Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাগুরায় ৪০ দিনের কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরা থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০২২, ১২:১৪ এএম

মাগুরায় সদর উপজেলার গোপালগ্রাম ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের জন্য নেয়া চল্লিশ দিনের কর্মসূচিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অতিদরিদ্রদের জন্য নেয়া কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম মিলনের যোগসাজশে পিআইসিদের মনগড়া শ্রমিকদের নামের তালিকা করে এ দুর্নীতি করা হচ্ছে।
প্রকল্পের শ্রমজীবীর অতিদরিদ্র-দুস্থদের তালিকায় রয়েছে সুস্থ-সচ্ছলদের নাম। রয়েছে চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মেম্বর, চৌকিদার, রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিনিধির নাম। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা ভুয়া প্রকল্প এবং নামমাত্র কাজ করে প্রায় শতভাগ কাজ ও শ্রমিক উপস্থিতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা লুট করা হচ্ছে। ৪০ দিনের প্রকল্পের শ্রমিককে দিয়ে কালভাট নির্মাণ করা হচ্ছে ফলে ভেস্তে যাচ্ছে সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১ম পর্যায়ের কর্মসৃজন প্রকল্পের ৪০ দিনের জন্য গোপালগ্রাম ইউনিয়নে ৩টি প্রকল্পে মোট ১৩২ জন শ্রমিকের নাম তালিকায় রয়েছে। একজন শ্রমিক প্রতিদিন কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে ৪শ’ টাকা হারে মোট ৪০ দিন কাজ করে এ প্রকল্পের একজন শ্রমিক মোট ১৬ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পাবেন।
প্রকল্প এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, এই ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসৃজন (ইজিপিপি) ১ম পর্যায়ের প্রকল্পে কম শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে, তবে খাতা-কলমে প্রায় শতভাগ তালিকাভুক্ত শ্রমিককে উপস্থিত দেখানো হচ্ছে।
এর মধ্যে এলাকার বাইরে বসবাসরত ব্যক্তিদের নাম তালিকায় অন্তরভুক্ত রয়েছে যার প্রমান পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে ওই ইউনিয়নের প্রকল্পগুলো ঘুরে ব্যাপক অনিয়মের চিত্র পাওয়া গেছে। তালিকানুসারে ওই প্রকল্পে ৫৭ জন শ্রমিক থাকলেও বাস্তবে ৩০ জনেরমত উপস্থিত পাওয়া যায়। কখনই ৫৭ জন থাকে না বলে উপস্থিত শ্রমিকরা জানান। প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী রুবি খাতুন তার স্বামীর নাম গোপন রেখে বাবার নাম দিয়ে ওই কর্মসূচির নামের তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়ে সুকৌশলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রকল্প সভাপতির ভাই আব্দুল সালাম মোল্ল্যা ও প্রকল্প সভাপতির স্ত্রী ও তার ভাইয়ের নাম ঐ তালিকায় রয়েছে। প্রকল্প-২ সংকোচখালী প্রকল্পের কাজও চলছে ঢিলেঢালা।
কালভার্ট নির্মাণে ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পের শ্রমিক পাওয়া যায়। যেখানে কালভার্ট নির্মাণে অতিরিক্ত বাজেট ৮৩,১৯৮ টাকা রয়েছে সেখানে কিভাবে ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পের শ্রমিক ব্যাবহার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রকল্প সভাপতি মো. সৈয়দ আলী জানান- কালভার্টের কাজের শ্রমিকরা আসেনি তাই কর্মসূচির কিছু শ্রমিক দিয়ে রাজমিস্ত্রীর সহযোগী হিসাবে কাজ করানো হচ্ছে। হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে শ্রমিক সরদার মো. অপু মিয়া হাজিরা খাতায় দেখাতে দেখাতে বলে ৪০ দিনের মধ্যে প্রথম দুই এক দিন হাজিরা লিখেছিলাম তারপর প্রকল্প সভাপতি লিখতে নিষেধ করেছে। তালিকায় থাকা শ্রমিক ওহিদুল ইসলামের স্ত্রীর দাবি কর্মসূচি প্রকল্পের টাকা তারা নিচ্ছে না। কেউ তাদের টাকা নিয়ে নিচ্ছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইয়াছিন কবীর জানান, যেখানে দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের টাকা কর্তন করা হচ্ছে। তবে এলাকাবাসী জানান, কর্তন করা হচ্ছে নাম মাত্র।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ