ নেই...। এগুলো সরকার... কেউ দেখে না। আপনারা সরকারের সাথে যোগসাজোশে জনগণকে কষ্ট দিচ্ছেন? সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে তিনি বলবো, আপনি পদ্মা ব্রিজসহ অনেক উন্নয়ন করেন...। কিন্তু আপনি টোটালি ফেইল ট্রান্সপোর্টেশনের বিষয়ে। ২৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স আজ আটকা, ঢাকা শহরে আজ গাড়ি চলে না। ভালো বাস নেই। ঢাকায় সরকারের কি নতুন পাঁচশো- এক হাজার বাস নামানোর সক্ষমতা নেই? মানুষ নিজের টাকা দিয়ে টিকিট কিনে গাড়িতে যাবে। কিন্তু লাইনের পর লাইন, টিকেট কিনে ওঠারও কোনও বাস নেই। এত অপ্রতুল পরিবহন। এ বিষয়টি দৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবো।
পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে মুজিবুল হকের বক্তব্যের জবাব দেন সদস্য মসিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘(মুজিবুল হক চুন্নু) আমার কলিগ, আমি ওনার আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ছিলাম দুই বছর। তারপর উনি মহাসচিব হয়েছেন। সেই ক্ষোভে কি না কিংবা আমি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি সেই ক্ষোভে কি না বা জনগণের দুর্দশা দেখেই কি না- কীভাবে উনি বলেছেন, আমি বুঝতে পারলাম না। পরিবহনের এই বিষয়টি আমাকে বললেনও না, হঠাৎ করে বললেন- আমার সভাপতি পাশে রয়েছেন। ঢাকায় আগে পরিবহনগুলো ৮ থেকে ৯টি ট্রিপ দিতো। যানজটের কারণে এখন একটি বাস ৩টির বেশি ট্রিপ দিতে পারে না। আয় আগের তুলনায় কমে গেছে। উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড হোক, আর যে কোনও কারণে হোক গতিসীমা কমে গেছে।
গাড়ির ফিটনেস না থাকা এবং লক্কর-ঝক্কর বাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফিটনেস আছে কিনা তা আইন-শৃংখলা বাহিনী ও বিআরটিএ দেখবে। গাড়ি একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে চলে না, তা আমি বলবো না। এটা বিভিন্ন সময় হয়ে থাকে। চালকরা করে থাকে। আমরা বাসের মালিক, আমরা তো চালক না, আমরা গাড়ি চালাই না, এজন্য এ বিষয়টি বলতে পারবোনা। তবে ফিটনেসের বিষয়টি আমাদের পরিবহন মালিকদের। ফিটনেস না থাকলে জরিমানা করা হয়। ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে মাঝ বরাবর গাড়িগুলো কেটে ফেলা হয়, যাতে করে আর চালাতে না পারে। তিনি বলেন, উন্নয়নের প্রসববেদনার জন্য আমাদের এই সমস্যা হচ্ছে, আমাদের এটা মেনে নিতে হবে।
নির্দিষ্ট কোনও গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে এবং সে বিষয় তাকে মুজিবুল হক চুন্নু জানাতে পারলে সংসদে বসেই জরুরি ব্যবস্থা নিতে পারতেন বলেও জানান মসিউর রহমান রাঙ্গা।
গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় পার্টির দুই নেতার এই বক্তব্য নিয়ে নানান মন্তব্য লেখা হয়। একজন লিখেছেন, ‘উন্নয়ন করছে সরকার; আর জাতীয় পার্টির নেতা মশিউর রহমান রাঙ্গা উন্নয়নের প্রসববেদনায় কাঁতরাচ্ছেন!’ একজন লিখেছেন, সরকারের নাচের পুতুলদের এমন তোষামোদী না করলে ভাগ কমে যায়। তাই তারা একদিনে সরকারকে খুশি রাখেন; অন্যদিকে তথাকথিত বির্তক করে নিজেদের অস্থিত্ব জানান দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।