Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোবিন্দগঞ্জে বেপজার সার্ভেয়ার ও চিনিকল কর্মচারী অবরুদ্ধের দুই ঘন্টা পর উদ্ধার করলো পুলিশ

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০২২, ৪:১৭ পিএম

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের খামারের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের কার্যক্রমে বাঁধা দিয়েছে সাঁওতাল ও ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সদস্যরা। তারা বেপজার সার্ভেয়ার টীম ও চিনিকলের একটি প্রতিনিধি দলকে দুই ঘন্টা একটি ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশী হস্তক্ষেপে উদ্ধার করা হয়েছে তাদেরকে।

রোববার সকালে বেপজার চার সদস্যেরে একটি সার্ভেয়ার টীম এবং রংপুর চিনিকলের একটি প্রতিনিধি দল সাহেবগঞ্জ চিনিকলের জমি পরিমাপ করতে যান। এ সময় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রায় দেড় শতাধিক সাঁওতাল এবং ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি নামের কয়েকজন ভূমিদস্যু তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি চিনিকল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানালে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল তাদেরকে উদ্ধার করে।

জানা গেছে, সরকারের অনুমোদনের পর রংপুর চিনিকলের মালিকানাধীন সাহেবগঞ্জ ইক্ষুখামারে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (বেপজা) কর্তৃপক্ষ দেশের দশম ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ লক্ষ্যে গত ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে মতবিনিময় করেন বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম। মতবিনিময় শেষে তিনি ইপিজেড এর নির্ধারিত স্থান সাহেবগঞ্জ খামার এলাকা পরিদর্শন করেন।

চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধীতা করে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরণের আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন ওই এলাকায় বসবাসকারী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কিছু লোকজন। তারা চিনিকলের খামারের জমিকে নিজের বাপ-দাদার সম্পত্তি দাবি করে তা ফেরত দেয়া জন্য ভূমি উদ্ধার সংক্রাম কমিটি গঠন করে আন্দোলন করে আসছে। এক পর্যায়ে তারা চিনিকলের জমি দখল করে বাড়ী ঘর নির্মাণ এবং চাষাবাদ শুরু করে।

প্রসঙ্গত গত ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ খামারের জমিতে আখ কাটতে গেলেও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন বাঁধা প্রদান করে। এতে পুলিশের সাথে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে সাঁওতালদের ছোঁড়া তীরবিদ্ধ হয়ে ৯ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় তিন সাঁওতালের মৃত্যু হয়েছে বলে সাঁতালরা দাবী করে আসছে।

সাঁওতালদের দ্বারা অবরুদ্ধ হওয়া চিনিকলের সিডিএ সোহেল আহমেদ জানান, বেপজার চার সার্ভেয়ারের সাথে চিনিকলের মালিকানাধীন সাহেবগঞ্জ খামারের জমি সার্ভে করার সময় আকস্মিকভাবে স্থানীয় প্রায় দেড় শতাধিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মানুষ এবং কথিত সাহেবগঞ্জ ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির কয়েকজন নেতা কাটামোড় এলাকায় একটি ঘরে তাদের অবরুদ্ধ করে। প্রায় দুই ঘন্টা আটকে রাখার সময় বিভিন্নভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় তাদেরকে এবং একাধিকবার শরীরিকভাবে লাঞ্ছিত করারও চেষ্টা করেছে বলে তিনি আরও জানান।

গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইজার উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বেপজা ও চিনিকল কর্তৃপক্ষের লোকজনের কিছু কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করা হয়েছিল। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের উদ্ধার করে এবং তাদের কাগজপত্র উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ